Published : Jun 18, 2021, 02:15 PM ISTUpdated : Jun 29, 2021, 11:14 PM IST
কোনও কিছুই খুব সহজে পাওয়া যায় না। বিশেষ করে সফলতা। এর একমাত্র পথ সংগ্রাম। সংগ্রাম মানুষকে অনেক দূর নিয়ে যায়। এর প্রমান টলিউড জগতের বহু রয়েছে। এরই মধ্যে একজন হলেন জিতেন্দ্র মাদনানি। যাঁকে গোটা টলিউড জিৎ নামেই চেনে। জন্ম সূত্রে বাঙালি না হলেও, বহু বাঙালির মনে পাকাপাকিভাবে জায়গা করে নিয়েছেন তিনি। কমেডি, রোম্যান্টিক কিংবা অ্যাকশন, সব ধরনের চরিত্রে অভিনয় করে, বার বারই দর্শকদের ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। প্রকৃত অর্থে সুপারস্টার তকমাটা তাঁকেই মানায়। তবে জিতেন্দ্র মাদনানি থেকে সুপারস্টার জিৎ হয়ে ওঠার পথটা মোটেও সহজ ছিল না। টিভি সিরিয়াল, তেলেগু ছোট বাজেটের সিনেমা, হিন্দি মিউজিক ভিডিও এরকম আরও অনেক চরাই উতরাই-এর মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে তাঁকে।
জিৎ সেন্ট জসেফ মেরি স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা গ্রহন করেন। এরপর তিনি ন্যাশানাল হাই স্কুল থেকে উচ্চশিক্ষা সমাপ্ত করেন। পারিবারিক সমস্যার কারণে, কলেজে ভর্তি হয়েও মাঝপথেই লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় এবং বাবার সঙ্গে কাপড়ের ব্যবসার কাজে যোগ দেন।
210
ছোটবেলা থেকেই তাঁর ইছে ছিল তিনি বলিউডের অভিনেতা হবেন। তাই কাজের পাশাপাশি তিনি মডেলিং এবং আভিনয়ের ক্লাস নিয়ে থাকতেন। ১৯৯৪ সালে ওই অভিনয় ক্লাস থেকেই একজন টিভি সিরিয়াল নির্মাতার নজরে পড়েন তিনি। এরপর বিষবৃক্ষ ও জন্মভূমি নামের দুটি সিরিয়ালে অভিনয় করেন। পরবর্তীতে জিৎ আরও সিরিয়ালের সুযোগ পেলেও তা আর করেননি। কার তাঁর স্বপ্ন ছিল বলিউডে যাওয়ার।
310
এরপর ১৯৯৫ সালে তিনি মুম্বই চলে যান এবং সেখানে গিয়ে অনেক জায়গায় তিনি অডিশন দিতে থাকেন, কিন্তু তাতে তাঁর কোনও লাভ হয়নি।
410
টানা ২ বছর চেষ্টা করার পর অবশেষে ১৯৯৭ সালে একটি হিন্দি মিউজিক অ্যালবামে সুযোগ পেয়েছিলেন। তাঁর নাম ছিল ‘বেবাফা তেরা মাসুম চেহেরা’। এরপর ওই বছরেই তিনি আরেকটি মিউজিক অ্যালবামে সুযোগ পান। তবে এতে তাঁর বিশেষ সুবিধা হল না।
510
এরপর তিনি বেশ কয়েকটি হিন্দি ছবির জন্য অডিশন দেন। কিন্তু কোন ভাবেই কিছু হয়নি। বার বারই নিরাশ হতে হয়েছে তাঁকে।
610
এর পরবর্তী সময় তিনি বলিউড ছেড়ে দক্ষিণী ইনডাসটি আসেন তার ভাগ্য পরীক্ষা করতে। তেলেগু ও তামিল বেশ কিছু সিনেমার জন্য অডিশন দেন, এবং এবারেও তিনি ফেল হন। কেউ তাকে নেয়নি।
710
তবে ২০০১ সালে জিৎ একটি তেলেগু সিনেমাতে সুযোগ পেয়েছিলেন। সিনেমাটির নাম ছিল ‘চান্দু’। খুবই কম বাজেটের ওই সিনেমাটি ফ্লপ হয়, এবং বক্স-অফিসে মুখথুবড়ে পড়ে। ওই সময় মানসিক ভাবে তিনি খুবই ভেঁগে পড়েছিলেন। তবে তিনি হাল ছাড়েননি।
810
এর পর ২০০১ সালেই জিৎ আবার নিজের শহর কলকাতায় ফিরে আসেন। এবার তিনি বাংলা সিনেমার জন্য অডিশন দিতে থাকেন। ওই সময় পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী তার পরবর্তী সিনেমা সাথীর জন্য একটি নতুন মুখ খুঁজছিলেন। শোনা যায় হরনাথ চক্রবর্তী প্রথমে প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়কে রোলটি অফার করেন। তবে প্রসেনজিত কলেজ ছাত্রের ভূমিকায় অভিনয় করবেন না বলে না করে দেন।
910
সেই সময় পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী নতুন মুখ হিসেবে জিৎ-কে বেছে নেন। এরপর ২০০২ সালে সাথী মুক্তি পায়। এই সিনেমাটি বক্স-অফিসে ব্যাপক ভাবে সাড়া ফেলে। বহু দিন ধরে সিনেমা হলগুলি একেবারে পূর্ণ ছিল। এই ছবিতে জিৎ-এর অভিনয় সমস্ত দর্শকদের মন জয় করে নেয়। এছাড়াও এই ছবির একটি গান ‘ও বন্ধু তুমি শুনতে কি পাও’ খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করে।
1010
এরপর সঙ্গী, নাটেরগুরু থেকে শুরু করে দুই পৃথিবী, বস, সাত পাকে বাঁধার মতো একের পর এক ছবি দর্শকদের উপহার দিয়েছেন। প্রধানত সাথী এবং তার পর নাটেরগুরু সিনেমাটির পর আর তাঁকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।