সংক্ষিপ্ত
নারদকাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি
আটক ৪ হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী
তবে এই কেলেঙ্কারিতে নাম ছিল আরও ৩ জনের
মুকুল, শুভেন্দু , শঙ্কুদেব পণ্ডাদের কেন গ্রেফতার করছে না সিবিআই
নারদকাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। আটক করা হয়েছে ৪ হেভিওয়েট তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী এবং এক আইপিএস অফিসারকে। যার প্রতিক্রিয়ায় অবিলম্বে রাজ্যে সিবিআই-এর দফতরে হানা দিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পরিস্থিতিতে বড় হয়ে উঠছে আরও একটি প্রশ্ন। নারদ স্টিং অপারেশনে যে নেতাদের মুখ দেখা গিয়েছিল, তার মধ্যে ছিলেন সেই সময়ের আরও ৩ তৃণমূল নেতা - মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী এবং শঙ্কুদেব পণ্ডা। প্রশ্ন উঠছে, এঁদের কেন আটক করছে সিবিআই?
২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে প্রকাশ্যে এসেছিল নারদ স্টিং অপারেশনের ভিডিও। ২০১৪ সালে এই স্টিং অপারেশন চালিয়েছিলেন ম্যাথু স্যামুয়েল নামে এক সাংবাদিক। এক ব্যবসায়ীর ছদ্মবেশে রাজ্যের কয়েকটি প্রকল্পে লগ্নি করতে চেয়ে বেশ কয়েকজন তৃণমূল নেতাকে উৎকোচ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছিলেন ম্যাথু। সেই ঘটনার গোপন ভিডিওতে ম্যাথুর কাছ থেকে অর্থ নিতে দেখা গিয়েছিল রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সুব্রত মুখোপাধ্য়ায়, মদন মিত্র, শোভন চট্টোপাধ্য়ায় (প্রথম দুজন এখনও মন্ত্রী, মদন বিধায়ক), সাংসদ সৌগত রায়, শুভেন্দু অধিকারী, তৃণমূল নেতা মুকুল রায় এবং শঙ্কুদেব পণ্ডাকে।
ফিরহাদ, সুব্রত, মদন এবং শোভনকে এদিন আটক করেছে সিবিআই, আদালতে পেশ করা হবে চার্জশিট। কিন্তু, সৌগত রায়, শুভেন্দু অধিকারী, মুকুল রায় এবং শঙ্কুদেব পণ্ডার বিরুদ্ধে এখনও সিবিআই-কে কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না। প্রসঙ্গত, এই ৪ জদনের মধ্যে শুধুমাত্র সৌগত ছাড়া বাকিরা সকলেই এখন গেরুয়া শিবিরে, বিজেপি নেতা। রাজ্যের মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করতে গেলে যেমন রাজ্যপালের অনুমোদন লাগে, তেমনই সাংসদদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিতে গেলে, অনুমোদন লাগে লোকসভার অধ্যক্ষের অনুমোদন।
অপরাধের সময় তৃণমূলের সাংসদ পদে থাকা সৌগত রায় এবং শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নিতে গেলে সিবিআই-এর ওমপ্রকাশ বিড়লা। কিন্তু, এখনও তিনি সেরকম কোনও অনুমতি দেননি। তবে, মুকুল রায় এবং শঙ্কুদেব পণ্ডার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তেমন কোনও প্রশাসনিক বাধা নেই কেন্দ্রীয় সংস্থার। তাহলে কি রাজনৈতিক বাধা আছে? বস্তুত, মুকুল রায় এখন বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি। শঙ্কুদেবও এখন বিজেপি নেতা হিসাবেই পরিচিত।
তবে সবথেকে সমস্যায় রয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্য়ায়। তিনিও দল বদল করেছিলেন। তাঁকে বিজেপির কলকাতার পর্যবেক্ষকও করা হয়েছিল। কিন্তু, নির্বাচনের ঠিক আগে, কেন্দ্র অপছন্দ হওয়ায় গেরুয়া শিবিরের সংসর্গ ত্যাগ করেন তিন। ফিরহাদ, সুব্রত, মদনদের বাঁচাতে ইতিমধ্য়েই সিবিআই দফতরে হানা দিয়েছেন মমতা। তাঁকে গ্রেফতার না করলে তিনি সেখান থেকে নড়বেন না, এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। একসময়ের প্রিয় কানন-কে কি রক্ষা করবেন তিনি?