করোনা আতঙ্ক গ্রাস করছে এদেশের ক্রীড়া ক্ষেত্রকেও। ইতিমধ্যেই এশিয়া ও ইউরোপের একাধিক দেশে স্থগিত রাখা হয়েছে যে কোনএ ধরনের স্পোর্টিং ইভেন্ট। সংক্রমণ রুখতে এবার সেই পথে হাঁটল এদেশের কেন্দ্রীয় সরকারও। চিন্তাভাবনা ছিলই, এবার এদেশের একাধিক টুর্নামেন্ট হতে চলেছে দর্শকশূন্য স্টেডিয়ামে। যেই তালিকায় রয়েছে আই লিগও। টুর্নামেন্ট শেষ না হলেও, ইতিমধ্যেই ২০১৯-২০ মরসুমের আইলিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে মোহনবাগান। কিন্তু সবকটি দলেরই বাকি রয়েছে বেশ কয়েকটি ম্যাচ। যার মধ্যে রয়েছে দ্বিতীয় লিগের কলকাতা ডার্বি । চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ইষ্টবেঙ্গল ও মোহনবাগান ম্যাচ। কিন্তু করোনা আতঙ্কের জেরে আইলিগের ফিরতে ডার্বি হতে চলেছে দর্শকহীন স্টেডিয়ামে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের তরফে ক্রীড়ামন্ত্রকের কাছে একটি নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশিকায় সব খেলা আপাতত বাতিল করতে বলা হয়েছে। আর যে সমস্ত ক্ষেত্রে খেলা বাতিল করা সম্ভব নয়, সেসব ক্ষেত্রে সবরকমের জমায়েত উপেক্ষা করতে হবে। স্টেডিয়ামে দর্শকদের প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হবে না। এই নির্দেশিকা হাতে পাওয়া মাত্রই কেন্দ্রীয় ক্রীড়া মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানিয়ে দিয়েছেন, করোনার জন্য ভারতে সমস্তরকম আন্তর্জাতিক ক্রীড়া টুর্নামেন্ট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ঘরোয়া টুর্নামেন্টের ক্ষেত্রেও জারি করা হচ্ছে বিধিনিষেধ। ঘরোয়া টুর্নামেন্টের আয়োজন হতে পারে। তবে, সেক্ষেত্রে তা করতে হবে ফাঁকা স্টেডিয়ামে।
চার ম্যাচ বাকি থাকতেই আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে গিয়েছে মোহনবাগান। অপরদিকে গোটা মরসুম খারাপ গিয়েছে পড়শী ক্লাব ইষ্টবেঙ্গলের। হারতে হয়েছিল প্রথম লিগের ডার্বিতেও। তাই ফিরতি ডার্বিতে জয় দিয়ে সমর্থকদের কিছুটা মন রক্ষা করতে চাইছিলেন মারিও রিভেরার দলের ছেলেরা। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী আইলিগের ফিরতি ডার্বি হতে চলেছে সম্পূর্ণ দর্শকহীন স্টেডিয়ামে। ফলে ম্যাচ জিতলেও, গ্যালারি ভর্তি যুবভারতীকে সেসুযোগ দেওয়া থকে বঞ্চিত থাকতে হচ্ছে ইষ্টবেঙ্গল দলকে। অপরদিকে লিগ জয়ের বোনাস হিসেবে যুবভরতীর সমর্থকদের জোড়া ডার্বি জয়ের স্বাদ দিতে চেয়েছিল মোহনবাগানও। সেই আশাও আর পূরণ হচ্ছে না কিভু ভিকুনার দলের। যার ফলে হতাশ দুই দলের সমর্থকরা। কেন্দ্রের নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার পর সেইমতো প্রস্তুতিও শুরু করেছেন আয়োজকরা।
আরও পড়ুনঃকরোনায় আক্রান্ত জুভেন্টাসের ডিফেন্ডার ড্যাানিয়েল রুগানি, পর্যবেক্ষণে অন্যান্য প্লেয়াররা
কিন্তু দর্শকহীন স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলা নিয়ে শুরু হয়েছে ক্লাবের দ্বন্দ্ব। দর্শক শূন্য মাঠে ম্যচ খেলতে নারাজ ইষ্টবেঙ্গল দল। অপরদিকে পরিস্থিতি বিচার করে ফাঁকা স্টেডিয়ামে ম্যাচ খেলতে কোনও সমস্যা নেই মোহনবাগানের। এই বিষয়ে মোহনবাগান কর্তা সৃঞ্জয় বসু জানিয়েছেন, 'আমরা ইতিমধ্যেই আই লিগ জিতে গিয়েছি। এই পরিস্থিতিতে দর্শকের অনুপস্থিতিতে আমাদের মোটিভেশনের সমস্যা হতেই পারে। কিন্তু, জরুরি পরিস্থিতিতে সবাইকেই মানিয়ে নিতে হয়। রবিবারের ডার্বি হয়তো দর্শকহীন স্টেডিয়ামেই হবে।” লাল-হলুদ কর্তা দেবব্রত সরকার আবার প্রথমে সাফ জানিয়ে দেন, দর্শকহীন স্টেডিয়ামে খেলবেন না তাঁরা। তাঁদের দাবি, আগের ডার্বি যেভাবে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবারেও সেভাবে মাসখানেক পিছিয়ে দেওয়া হোক। সমস্যা মেটাতে এবার আসরে নেমেছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সবপক্ষকে নিয়ে নবান্নে একটি বৈঠক ডেকেছেন তিনি। তলব করা হয়েছে সিএবি প্রেসিডেন্টও। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করার পরই ইডেনে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ এবং কলকাতা ডার্বির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হয়ে যাবে।