সোমবার আচমকাই মাকে হারিয়েছেন আরও এক অভিনেত্রী সোনালী চৌধুরী। শোকের সেই রেশ কাটার আগেই টলিউডে ফের মাতৃবিয়োগের খবর। অভিরূপের থেকেই দেবশ্রীর মাতৃবিয়োগের খবর পান ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
চলে গেলেন দেবশ্রী রায়ের মা আরতি রায়। বয়স ৯২ ছুঁইছুঁই। এশিয়ানেট নিউজ বাংলাকে এ খবর জানিয়েছেন নৃত্যশিল্পী অভিরূপ সেনগুপ্ত। তাঁর কথায়, ‘‘দেবশ্রীদির সঙ্গে আমাদের আগামি শো। সেই বিষয়ে কথা বলতেই মঙ্গলবার সন্ধেয় ফোন করেছিলাম। দিদিকে পাইনি। ওঁর পরিবারের এক সদস্য জানালেন, গুরু নানক জন্মজয়ন্তীর সন্ধেয় চলে গেলেন মাসিমা।’’ দীর্ঘ দিন ধরেই বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। চলতি বছর ৯ অগস্ট, দেবশ্রীর জন্মদিনের দিন সকালে পড়ে গিয়ে কপাল ফেটে গিয়েছিল তাঁর। সেই সময় অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘বড়দির কাছে মা থাকেন। বাড়িতেই পড়ে গিয়ে কপাল ফাটিয়ে ফেলেছেন। অনেক রক্তপাত হয়েছে। মা ৯২ ছুঁইছুঁই। দুর্ঘটনার পরে বেশ কাহিল হয়ে পড়েছেন।’ এ বারের জন্মদিনে তাই মাকে নিজেই পায়েস রেঁধে খাইয়েছেন ছোট পর্দার ‘সর্বজয়া’। সোমবার আচমকাই মাকে হারিয়েছেন আরও এক অভিনেত্রী সোনালী চৌধুরী। শোকের সেই রেশ কাটার আগেই টলিউডে ফের মাতৃবিয়োগের খবর। অভিরূপের থেকেই দেবশ্রীর মাতৃবিয়োগের খবর পান ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। নৃত্যশিল্পীর কথায়, ‘‘দুঃসংবাদে শোকস্তব্ধ ঋতুদি।’’
অভিরূপ আরও জানিয়েছেন, দেবশ্রীর সাঁই নটরাজ স্কুলের অন্যতম কর্ণধার ছিলেন তাঁর মা। ২০১৪ পর্যন্ত তিনি নিজে দায়িত্ব নিয়ে প্রতিষ্ঠানের দেখভাল করতেন। প্রতি বছর প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অনুষ্ঠানে বোনঝি রানি মুখোপাধ্যায়ের উপস্থিতি বাঁধাধরা ছিল। অভিরূপ নিজেও এই প্রতিষ্ঠান থেকে নাচ শিখেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আজ অনেক স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে। তখনও মেট্রো হয়নি। মাসিমা আমাদের বিভিন্ন প্রোগ্রামে গাড়ি করে নিয়ে যেতেন। দেবশ্রীদি শুধুই নাচের দিকটা দেখতেন। বাদ বাকি সব সামলাতেন মাসিমা। দিদি বরাবর মা ঘেঁষা। মাসিমা চলে যাওয়ায় আরও একা হয়ে গেলেন।’’
জন্মদিনের দিন ছোট বেলার কথা বলতে গিয়ে দেবশ্রী জানিয়েছিলেন, ছোট থেকেই ঘরোয়া ভাবে পালিত হত তাঁর জন্মদিন। একেবারে ছোটবেলায় মা কপালে চন্দন এঁকে সাজিয়ে দিতেন। সঙ্গে নতুন জামা। গলায় ফুলের মালা। নতুন জামার গন্ধেই মন ভরে যেত। নিয়ম করে প্রতি বছর স্টুডিয়োয় নিয়ে গিয়ে ছোট মেয়ের ছবি তোলাতেন আরতি। একটু বড় হওয়ার পরে বাড়িতে খুব কাছের বন্ধু, আত্মীয়রা আসতেন। সবাই মিলে বসে খাওয়াদাওয়া হত। অভিনয়ের আগে নাচের জন্য ছোট থেকে বিখ্যাত ছিলেন রুমকি-ঝুমকি। আরতি তাঁর দুই মেয়েকে সেই সময় থেকেই নাচের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে যেতেন। তাঁর ইচ্ছেতেই অভিনয়ে আসেন দেবশ্রী। তরুণ মজুমদারের ছবিতে তাঁর হাতেখড়ি। অনেক বছর পর্যন্ত শ্যুটিং ফ্লোরে মেয়েকে আগলাতেন আরতি। এশিয়ানেট নিউজ বাংলা যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল দেবশ্রীর সঙ্গেও। শোকস্তব্ধ অভিনেত্রী এ দিন ফোনের থেকে দূরেই ছিলেন।
আরও পড়ুন-
৭ দিনের মধ্যে ফের নতুন সংক্রমণ শরীরে, এখনও সি প্যাপ সাপোর্টে রয়েছেন ঐন্দ্রিলা