
গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হারের পর নামিবিয়া যে মূল পর্ব অর্থাৎ সুপার ১২-এ পৌছবে তা ভাবেনি অনেকেই। পরের দুটি ম্যাচে নেদারল্যান্ডস এবং টেস্ট খেলিয়ে দেশ আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে ইতিহাস তৈরি করে মূল পর্বে পৌছায় গারহার্ড এরাসমাসের (Gerhard Erasmus)দল। তা ছিল সবে শুরু, টি২০ বিশ্বকাপের সুপার ১২ রাউন্ডের প্রথম ম্যাচেই স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে নজির তৈরি করল নামিবিয়া। স্কটিশদের ৪উইকেটে হারাল তারা। ম্যাচে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে মাত্র ১০৯ রান করে স্কটিশরা। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন মাইকেল লিস্ক। জবাবে রান তাড়া করতে নেমে একটু চাপে পড়লেও, জেজে স্মিট, ক্রেইগ উইলিয়ামস, মাইকেল ভ্যান লিঙ্গেন, ডেভিড উইজিদের দলগত ব্যাটিংয়ের সৌজন্যে ৫ বল বাকি থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌছে যায় নামিবিয়া।
এদিন টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় নামিবিয়া। ইনিংসের শুরুতেই স্কটল্যান্ডের ব্যাটিংলাইনে ধস নামান রুবেল ট্রাম্পেলমান। হ্যাটট্রিক না হলেও প্রথম ওভারেই ৩ উইকেট নিয়ে স্কটিশদের জোর ধাক্কা দেন তিনি। খাতা না খুলেই প্য়াভেলিয়নে ফেরত যান জর্জ মান্সে, ক্যালাম ম্যাকলিওড ও অধনাক রিচি বেরিংটন। ২ রানে ৩ উইকে পড়ে গিয়েছিল স্কটল্যান্ডের। চতুর্থ উইকেট পেতেও বেশি সময় লাগেনি নামিবিয়ার। দলের ১৮ রানের মাথায় আউট হন ক্রেইগ ওয়ালেস। ৪ রান করে ডেভিড উইজির শিকার হন তিনি। এরপর কিছুটা লড়াই দেন মিচেল লিস্ক ও ম্যাথিই ক্রস। দুজন মিলে ৩৯ রানের পার্টনারশিপ করেন। কিন্তু দলের ৫৭ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ১৯ রানে আউট হন ক্রস। তাকে আউট করেন জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক। ৫ উইকেটে হারিয়ে ব্যাপক চাপে পড়ে যায় স্কটিশরা।
এরপর দলের ইনিংসের রাশ কিছুটা ধরেম মিচেল লিস্ক ও ক্রিস গ্রিভস। দুজনে মিলে পার্টনারশিপ গড়ে তুললেও দলকে বড় স্কোর পৌছে দিতে পারেনি। ৩৩ রানের পার্টনারশিপ গড়ার পর ৯৩ রানে ষষ্ঠ উইকেট পড়ে স্কটল্যান্ডের। ৪৪ রানের লড়াকু ইনিংস খেলে জেজে স্মিটের বলে আউট হন লিস্ক। ৪টি চার ও ২টি ছয়ে সাজানো তার ইনিংস। ৯৯ রানের সপ্তম উইকেট পড়ে স্কটল্যান্ডের। ৩ রান করে জ্যান ফ্রাইলিঙ্কের বলে আউট হন মার্ক ওয়াট। শেষে ২৫ রান করে রান আউট হন ক্রিস গিভস। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০স ওভারে মাত্র ১০৯ রানে থামে স্কটিশদের ইনিংস। নামিবিয়ার হয়ে রুবেল ট্রাম্পেলমান ৩টি উইকেট নেওয়ার পাশাপাশি ২টি উইকেট নেন জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক, একটি করে উইকেট নেন জেজে স্মিট ও ডেভিড উইজি। নামিবিয়ার জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ১১০ রান।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালোই করেছিল নামিবিয়ার ২ ওপেনাপ ক্রেইগ উইলিয়ামস ও মাইকেল ভ্যান লিঙ্গেন। ওপেনিং জুটিতে ২৮ রানের পার্টনারশিপ করেন তারাষ কিন্তু ব্যক্তিগত ১৮ রান করে সাফিয়ান সারিফের বলে আউট হয়ে যান ভ্যান লিঙ্গেন। একদিক থেকে ক্রেইগ উইলিয়ামস থাকলেও জেন গ্রিণ বেশিক্ষণ ক্রিজে টিকে থাকতে পারেননি। দলের ৫০ রানে দ্বিতীয় উইকেট পড়ে নামিবিয়ার। ৯ রান করে ক্রিস গিভসের বলে আউট হন গ্রিন। চতুর্থ উইকেট পেতেও বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি স্কটিশদের। নামিবিয়ার দলের ৬১ রানের মাথায় মাত্র ৪ রান করে মাইকেল লিস্কের বলে আউট হন অধিনায়ক গারহার্ড এরাসমাস। ২৩ রান করে দলের ৬৭ রানে আউট হন ক্রেইগ উইলিয়ামসও। ২৩ রান করে মার্ক ওয়াটের শিকার হন তিনি।
আরও পড়ুনঃতার রূপের তুফান হার মানাতো আরবের মরুঝড়কে, এখন কেন পর্দার আড়ালে থাকেন ইরফান পাঠানের বউ
নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারানো ও রানের গতি কমায় আরও একটি লো স্কোরিং রুদ্ধশ্বাস ম্য়াচ দেখার অপেক্ষায় ছিলেন ক্রিকেটে প্রেমিরা। সেখান থেকে ছোট কিন্তু কার্যকরী ইনিংস খেলেন জেজে স্মিট ও ডেভিড উইজি। দুজন মলে ৩২ রানের ম্যাচ উইনিমং পার্টনারশিপ গড়ে দলকে জয়ের দোড়গোড়ায় পৌছে দেন। ১০২ রানের মাথায় ১৬ রানের ইনিমংস খেলে মিচেল লিস্কের বলে আউট হন ডেভিড উইজি। স্কোর যখন সমতায় তখন ২ রান করে ব্র্যাজ হোয়েলের বলে আউট হন জ্যান ফ্রাইলিঙ্ক। শেষ পর্যন্ত ১৯ ওভার ১ বলে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় পায় নামিবিয়া। ২৩ বলে ৩২ রানেপ ইনিংস খেলে নট আউট থাকেন জেজে স্মিট। টি২০ বিশ্বকাপের প্রথম ম্য়াচেই জয় পাওয়ায় খুশি নামিবিয়া দল। আগামি দিনে আর কোনও চমক দেখাতে পারে কিনা নামিবিয়া এখন সেটাই দেখার অপেক্ষা।