সংক্ষিপ্ত
- কাকদ্বীপের মৎস্যজীবী রবীন্দ্রনাথ দাস
- বুধবার তাঁকে উদ্ধার করে একটি বাংলাদেশি জাহাজ
- প্রায় পাঁচদিন সমু্দ্রে ভাসছিলেন তিনি
- শনিবার ট্রলারডুবির পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন ওই মৎস্যজীবী
স্বামী আর ফিরবেন না বলেই ধরে নিয়েছিলেন বন্দনা দাস। ট্রলারডুবির খবর আসার পর প্রায় পাঁচদিন ধরে স্বামীর কোনও খোঁজ না পাওয়ার পরে সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালেই এল সেই খবর। জানা গেল, কার্যত অবিশ্বাস্যভাবে রক্ষা পেয়েছেন বন্দনাদেবীর স্বামী রবীন্দ্রনাথ দাস। চার দিন ধরে গভীর সমুদ্রে ভেসে থাকার পরে বুধবার তাঁকে উদ্ধার করে বাংলাদেশের একটি জাহাজ। আপাতত চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন রবীন্দ্রনাথবাবু। কিন্তু যতক্ষণ না চোখের সামনে স্বামীকে দেখছেন ততক্ষণ কিছুতেই যেন খবরটা বিশ্বাস হচ্ছে না বন্দনাদেবীর।
আরও পড়ুন- উল্টে যাওয়া ট্রলারের উপরে মৎস্যজীবীরা, উত্তাল সমু্দ্রে বাঁচার লড়াই, দেখুন ভিডিও
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার কাকদ্বীপের নারায়ণপুরের বাসিন্দা রবীন্দ্রনাথ দাস গত ৩ জুলাই এফবি নয়ন নামে একটি ট্রলারে করে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন। কিন্তু শনিবার খারাপ আবহাওয়ার জেরে বঙ্গোপসাগরেই ডুবে যায় সেই ট্রলার। এফবি নয়ন ছাড়াও আরও বেশ কয়েকটি ট্রলারও বিপদে পড়ে। মোট পঁচিশজন মৎস্যজীবী নিখোঁজ ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবুও। বাকিদের খোঁজ না মিললেও আশ্চর্যজনকভাবে রক্ষা পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- নিষেধ অগ্রাহ্য করেই মাঝ সমুদ্রে, ট্রলার ডুবে নিখোঁজ কাকদ্বীপের বহু মৎস্যজীবী
আরও পড়ুন- উত্তাল সমুদ্র, ডুবছে ট্রলার, সাহসী মৎস্যজীবীরা কীভাবে বাঁচলেন, দেখুন ভিডিও
ঘটনার খবর পাওয়ার পর থেকেই উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল দাস পরিবারের। বার বার মৎস্যজীবী সংগঠনের অফিসে গিয়েও গত কয়েকদিনে ভাল কোনও খবর পাওয়া যায়নি। যত দিন যাচ্ছিল, আস্তে আস্তে স্বামীর ফেরার আশা ত্যাগ করছিলেন বন্দনাদেবীও। বাড়িতে স্ত্রী ছাড়াও দুই সন্তান এবং বৃদ্ধ বাবা-মা রয়েছে রবীন্দ্রনাথ দাসের। সমু্দ্রে যাওয়ার আগে তাঁদের খেয়াল রাখার জন্য স্ত্রীকে বলে গিয়েছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। স্বামীর ফেরার আশা যখন একরকম ছেড়েই দিয়েছেন, তখন বৃহস্পতিবার সকালে রবীন্দ্রনাথবাবুকে উদ্ধারের খবর জানতে পারে দাস পরিবার। জানা যায়, বুধবার সকালে বাংলাদেশের চট্টগ্রামের কাছে ওই মৎস্যজীবীকে জলে ভাসতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করে বাংলাদেশি একটি জাহাজ। প্রায় পাঁচ দিন ধরে সমু্দ্রের জলেই ভাসছিলেন ওই মৎস্যজীবী। প্রাথমিক শুশ্রুষার পরে তাঁকে চট্টগ্রামের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর অবস্থা স্থিতিশীল বলেই খবর।
স্বামী যে বেঁচে রয়েছেন, প্রথমে তা বিশ্বাসই করতে পারেননি ওই গৃহবধূ। সুখবর পাওয়ার পরে তিনি বলেন, 'শুনেছি ওঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে, কিন্তু এখনও ওর সঙ্গে কথা হয়নি। ওঁকে যতক্ষণ না চোখে দেখছি, বিশ্বাস করতে পারছি না।' পরে অবশ্য বাংলাদেশের জাহাজে রবীন্দ্রনাথবাবুর ছবি দেখার পরে অনেকটাই আশ্বস্ত হন তিনি।