দেশে তৃতীয় তরঙ্গ নিয়ে সতর্ক করল দিল্লি হাইকোর্ট। শুক্রবার আদালতের পর্যবেক্ষণ যেভাবে বাজারে ভিড় হচ্ছে, তাতে দেশে খুব দ্রুত ছড়াবে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ। বাজারগুলিতে করোনা বিধি না মেনে চললে, ভারতকে এর ফল ভুগতে হতে পারে। দিল্লির বাজারগুলিতে করোনা বিধি মানা হচ্ছে-এই মর্মে হাইকোর্টের জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। তারই প্রেক্ষিতে এই রায় দেয় হাইকোর্ট।
কলকাতায় শুরু কনটেনমেন্ট জোন তৈরির কাজ, ১৭ দিনের জন্য ঘেরা হল রাজারহাট
শুক্রবার দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে বাজারে যেভাবে মানুষ করোনা বিধি না মেনেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা গোটা দেশের ক্ষতি করতে পারে। এই ধরণের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ করোনার তৃতীয় ঢেউকে খুব দ্রুত ডেকে আনতে সক্ষম হবে। কোনও ভাবেই এই ধরণের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। প্রশাসনকে এব্যাপারে কড়া হতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ ক্রেতাকে যেমন সতর্ক হতে হবে তেমনই বিক্রেতাকেও উদ্যোগী হতে হবে করোনা সংক্রমণ রোধের ব্যাপারে। এদিন আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সোশ্যাল মিডিয়াও হোয়াটসঅ্যাপে ঘুরে বেড়ানো বিভিন্ন বাজারের ছবি ও মানুষের নিয়ম বিধি না মানার তথ্য নেয়। সেখানেই বিভিন্ন মানুষের মুখে মাস্ক না থাকার ছবি ধরা পড়ে।
আগামী ২৪ ঘন্টায় টানা বৃষ্টির পূর্বাভাস, আর কী জানাল হাওয়া অফিস
দিল্লি হাইকোর্ট এদিন কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারকে একটি নোটিশ ধরিয়েছে। কী পরিস্থিতি, সে সম্পর্কে একটি পূর্ণাঙ্গ তথ্য সম্বলিত রিপোর্ট জমা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে কেন্দ্র ও দিল্লি সরকারের আরোও কঠোর হওয়া উচিত এই বিষয়ে, যাতে দেশে কোনওভাবেই করোনার তৃতীয় তরঙ্গ ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
এর আগে, দিল্লির ওপর থেকে লকডাউন তুলে নেওয়া প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল জানিয়ে ছিলেন এক সপ্তাহ পরিস্থিতি নজরে রাখা হবে। যদি সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ে, ফের লকডাউনের নিয়মবিধি জারি করা হবে। যদিও এদিন ভারতের দৈনিক নতুন সংক্রমণের সংখ্যাও আরও একটু কমেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের কোভিড-১৯ ড্যাশবোর্ড বলছে, গত ২৪ ঘন্টায় ভারত ৬২,৪৮০ টি নতুন করোনভাইরাস সংক্রমণের ঘটনা নথিভুক্ত করেছে। এই নিয়ে একটানা এগারো দিন দৈনিক সংক্রমণের সংখ্যা ১ লক্ষের নিচেই থাকল।
আশঙ্কাই সত্যি হল, গঙ্গায় ভাসছে উত্তরপ্রদেশ-বিহার থেকে আসা করোনা রোগীর পচাগলা দেহ
একইসঙ্গে, এদিন করোনাজনিত কারণে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাটা আরও একটু কমে ১,৫৮৭ হয়েছে। এরমধ্য়ে অবশ্য মহারাষ্ট্রের আগে মৃত ৪০০ জনের হিসাব রয়েছে। আর দৈনিক পরিসংখ্য়ানে যোগ করা যায়নি ঝাড়খণ্ডের নতুন সংক্রমণ ও দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা। কারণ বৃহস্পতিবার রাত থেকে এই রাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইটে সমস্যা হয়েছে।
সবমিলিয়ে, বর্তমানে ভারতের মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২,৯৭,৬২,৭৯৩ এবং করোনা জনিত কারণে এখনও পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৩,৮৩,৪৯০ জনের। স্বাস্থ্য মন্ত্রক আরও জানিয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাস সংক্রমণ-মুক্ত হয়েছেন ৮৯,০০০ জন। ফলে দেশে এখনও পর্যন্ত মোট করোনাজয়ীর সংখ্যা দাঁড়াল ২,৮৫,৮০,৬৪৭ জন। আর ভারতের দৈনিক টিপিআর বা টেস্ট পজিটিভিটি রেট, অর্থাৎ, দৈনিক পরীক্ষার ইতিবাচক হার দাঁড়িয়েছে ৩.২৪ শতাংশে। এই নিয়ে এগারো দিন ধরে এই সংখ্যাটা ৫ শতাংশের নিচেই রয়েছে।