সংক্ষিপ্ত
একসপ্তাহের মাথায় ওড়িশার গোপালপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজু–সহ চারজনকে। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কলকাতার বেলেঘাটায় গুলি চালানোর ঘটনার একসপ্তাহের মাথায় গ্রেফতার হল ঘটনার মূল অভিযুক্ত রাজু নস্করকে। তৃণমূল নেতা রাজু নস্করের বিরুদ্ধে তৃণমূল কার্যালয়ে আগ্নেয়াস্ত্র মজুতের অভিযোগ উঠেছিল। ইতিমধ্যেই এই গুলি চালানোর ঘটনায় একাধিক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। এবার খোদ তৃণমূল নেতাকেই গ্রেফতার করা হল। রাজুর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনসহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসার প্রস্তুতি চলছে। তাঁকে সম্ভবত আজই শিয়ালদা আদালতে পেশ করা হবে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, একসপ্তাহের মাথায় ওড়িশার গোপালপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে রাজু–সহ চারজনকে। তাঁদের বিরুদ্ধে একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ৩০ এপ্রিল তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বেলেঘাটার ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড। রাজু নস্করের অভিযোগ ছিল, সকালে এক দল দুষ্কৃতী গিয়ে তাঁর অফিস, গাড়ি ভাঙচুর করে। এমনকি অনুগামীদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, বেলেঘাটার আরেক তৃণমূল নেতা অলোক দাসের অভিযোগ, তাঁর অফিসে পাশে শনিবার রাতে ভাঙচুর হয়। সেই ঘটনার প্রতিবাদে সকালে কয়েকজন রাজু নস্করের অফিসে যান। অভিযোগ, তাঁর অনুগামীরা সেখানে যেতেই রাজুর অফিসের ভিতর থেকে গুলি চালানো হয়। পিন্টু দাস নামে এক ব্যক্তি গুরুতর জখম হন। তাঁর অভিযোগ, রাজুর অফিসের ভিতর থেকেই গুলি ছোড়া হয়েছে। তিনি গুলিবিদ্ধ হন। খোদ রাজুই নাকি গুলি ছুঁড়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। পৌঁছন বিধায়ক পরেশ পাল। ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পরেশ পাল স্বীকার করেন, ‘কী বলব? নিজেদের মধ্যে মারামারি। তৃণমূল ছাড়া কারও এখানে ঢোকার ক্ষমতা আছে না কি?’ ওদিকে আক্রান্ত এক ব্যক্তি বলেন, আমরা প্রথম দিন থেকে তৃণমূল করি। রাজু নস্কর বিধানসভা নির্বাচনের সময় বিজেপি করত। এখন আবার দলে ফিরে অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। প্রথম দিন থেকে তৃণমূল করার প্রতিদান পেলাম। এই ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দোকানপাট বন্ধ করে দেন দোকানিরা। মোতায়েন করা হয় পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে সঙ্গীদের নিয়ে গা ঢাকা দেন বেলেঘাটা এলাকার এই দাপুটে তৃণমূল নেতা। বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজুর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ। বিশেষ সূত্রে লালবাজারের গোয়েন্দারা জানতে পারেন ওড়িশায় গা ঢাকা দিয়ে রয়েছেন রাজু।
এদিকে, রাজুর বিরোধী শিবিরের দাবি ছিল, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা দেখিয়ে দিয়েছে রাজু নস্কর হিংসাত্মক কার্যকলাপের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন। যদিও রাজু নস্করের দাবি ছিল, ‘অফিস থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার ষড়যন্ত্র।’