এবার পরিচালনায় হাতেখড়ি! তৃণমূলের বিরুদ্ধে কথা বলাতে কি কাজ পাচ্ছেন না মানসী সিনহা?

Published : Apr 26, 2024, 09:18 AM IST
Actor Manashi Sinhas new film Eta amader galpo will release on 26th may

সংক্ষিপ্ত

শুক্রবার ২৬ শে এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে মানসী সিনহা পরিচালিত ছবি 'এটা আমাদের গল্প'। সম্প্রতি এই ছবি ও জীবনের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী।

শুক্রবার ২৬ শে এপ্রিল মুক্তি পাচ্ছে মানসী সিনহা পরিচালিত ছবি 'এটা আমাদের গল্প'। সম্প্রতি এই ছবি ও জীবনের নানা প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ খুললেন অভিনেত্রী।

বিএফজে-র শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরষ্কার পান মানসী সিনহার মা। মায়ের হাত ধরেই কি ওনার অভিনয় জগতে আসা এই প্রসঙ্গে অভিনেত্রী জানান,

"একদমই তাই। মা আমার গুরু। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর 'নিম অন্নপূর্ণা'র মুখ্য চরিত্রে যিনি অভিনয় করেন তিনিই আমার মা, মণিদীপা রায়। চরিত্রটির জন্য মা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর বিএফজেএ পুরস্কার পান। মা খ্যাতনামা মঞ্চাভিনেত্রী ছিলেন। অসম্ভব ভাল নাচ করতেন। ভীষণ ভাল আবৃত্তি করতেন। মণিদীপা রায় দুটি মাত্র চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন বুদ্ধদেব দাশগুপ্তর 'নিম অন্নপূর্ণা' এবং 'গৃহযুদ্ধ'। 'গৃহযুদ্ধ'তে মমতা শংকর অর্থাৎ মম মাসির মায়ের রোল করেন আমার মা। 'গৃহযুদ্ধ' থেকেও মা শ্রেষ্ঠ সহ অভিনেত্রীর বিএফজেএ পুরস্কার পেয়েছিলেন।"

স্বর্ণযুগের অভিনেত্রী শিখারাণী বাগের কাছে নাচ শিখেছেন অভিনেত্রী। তা নিয়ে মানসী জানান, " হ্যাঁ শিখামাসির শ্যামবাজারের শ্বশুরবাড়ির ওপরে আমরা থাকতাম। শিখামাসির নাচের স্কুল 'নৃত্যলোক' এ নাচ শিখতাম একদম শুরুতে। অদ্ভুত ব্যাপার আমার মা ভাল নৃত্যশিল্পী হওয়া সত্ত্বেও নাচে আমার হাতখড়ি শিখারানি বাগের কাছে।"

অভিনয়ে কীভাবে এলেন এই নিয়ে অভিনেত্রী জানান, " অভিনয় জগতে এসেছি শিশুবেলায়। আড়াই বছর বয়স আমার তখন। গণনাট্য সংঘের একটি নাটকে আমি মায়ের ছেলের রোল করি। আমার নাট্যগুরু 'সমীক্ষণ' নাট্যদলের পঙ্কজ মুন্সি। ওঁনার হাতেই আমি তৈরি। অভিনয়ের ফাঁকে কিছুদিন চাকরি করেছি, সুরেন্দ্রনাথ কলেজে টিচার্স ট্রেনিংয়ে বাংলা পড়াতাম। তখন হেড ছিলেন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়। আমি দশ বছর মার্কেটিং এ চাকরি করেছি। ম্যানুয়াল টাইপ রাইটার বিক্রি করতাম অফিসে গিয়ে গিয়ে। তাই এম এ আর পড়া হয়নি সুযোগ পেয়েও। মা কষ্ট পেয়েছিলেন কিন্ত কিছু করার ছিল না।"

ছবি পরিচালনা করার ইচ্ছেটা জাগল কীভাবে? এই প্রসঙ্গে মানসী জানান, "আমার মা আমার মাথায় ঢুকিয়েছিলেন ডিরেকশনের ভূত। আমি বলেছিলাম ,পারব না। মা বললেন "এবার ডিরেকশন দাও ঠিক পারবে।" অথচ দেখুন মা আমাকে পরিচালক রূপে দেখে যেতে পারলেন না। ২০২০ সালে করোনায় মা মারা যান। যখন কাজটা হল মা চলে গেলেন। এটাই আক্ষেপ! মাকে আজ বড্ড মিস করছি।"

