এবার রূপঙ্কর বিতর্কে মুখ খুললেন তাঁর স্ত্রী, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে তুলে ধরলেন তাঁদের হঠাৎ বদলে যাওয়া দুর্বিষহ দিন রাত্রি কথা।
কবিতা লিখলেন গায়ক রূপঙ্করের স্ত্রী চৈতালী লাহিড়ি। শুক্রবার দিন সাংবাদিক বৈঠকে বিবৃতি পাঠ করে রূপঙ্কর ‘কেকে বিতর্ক’ নিয়ে নিজের মত ব্যাখ্যা করেন। শনিবার সকালে তাঁর স্ত্রী ফেসবুকে একটি স্বরচিত কবিতা পোস্ট করলেন। কবিতাটির মধ্যে দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন কিভাবে গায়ক কেকের মৃত্যুর পর রূপংকরের তাঁর উদ্দেশ্যে বানানো একটি লাইভ ভিডিও বাগচী দম্পতির জীবন কে এক নিমেষে কেমন বদলে দিয়েছে।
চৈতালী লিখলেন, ‘সোশ্যাল মিডিয়া তোমার দেওয়া আ্যড্রিনালিন রাশ/ ছোট্ট পরিবারের জীবনে নামিয়ে এনেছে ত্রাস/ দরকার একটা স্মার্টফোন আর মনে একরাশ ঘৃণা/ জীবনের যত না পাওয়ার যন্ত্রণা আর কিছু বাহানা/ তারপর একটা লম্বা ট্রিপ এমন নেশা কোনো/ মাদকেই হয় না/ উত্তেজনা উত্তেজনা—উফফ দাদা জীবনে কী পাবো না ভুলেছি সে ভাবনা।'
আরও পড়ুন- 'কেকে-র প্রতি ব্যক্তিগত রাগ নেই', গুছিয়ে বলতে না পারার জন্যই বিতর্ক- অবেশেষে বললেন রূপঙ্কর
আরও পড়ুন- হাতে ও কাঁধে ব্যাথা হচ্ছিল, আগের দিন রাত্রে ফোনে স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন কেকে
আরও পড়ুন- কেকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে তদন্তের দাবি জানালেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ
কবিতায় বারবার উঠে আসছে বাগচি-দম্পতির যন্ত্রণার কথা। কেমন করে তাঁরা জনতার তীব্র ক্ষোভের সম্মুখীন হচ্ছেন তাঁরা। মারমুখী জনতার আক্রোশ, সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁদের নামে হয়ে চলা কটু কথা বা প্রতিবাদ, ফোনে দেয়া খুনের হুমকি, প্রতি নিয়ত তাঁদের জীবন কে দুর্বিষহ করে তুলছে, শুধু তাঁরা দুজনই নন তাঁদের একমাত্র কিশোরী কন্যাও প্রবল মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাঁর চোখেও জল—এ সবই উঠে এসেচে কবিতায়। চৈতালী একজন মা হিসেবে খুবই অসহায় বোধ করছেন। মেয়েকে তিনি বোঝাতে পারছেন না এই ক্ষত সাময়িক একসময় নিশ্চই এই পরিস্থিতি তাঁরা কাটিয়ে উঠবেন।চৈতালী আরো লেখেন, "ধড়ফড়িয়ে বুকটা পোড়ে, বরটা বড়ই বোকা/দুনিয়াদারিতে নেহাৎ কাঁচা শিল্প যাপনে মগ্ন থাকা।/এমন কথা কি বলতে হয়, তুমি কি সমাজের হোতা?/ কে দিয়েছে মাথার দিব্যি? কেন নড়ল মাথার পোকা?"
সোমবার রাত থেকেই কেকে কে নিয়ে রূপঙ্করের করা লাইভ ভিডিও টি হওয়ার পর থেকেই জনতার তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দার মুখে পড়তে হয় গায়ক কে। রূপঙ্কর বিতর্কে এই প্রথম ব্যাখ্যা দিলেন তাঁর স্ত্রী স্বরচিত কবিতার মাধ্যমে। তিনি মানছেন, তাঁর স্বামী ‘বোকা’র মতো কথা বলেছেন। তাঁর বলেন , এই ‘বোকামি’ই রূপঙ্করকে নিজের জন্য না ভেবে অন্যের জন্য ভাবতে শিখিয়েছে। চৈতালি তাঁর লেখার মাধ্যমে জানিয়ে দিচ্ছেন, ফোনে আসা মৃত্যুর হুমকি, অশ্লীল মন্তব্যের মধ্যে দিয়ে দুর্বিষহ বিনিদ্র রাত্রি জাগছেন তাঁরা ।তিনি প্রশ্ন তুলেছেন সেই সব মানুষের উদ্দেশ্যে যে ‘মা’, ‘বোন’ তো সকলের ঘরেই আছে। যাঁরা তাঁকে এমন রুচিহীন মন্তব্য করছেন তাঁরা কি এক বারও তাঁদের মানসিক অবস্থার কথা ভাবছেন না?অন্য দিকে, শিল্পীজগৎ কেও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তিনি, তাঁর লেখায় সেই ক্ষোভ প্রকাশ পেয়েছে, তিনি লিখেছেন, ‘ভালোই হল চিনতে পেল বন্ধু এবং বাসা/ সময় চেনায় কোনটা সত্যি আর কোনটা মরীচিকা।’ তিনি অঙ্গীকার করেছেন এই বিভীষিকা ময় দুঃস্বপ্নের মধ্যে থেকে তিনি একজন দায়িত্ববান স্ত্রী ও মা হিসেবে তাঁর স্বামী ও সন্তান এর জন্য সব রকম মোকাবিলায় প্রস্তুত।