এ দিন উদ্বোধন হয় ‘দোস্তজি’র নতুন পোস্টার। সেখানে জ্বলজ্বল করছে নিবেদক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। প্রকাশ্যে আসে ছবির ট্রেলার।
প্রবল উচ্ছ্বাস আর গর্বমিশ্রিত অনুযোগ। নিজের বাড়ি ‘উৎসব’-এ এ ভাবেই শুক্রবার দুপুরে ধরা দিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সব কৃতিত্ব প্রসূন চট্টোপাধ্যায়ের ‘দোস্তজি’-র! ১৯/১, ওল্ড বালিগঞ্জ রোডে এক ঝাঁক সাংবাদিক এ দিন চট্টোপাধ্যায়-চট্টোপাধ্যায়ের ‘দোস্তজি’র সাক্ষী। উপস্থিত ছিলেন পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী, অভিজিৎ গুহও। বিজয়া সম্মিলনীকে নেপথ্যে রেখে সবার ‘বুম্বাদা’ এ দিন উদযাপন করলেন প্রসূনের প্রথম ছবির সাফল্য। তাঁর কথায়, ‘‘পরিচালক থেকে অভিনেতা— প্রত্যেকের প্রথম ছবি। আর প্রথম ছবিতেই বাজিমাত! সর্বোচ্চ সম্মান ‘গোল্ডেন শিখা’ পুরস্কার। বাংলা ছবির গর্ব করার মতো দিন।’’ তাঁর দু’পাশে জড়সড় হয়ে দাঁড়িয়ে ছবির তিন মুখ্য অভিনেতা। তাঁদের বুকে জড়িয়ে নিতে নিতে স্নেহ আর গর্বমিশ্রিত অনুযোগ বুম্বাদার, ‘‘আমি ৩৫০টিরও বেশি ছবি করে ফেললাম! তবু এই সম্মান এখনও অধরা। তোরা তো পয়লা ছবিতেই নজির গড়লি!’’ তার পরেই টিম ‘দোস্তজি’কে সম্মান জানিয়ে তাঁর ঘোষণা, তিনি এই ছবির নিবেদক। শুনেই আনন্দে ঝলসে উঠেছেন নতুন পরিচালক। উপস্থিত চিত্রগ্রাহকদের ক্যামেরার মুহূর্মুহূ ফ্ল্যাশের ঝলকে সামান্য কি অস্বস্তিতে তিন খুদে? ‘বুম্বাদা’ যথারীতি তাঁর মতো করে সবাইকে নিয়ে এক ফ্রেমে।
তার পরেই অবশ্য জোড়হাতে সাংবাদিকদের সামনে তিনি। অনুরোধ, দয়া করে এই পদক্ষেপের কোনও বাণিজ্যিক দিক না খোঁজাই ভাল। প্রসেনজিৎ সবটাই করেছেন বাংলা ছবি এবং নতুন পরিচালক-অভিনেতাদের সমর্থনে। অনেকের এই নিয়েও কৌতূহল ছিল, পাঁচতারা হোটেলেও এই অনুষ্ঠান হতে পারত। নিজের বাড়িতে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে গোটাটা কেন পরিচালনা করলেন ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’? হাল্কা স্লেট রঙের উপরে সাদা কাজের বেনিয়ান পাঞ্জাবিতে সুপুরুষ প্রসেনজিতের যুক্তি, ‘‘এইটুকু বাচ্চাগুলো পাঁচতারা হোটেলে গিয়ে অনুষ্ঠান করবে! আরও জড়সড় হয়ে যাবে। ‘দোস্তজি’ খোলামেলা বন্ধুত্বের গল্প বলেছে। আমিও সেই স্বাদ ধরে রাখতে খোলা আকাশের নীচে, বাড়ির সবুজ বাগানে সবাইকে আমন্ত্রণ জানালাম।’’ তাঁর এও দাবি, সাংবাদিকদের সঙ্গে তাঁর আজীবনের বন্ধুত্ব। গত দু’বছর করোনা-কারণে তাঁরা বিজয়া করতে ‘উৎসব’-এ আসতে পারেননি। তাই তাঁদের কথা ভেবেও এই আয়োজন। নতুন পরিচালক অবশ্য জানিয়েছেন, আরও একটি নেপথ্য কারণ রয়েছে। তাঁর ছবির তিন খুদে অভিনেতার অবুঝ দাবি, ‘‘আমরাও বুম্বাদার মতোই অভিনয় করি। সংলাপ বলি। তা হলে বুম্বাদা কেন আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন না?’’ ওদের এই আবদারকেও সম্মান জানিয়েছেন তারকা-অভিনেতা।
এ দিন উদ্বোধন হয় ছবির নতুন পোস্টার। সেখানে জ্বলজ্বল করছে নিবেদক প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়ের নাম। তিন শিশু অভিনেতা পার্সপোর্ট না থাকায় জাপানে পুরস্কার আনতে যেতে পারেনি। সেই পুরস্কার এ দিন তাদের হাতে তুলে দেন খোদ ইন্ডাস্ট্রি! তিন জনকে তিনটি ছোট পোস্টারে ‘অটোগ্রাফ’ও দেন পর্দার ‘অরুণ চট্টোপাধ্যায়’। এ ছাড়াও, প্রকাশ্যে আসে ছবির ট্রেলার। প্রসূন জানান, ছবিটি বিশুদ্ধ বন্ধুত্বের গল্প। পটভূমিকায় বাবরি মসজিদ ধ্বংস এবং মুম্বইয়ের ধারাবাহিক বিস্ফোরণ। আশা, বিদেশের মতো নিজের দেশ এবং শহরও তাঁকে ফেরাবে না। ছবির নাম ঠিক করে দিয়েছেন পরিচালক অভিজিৎ গুহ।
আরও পড়ুন- দিতিপ্রিয়া রায়কে নিয়ে টানাপড়েন! যশ দাশগুপ্তের বদলে আসছেন শন বন্দ্যোপাধ্যায়?
আরও পড়ুন- বিজয়া সম্মিলনীতে প্রসেনজিতের বাড়িতে ভিয়েন! উপহার ডালপুরী, ফিশফ্রাই, ‘দোস্তোজি’