সংক্ষিপ্ত
কুকুররা চিনে আর প্রাণীসম্পদ নয়
ফের পোষ্যের মর্যাদা ফিরে পেল তারা
করোনাভাইরাস-এর জন্যই এটা সম্ভব হল
বন্যপ্রাণীদের নিয়ে ব্যবসায় অনেক বিধিনিষেধ-ও জারি করা হল।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের জেরে চিন ফের কুকুররা পোষ্য প্রাণীর মর্যাদা ফিরে পেল। বৃহস্পতিবার চিনের কৃষি মন্ত্রক বলেছে, করোনভাইরাস প্রাদুর্ভাবের প্রতিক্রিয়ার অংশ হিসাবে কুকুরদের লাইভস্টক বা প্রাণিসম্পদের তালিকা থেকে ফের পোষ্যের তালিকাভুক্ত করা হল। অর্থাৎ, চিনে কুকুরের মাংস আর খাওয়া যাববে না, কারণ তারা পোষ্য প্রাণী। 'হিউম্যান সোসাইটি' সংস্থা চিন সরকারের এই সিদ্ধান্ত-কে প্রাণী কল্যাণে একটি সম্ভাব্য 'গেম চেঞ্জার' বলে স্বাগত জানিয়েছে।
চিনের অনেক এলাকাতেই কুকুরের মাংস অতি উপাদেয় খাবার হিসাবে গন্য করা হয়। কিন্তু, বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে চিনের কৃষি মন্ত্রক সাফ জানিয়ে দিয়েছে, কুকুর আর লাইভস্টক নয়। তারা স্পষ্ট করে দিয়েছে, 'লাইভস্টক' সেইসব প্রাণীদেরই বলা হবে, যাদের খাদ্য, দুধ, পশম, ফাইবার এবং ওষুধ, বা খেলাধুলা ও সামরিক প্রয়োজনের জন্য প্রজনন করা যেতে পারে। কিন্তু, এখন থেকে কুকুরকে উপরোক্ত কোনও কারণেই প্রজনন করা যাবে না। মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, মানব সভ্যতার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে কুকুর মানুষের বিশেষ সহযোগী প্রাণী হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিকভাবে কুকুরকে লাইভস্টক হিসাবে গন্য করা হয় না। চিনেও প্রাণিসম্পদ হিসাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ছিল। কিন্ত, এখন থেকে তা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হল।
চিনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস সংক্রমণের খবর পাওয়া গিয়েছিল। অনেকেই মনে করেন, 'হর্সশু' প্রজাতির বাদুর থেকেই এই ভাইরাস প্যাঙ্গোলিন-এর দেহে সংক্রামিত হয়েছিল এবং সেখান থেকেই মানবদেহে এসেছে। এই ভাইরাস-এর প্রাদুর্ভাব এখন অনেকটাই সামলে উঠেছে চিন। সম্প্রতি চিনে বন্যপ্রাণ প্রজনন, বাণিজ্য ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে এবং বিদ্যমান সমস্ত লাইসেন্স-ও বাতিল করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী করার জন্য আইন সংশোধন করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তিন সরকার। কারণ এর আগে সার্স সংক্রমণের সময়েও সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল, যা ককয়েক বছর পর তুলে নেওয়া হয়।
এই নয়া নির্দেশিকাটিতে গবাদি পশু, শূকর, হাঁস-মুরগী ও উট সহ মোট ১৮ টি প্রাণীকে প্রাণীম্পদ প্রজাতির তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। সেইসঙ্গে 'বিশেষ প্রজাতি' হিসাবে আরও ১৩টি বন্যপ্রাণের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। যাদের বন্যপ্রাণীর ব্যবসায় নিষেধাজ্ঞা থেকে ছাড় দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে বলগা হরিণ, আলপাকা, ফেস্য়ান্ট, উটপাখি এবং শিয়াল।
২ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষের সমাবেশ, ভারতের পর পাকিস্তান-কে ডোবালো তাবলিগি জামাত
গাছ থেকেও ছড়াচ্ছে করোনা, কাশ্মীরে কাটা পড়ছে শ'য়ে শ'য়ে রুশ মহিলা পপলার
করোনাভাইরাস হটস্পট, হৃৎস্পন্দন বাড়িয়ে দিচ্ছে ভারতের এই ৬ শহর
চিনে অবশ্য খাদ্য হিসাবে কুকুরের ব্যবহার ক্রমেই কমছিল। দক্ষিণের শহর শেনজেন-এ এটি আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। পরে আরও কয়েকটি শহর ও প্রদেশও একই পথে হাঁটে। তবে তারপরেও 'হিউম্যান সোসাইটি ইন্টারন্যাশনাল' নামে একটি প্রাণী কল্যাণ সংস্থার হিসাব অনুযায়ী চিনে বর্তমানে মাংসের জন্য বছরে প্রায় দশ লক্ষ্য কুকুর মারা হয়। এমনকী পোষা কুকুরও মেরে খাওয়ার জন্য চুরি করা হয়েছে। গুয়াংজি অঞ্চলের ইউলিন শহরে প্রতি বছর জুন মাসে বার্ষিক কুকুরের মাংস খাওয়ার উৎসবও পালন করা হয়।