যত দিন এগোচ্ছে ততই এপার বাংলার মত ওপার বাংলারও করোনা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে উঠছে। বাংলাদেশে দ্রুত গতিতে বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। পরিস্থিতি সামাল দিতে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। সপ্তাহেই বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান তাঁর দলীয় সতীর্থদের উদ্দেশে আবেদন করেন, সকলে যেন নিজেদের ক্রিকেট সরঞ্জাম ও জার্সি নিলাম করে দরিদ্রদের সাহায্য করেন। তারপরই বাংলাদেশের উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম কোভিড-১৯ আক্রান্তদের ত্রাণ তহবিলে সাহাজ্যের জন্য শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে নিজের ডাবল সেঞ্চুরি করা ব্যাটটি নিলাম করার সিদ্ধান্ত নেন। এবার নিজের বিশ্বকাপের ব্যাট নিলামের সিদ্ধান্ত নিলেন সাকিব আল হাসানও।
আরও পড়ুনঃলারাকে বল করতে রীতিমত ভয় পেতাম, অকপট স্বীকারোক্তি শাহিদ আফ্রিদির
গত বছর ইংল্যান্ডে হওয়া ওয়ানডে বিশ্বকাপে দুর্দান্ত সফল ছিলেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের অলরাউন্ডার আট ম্যাচে করেছিলেন ৬০৬ রান। বিশ্বকাপে দুটো সেঞ্চুরি ও পাঁচটা হাফ-সেঞ্চুরি করেছিলেন সাকিব। গড় ছিল ৮৬.৫৭। শুধু ব্যাট হাতেই নয়, বোলার সাকিবও সাফল্য পেয়েছিলেন। নিয়েছিলেন ১১ উইকেট। বিশ্বকাপের ইতিহাসে তিনিই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি কোনও টুর্নামেন্টে ছ’শোর বেশি রান নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দশের বেশি উইকেট নিয়েছেন।যে ব্যাটে এসেছিল এত রান, করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে সেই ব্যাটই এ বার নিলামে তুলছেন তিনি। নিলাম থেকে পাওয়া অর্থ যাবে সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশনে।
আরও পড়ুনঃ২২ বছর পরেও মরুঝড়ের স্মৃতি মুগ্ধ করে সচিন ভক্তদের
এক ফেসবুক লাইভ সেশনে সাকিব বলেছেন, “আগেও বলেছি যে ব্যাট নিলামে তুলতে চাইছি। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপের ব্যাটকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা আমার অন্যতম ফেভারিট ব্যাট।” তিনি আরও বলেছেন, “ব্যাট ও বল, দু’দিক দিয়েই বিশ্বকাপ ভাল গিয়েছিল। বিশেষ করে ব্যাটে বেশ কয়েকটা ভাল পারফরম্যান্স ছিল। পুরো বিশ্বকাপই খেলেছিলাম এই একটা ব্যাটেই। এমনকি, ব্যাটে টেপ লাগিয়েও খেলেছি।” এই ব্যাটে আগেও খেলেছিলেন সাকিব। বলেছেন, “শুধু বিশ্বকাপেই যে এই ব্যাটে খেলেছি, এমন নয়। এই ব্যাটে দেড় হাজারের বেশি রান করেছি। বিশ্বকাপের আগে থেকেই এই ব্যাটে খেলতে শুরু করেছিলাম। বিশ্বকাপের পরেও খেলেছি এই ব্যাটে। এত ভালবাসলেও এই ব্যাটকে নিলামে তোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি কারণ করোনাভাইরাস সঙ্কটে এটা অর্থ সংগ্রহের কাজে আসতে পারে। এটা আমার কাছে স্পেশ্যাল ব্যাট ঠিকই, কিন্তু মানুষরা আমার কাছে আরও স্পেশ্যাল।”
দেশের বিপদের দিনের শুধু সাকিব আল হাসান বা মুশফিকুর রহিমই নয়, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এসেছেন দলের সব ক্রিকেটার। ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের মোট ২৭ জন ক্রিকেটার তাদের বেতনের অর্ধেক অংশ তুলে দিয়েছেন সরকারের করোনা মোকাবিলা সংক্রান্ত তহবিলে। বাংলাদেশ বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ৯১ জন ক্রিকেটার নিজেরা একটা তহবিলও করে ফেলেছেন। যেখানে জমা হচ্ছে লক্ষ লক্ষ। সেই টাকা খরচ করা হবে দেশের করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা ও ত্রাণ সামগ্রি বিতরনে। ব্যাট নিলাম ছাড়াও করোনার বিস্তার রোধ করতে খুলে ফেলেছেন সাকিব আল হাসান ফাউন্ডেশন। যে ফাউন্ডেশন অর্থসংগ্রহ করে ইতিমধ্যে করোনা পরীক্ষার কিট তুলে দিয়েছে বিভিন্ন হাসপাতালের হাতে।