পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু মূর্তি হিসাবে নাম নথিভুক্ত রয়েছে ১৮২ মিটার উচ্চতার 'স্ট্যাচু অফ ইউনিটি'র। প্রথমবার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই বিশাল মূর্তি তৈরি করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এবার দেশের করোনা যুদ্ধে টাকার যোগান দিতে সেই মূর্তিকেই বেঁচে দেওয়ার বিজ্ঞাপন দেওয়া হল। অবাক হতে হলেও এমন বিজ্ঞাপন চোখে পড়েছে বেচাকেনার সাইট ওএলএক্সে। গুজরাতের কেওড়িয়া কলোনিতে অবস্থিত সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই মূর্তিটির জন্য দাম হাঁকা হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা।
'স্ট্যাচু অফ ইউনিটি' বিক্রি করতে যে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল, তাতে লেখা হয়, “ইমারজেন্সি! স্ট্যাচু অফ ইউনিটি বিক্রি করা হচ্ছে কারণ হাসপাতাল এবং চিকিৎসা সরঞ্জামের জন্য জরুরি ভিত্তিতে অর্থের প্রয়োজন।” বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হতেই পোস্টটি চটজলদি সরিয়ে নেয় ওএলএক্স কর্তৃপক্ষ।
খবরটি স্থানীয় এক সংবাদপত্রে প্রকাশিত হওয়ার পরই চোখে পড়ে স্ট্যাচু অফ ইউনিটি কর্তৃপক্ষের। তারপর পুলিশকে ওই অজানা ব্যক্তির বিরুদ্ধে এফআইআর করার আর্জি জানানো হয়। এরপরেই সাইট থেকে বিজ্ঞাপনটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
নিয়ন্ত্রণে আসছে না সংক্রমণ, ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিট ছেড়ে এবার হাসপাতালে বরিস জনসন
রক্ষে পেল না বাঘমামাও, চিড়িয়াখানায় এবার করোনা সংক্রমণের শিকার ৪ বছরের নাদিয়া
জুনে পরিস্থিতি হবে সবচেয়ে খারাপ, সমীক্ষা বলছে লকডাউন চলতে পারে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত
স্ট্যাচু অফ ইউনিটির সহকারী কমিশনার নীলেশ দুবের সই করা একটি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “কোনও অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি সরকারের মানহানি করার উদ্দেশ্যে ওএলএক্স-এ স্ট্যাচু অফ ইউনিটি বিক্রি করার উদ্যোগ নেয়, যদিও এমন কাজ করার কোনও অধিকারই তার ছিল না।” বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, “এটা অত্যন্ত নিন্দনীয় যে ওএলএক্স এই বিজ্ঞাপনটি যাচাই না করেই নিজেদের সাইটে পোস্ট করার অনুমতি দিয়ে দেয়।”
গুজরাতের এক পুলিশ আধিকারিক জানান, “আমরা কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। এফআইআর দায়ের করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” ভারতীয় দণ্ডবিধির ৫০৫ (গুজব ছড়ানো) সহ বিভিন্ন ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে ওই অজানা ব্যক্তির বিরুদ্ধে। তার খোঁজে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।
এর আগে বলিউডি সিনেমা ‘বান্টি অউর বাবলি’ তে দেখা গিয়েছিল বোকা বানিয়ে পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের তাজমহল বিক্রি করে দিয়েছিল বান্টি ও বাবলি। বাস্তব জীবনেও নটবরলাল এমন জালিয়াতি অনেকবার করেছিল। নটবরলাল একাধিকবার বেচে দিয়েছিল তাজমহল, লাল কেল্লা, রাষ্ট্রপতি ভবন, এমনকি সমস্ত সদস্য সমেত সংসদ ভবনও! এবার করোনার জন্য অর্থসাহায্যের নামে 'স্ট্যাচু অফ ইউনিটি' বেচার ছক কষেছিল আরেক জালিয়াত।
২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর 'স্ট্যাচু অফ ইউনিটি' উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে গুজরাতের অন্যতম এই দ্রষ্টব্য ১৭ মার্চ থেকে ট্যুরিস্টদের জন্য বন্ধ রয়েছে।