কেমন হতে চলেছে এই ছবি? এই প্রশ্নের উত্তরে মানসী জানান,

" বয়স্কদের প্রেম মানেই সত্তরোর্ধ্ব কেন? পঞ্চাশ পেরলেই সমাজ প্রৌঢ় করে দেয়। তাঁদেরও তো জীবনে প্রেম আসতে পারে। ভরপুর বিনোদনের ছবি। সঙ্গে অনেকগুলো সত্যি সামনে আসবে। সেও সত্যিগুলো আমরা চাপা দিয়ে রাখি। 'এটা আমাদের গল্প' ছবির ট্যাগলাইন হল এই পৃথিবীতে প্রত্যেকটা একলা মানুষের জন্য কোথাও না কোথাও একটা ঘর আছে। ঘরটার দায়িত্ব সেই মানুষটাকে খুঁজে নেওয়ার। মানুষটার দায়িত্ব নয় ঘর খোঁজার। আমার মনে হয় এইটুকুই যথেষ্ট ছবির গল্প সম্পর্কে বলবার জন্য।"

প্রথম ছবি করতে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল? আপনার নামে টাকা তছরূপের অপবাদ দেওয়া হয়?

"আগের প্রযোজকের ফাইন্যান্সার আমার বিরুদ্ধে টাকা তছরূপের অভিযোগ আনেন। উনি নাকি ঐ প্রযোজককে টাকা না দিয়ে আমায় দিয়েছেন। এটা পুরোটাই মিথ্যে অভিযোগ। তিনি অটোগ্রাফের নাম করে আমার সই জাল করেন। নিজেকে প্রযোজক বলে দাবি করে এই অসভ্যতা করেন। আমার নামে মানহানি করেন। এই ছবিটা যাতে রিলিজ না করে সেই চেষ্টাও করেছিলেন। আমি এফ আই এর করেছিলাম। সেই ভদ্রলোককে বাঁকুড়া থেকে আজ পুলিশ গ্রেফতার করেছে।

পরে নতুন প্রযোজক আমার মতো নতুন পরিচালকের ছবি করতে চান। আগামী ২৬ এপ্রিল ধাগা প্রোডাকশন এর ব্যানারে শুভঙ্কর মিত্র ও সুভাষ বেরার প্রযোজনায় প্রেক্ষাগৃহে আসছে 'এটা আমাদের গল্প'। শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়,অপরাজিতা আঢ্য, সোহাগ সেন,খরাজ মুখোপাধ্যায়,দেবদূত ঘোষ,কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ আরো অনেকে আছেন।"

তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে মুখ খোলাতে আপনি কি কাজ কম পাচ্ছেন? এ বিষয়ে মানসী জানান,

কাজ আমি নিজেই এখন করছি না। কারণ এ বছর আমার ছেলে মেয়ের ক্লাস টেনের বোর্ড পরীক্ষা ছিল। তার ওপর আমার ছবি রিলিজ আছে। ইন্ডাস্ট্রির ভিতর আমার অনেক বন্ধুও আছেন। এবার ভাল কাজ এলে নিশ্চয়ই করব। তবে এটাও ঠিক আমাকে অনেকে ডাকব বলে ডাকছেন না। আমি তো সরকারের কিছু খারাপ লাগলে কতবার বলেছি। তারপর তো কত সিরিয়াল করে ফেললাম। তাহলে তো তারপরেই আমার কাজ চলে যেত। তাই না?

আপনার মনে হয় সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়ে আপনি এই সরকারের থেকে অভিনয়ের জন্য মহানায়ক পুরস্কার, বঙ্গবিভূষণ এসব পাবেন?

"আমি মনে করি আমি মহানায়ক পুরস্কার বা বঙ্গবিভূষণ পুরস্কারের যোগ্য নই। আমার থেকেও যারা জুনিয়র তাঁরা যখন পান তাঁরা নিশ্চয়ই যোগ্য। এ পুরস্কার আমার থেকে সিনিয়র অনেক বড় শিল্পী পাননি। তবে একটা কথা বলতে পারি, আমি যখন ওঁকে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দেখিনা সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমার খুব ভাল লাগে। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অদ্ভুত একটা ক্ষমতা আছে সবাইকে আপন করে নেওয়ার।

আমার জীবনেই একটা ঘটনা ঘটেছিল। তখন টেলি অ্যাকাডেমি সম্মান পুরস্কার সরকারের তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রী দেওয়া শুরু করেছিলেন। আমাকে অভিনেত্রী হিসেবে সম্মান দেন মাননীয়া। কিন্তু তারপরে একটি অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। তাতে আমার মন ভেঙে গেছে। দর্শকদের ভালবাসা চাই।

PREV
click me!

Recommended Stories

দীর্ঘ অসুস্থতায় শয্যাশীয়া, না ফেরার দেশে প্রবীণ অভিনেতা কল্যাণ চট্টোপাধ্যায়, শোক প্রকাশ একাধিক তারকার
টেলিভিশনের মেগা ধারাবাহিক থেকে বড় পর্দার সফল নায়িকা, বছরে কত টাকা উপার্জন করেন মিমি চক্রবর্তী?