সংক্ষিপ্ত
কাজের বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদান করার জন্য কর্মীদের চাপ দিচ্ছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী! এর পাশাপাশি তিনি নিজের জন্য নিজেই মিছিল বের করতে চলেছেন বলে অভিযোগ। সেই মিছিলেই কর্মীদের প্রাণনাশের আশঙ্কা!
পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের (Viswa Bharati) মাল্টি-টাস্কিং স্টাফ (MTS) কর্মীরা সম্মিলিতভাবে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে চিঠি পাঠালেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে। বিশ্বভারতীর কর্মীদের স্বার্থ ও অধিকার খর্ব করছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, এমনই গুরুতর অভিযোগ তুলে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের হস্তক্ষেপের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধস্তন কর্মীরা। চিঠিতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী নিজের ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কর্মীদের কাজ করতে বাধ্য করছেন।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ৪০৫ জন এমটিএস কর্মী নিয়োগ করা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ১২ অক্টোবর প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল যে শুধুমাত্র যোগ্যতার ভিত্তিতেই এতজন কর্মীকে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু, কর্মীদের অভিযোগ, “বিশ্বভারতীর কাজে যোগদানের পর থেকে, ভাইস-চ্যান্সেলর আমাদের নিয়মিত দায়িত্বের বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলকভাবে উপস্থিত থাকার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন। সেই চাপের বক্তব্য এমনই যে, মনে হচ্ছে যেন তিনি চাকরি দিয়ে আমাদের অনেক বড় উপকার করে দিয়েছেন এবং সেইজন্যই আমাদের তাঁর সমস্ত দাবি মেনে চলা উচিত।”
এমটিএস কর্মচারীরা আরও অভিযোগ করেছেন যে, বিদ্যুৎ চক্রবর্তী তাঁদের সঙ্গে মধ্যস্থতা করার জন্য বিশ্বভারতীর লাইব্রেরিয়ানকে (বর্তমানে, নিমাই চাঁদ সাহা) একজন যোগাযোগকারী ব্যক্তি হিসেবে মনোনীত করে রেখেছেন, গ্রন্থাগারিক এই কাজের জন্য মোটেই কোনও সঠিক কর্তৃপক্ষ নন। তা সত্ত্বেও, তিনি সবসময় কর্মীদের ওপর নির্দেশ জারি করে চলেছেন। চিঠিতে বলা হয়েছে, “লাইব্রেরিয়ান নিমাই চাঁদ সাহা ফোন কল এবং হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য নিজের উপর নিজেই কর্তৃত্ব নিয়ে নিয়েছেন, যা তাঁর অধিকারের বাইরে এবং বিশ্বভারতীর আইন-সংবিধি এবং সমস্ত পরিষেবা বিধি লঙ্ঘন করে।”
-
আগামি ৮ নভেম্বর, ২০২৩ তারিখে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর কর্মকালের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে। শোনা যাচ্ছে যে তাঁর মেয়াদ বাড়ানোর সম্ভাবনা খুব দূরবর্তী। কর্মীদের দাবি, তাঁর প্রবল ইচ্ছা রয়েছে শান্তিনিকেতন চত্বরে একটি মিছিল বের করার। সেই মিছিলের স্লোগান “বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে উপাচার্য হিসাবে আরও একটি মেয়াদ দেওয়া উচিত বা কমপক্ষে এক বছরের মেয়াদ বাড়ানো উচিত” বলে ইচ্ছা রয়েছে উপাচার্যের নিজেরই।
-
শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের কাছে বিস্ফোরক অভিযোগ যে, “তিনি আমাদের প্রবেশনারি চাকরির সুযোগ নিয়ে আমাদের ব্ল্যাকমেইল করেন এবং প্রায় আড়াইশো জন এমটিএস সদস্যকে প্রস্তাবিত মিছিলে অংশ নিতে বাধ্য করেন। তিনি মিছিলের ছবি মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন এবং তার মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করবেন। কিন্তু, তিনি এও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, এই মিছিল বেরোলে বোলপুর-শান্তিনিকেতনের সাধারণ মানুষ রাস্তায় আমাদের মারবে, এমনকি আমাদের জীবনও বিপন্ন হতে পারে।” নিজের প্রাণ নাশের আশঙ্কায় এখন তীব্র আশঙ্কায় ভুগছেন বিশ্বভারতীর কর্মীরা।
এমটিএস কর্মীরা মিছিল বের করা বন্ধ রাখার জন্য কাতর অনুরোধ জানিয়েছেন। চিঠির একটি অনুলিপি ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অফিস, পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকদের উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) অফিসে পাঠানো হয়েছে।
আরও পড়ুন-
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসানো ফলকে নাম নেই খোদ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের! আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মমতার
বিশ্বকবির জন্মদিনে বিবর্ণ বিশ্বভারতী, নমো নমো করে পালিত হল রবীন্দ্রজয়ন্তী
আরও খবরের আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।