ভারতবর্ষে ২১ দিনের লকডাউন প্রায় শেষের পথে
নিশ্চিতভাবে আরও দুই সপ্তাহ চলবে এই লকডাউন
কিন্তু, অভাবীদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হল না
রবিবার উত্তরপ্রদেশের ভাড়োহি জেলার আরও একবার উঠে এল নির্মম সত্য
ভারতবর্ষে প্রথমে ২১ দিনের লকডাউন জারি করা হয়েছিল। যার মেয়াদ ফুরোতে আর মাত্র ২দিন বাকি। ভারতে ইতিমধ্যেই চারটি রাজ্যে লকডাউনের মেয়াদ দুই সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার গোটা দেশেই সেই পথে হাঁটবে বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু, এতগুলো দিন পার হয়ে গেলেও এখনও দেশের দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হল না সরকারে। রবিবার উত্তরপ্রদেশের ভাড়োহি জেলার এক মর্মস্পর্শী ঘটনায় এই নির্মম সত্য আরও একবার উঠে এল।
এদিন ভাড়োহি জেলার জেঙ্গিরাবাদ এলাকায় এক মহিলা তাঁর পাঁচ-পাঁচজন সন্তানকে গঙ্গা নদীতে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে এসে উপস্থিত হল উত্করপ্রদেশ পুলিশের উর্ধ্বতন আধিকারিকরা। ওই শিশুদের জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধারের জন্য ডেকে আনা হয় পেশাদার ডুবুরিদের। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় ওই মহিলাকে। পুলিশের বড়কর্তাদের দাবি, ওই মহিলা তাদের কোনও প্রশ্নের উত্তর দিচ্ছেন না। তিনি সম্ভবত মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন।
কিন্তু, স্থানীয় সূত্রে দাবি করা হচ্ছে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাকর পিছনে লুকিয়ে আছে অনাহারের এক মর্মন্তুদ কাহিনি। জানা গিয়েছে লকডাউনের বাজারে ওই মহিলার ঘরে দাঁতে কাটার মতো একটিও দানা ছিল না। গত কয়েকদিন ধরেই বস্তুত প্রায় অনাহারেই তাঁর ও তাঁর সন্তানদের দিন কাটছিল। খাবার কিনে আনার মতো কোনও টাকা-পয়সাও ছিল না তাঁর কাছে। ওই মহিলা দিনমজুরের কাজ করতেন। তিনি ছাড়া সংসারে আর কোনও উপার্জনকারীও নেই। তাঁর স্বামী কোথায়, তিনি কী ওই মহিলাকে ছেড়ে গিয়েছেন, নাকি লকডাউনে অন্য কোথাও আটকে আছেন, সেসব কিছুই অবশ্য এখনও জানা যায়নি।
প্রাণীসম্পদ থেকে পোষ্য হল কুকুর, করোনাভাইরাস-এর জেরে চিনে বড়-সড় রদবদল
রোজ রাত আটটা বাজলেই দেশজুড়ে সবাই করছে ঘেউ ঘেউ, করোনাতঙ্কের আমেরিকায় হচ্ছেটা কী, দেখুন
করোনা-লড়াইয়ে দারুণ স্বস্তি, ভারতের গোলাবারুদ প্রস্তুতকারকরাই তৈরি করলেন অভিনব অস্ত্র
পুলিশের বড়কর্তাদের সাফ কথা, তাঁদের অগ্রাধিকার হল যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ওই পাঁচ শিশুকে জীবিত বা মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা। তারপরই তাঁরা অন্যান্য বিষয়ের তদন্ত করবেন।
শনিবারই, পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ায় পিত বমি করতে করতে এক ১২ বছরের কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল। সেই ক্ষেত্রেও মৃত কিশোরের বাবা ও পরিবারের অন্যান্যরা অভিযোগ করেছিলেন, অনাহারের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। জানা গিয়েছিল, প্রায় চারদিন ধরে তাদের ঘরে হাঁড়ি চড়েনি। তার আগে পশ্চিমবঙ্গেরই হরিশচন্দ্রপুরে বেদে-বিনি-মুস্সহরদের পাড়ায় কচুপাতা সিদ্ধ করে খাওয়ার ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছিল সংবাদ শিরোনামে।