সংক্ষিপ্ত

গরুপাচার, রেশন, কয়লা, চাকরির নিয়োগ, ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির অভিযোগের মাঝেই আরও ভয়ঙ্কর অভিযোগ উঠল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধে। মানুষের দান করা মৃতদেহ নিয়েও দুর্নীতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন অভিজ্ঞ শিক্ষকরা। 

চাকরির নিয়োগের পর একে একে উঠেছে কয়লা , গরু এমনকি রেশনের চাল নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগও। পশ্চিমবঙ্গের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে অভিযোগের সমারোহ যখন তুঙ্গে তখন আরও একটি মারাত্মক অভিযোগ করলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের অভিজ্ঞ শিক্ষকরা। মানুষের দান করা মৃতদেহ নিয়েও রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগ দুর্নীতি করছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। 
-

কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের অঙ্গব্যবচ্ছেদ-বিদ্যার বিভাগ থেকে উত্তর পূর্ব ভারতের মেডিক্যাল কলেজে প্রত্যেক বছর ২০টি করে মৃতদেহ পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। সেই দেহ পাঠাতে হবে চলতি শিক্ষাবর্ষের জন্য, যা একেবারেই শেষের পথে। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে ঘোর আপত্তি তুলেছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের প্রবীণ শিক্ষক- চিকিৎসকরা। তাঁদের অভিযোগ, এই নিয়মের দরুন দান করা দেহগুলির বড়সড় অপব্যবহার হতে পারে।

-

প্রবীণ অধ্যাপকদের মতে, একটা মেডিক্যাল কলেজে ২৫০ জন ছাত্রছাত্রীর স্নাতক স্তরের পড়াশোনা করার জন্য ১ বছরে ৬টি মরদেহ যথেষ্ট। কোনও কলেজে স্নাতকোত্তর পড়ানো হলে, সেখানে সর্বোচ্চ ১০টি দেহের প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু, একটা শিক্ষাবর্ষে ২০টা দেহের প্রয়োজন হল কেন? তাও আবার যে শিক্ষাবর্ষ প্রায় শেষ হতে চলেছে (২০২৩-২০২৪)? তাঁদের আশঙ্কা এর পিছনেও কোনও দুর্নীতি থেকে থাকতে পারে।

-

এই ঘটনায় বিদ্যুৎ দাস নামের এক চিকিৎসকের নাম জড়িয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। প্রবীণ শিক্ষকদের অভিযোগ, তিনিই উত্তর- পূর্ব ভারতের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের হয়ে কলকাতার হাসপাতালগুলির সঙ্গে মধ্যস্থতা করেন।  অঙ্গব্যবচ্ছেদ-বিদ্যার অধ্যাপকদের দাবি, বহু বছর ধরে চক্ষু ও দেহদান নিয়ে সচেতনতা বাড়িয়ে চলার ফলে পশ্চিমবঙ্গে, বিশেষ করে কলকাতায় দান করা মৃতদেহের সংখ্যা যথেষ্ট বেশি। এখানে এক বছরে যে সংখ্যায় দেহ দান হয়, তা মেডিক্যাল কলেজগুলির প্রয়োজনের তুলনায় অনেকটাই বেশি। আবেদনের ভিত্তিতে সেই দেহগুলি ভিনরাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে পাঠানো হয়। 

-

কিন্তু, একটি মেডিক্যাল কলেজকে পুরনো শিক্ষাবর্ষের জন্য ২০টি দেহ দেওয়া হচ্ছে কেন? রাজ্যের স্বাস্থ্য ভবনের তরফে অবশ্য এই বিষয়ে সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি। অভিযুক্ত বিদ্যুৎ দাসের ভূমিকা কী, সেই বিষয়টি এখনও স্পষ্ট নয়।