কথায় কথায় চোখে জল, বন্ধু মহলে হাসির খোরাক, কান্নার উপকারিতাও কম নয়, জানেন কি
অনেকেই আছেন যাদের কথায় কথায় চোখ থেকে জল বেড়িয়ে আসে। অল্পতেই নাক ও ঠোঁট ফুলে যায় মন ভারী হয়ে যায়। সেই মুহূর্তেই কান্নায় ভেঙে পড়েন। এই অভ্যাসের ফলে পরিচিত লোক বা বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে তিরস্কার-এর শিকার হতে হয়।
এর পাশাপাশি নামের সঙ্গে যুক্ত হয় ছিঁচকাঁদুনীর তকমা। আপনিও যদি অল্পতেই আবেগ প্রবন হয়ে থাকেন তাহলে চিন্তা করবেন না। চিকিৎসকদের মতে কান্না মন এবং শরীর দুইয়ের জন্যই খুবই উপকারী।
তাই এখন থেকে কান্না পেলে চেপে রাখবেন না, বরং কেঁদে নেওয়াই ভালো। এতে মনের পাশাপাশি শরীরও ভালো থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক কান্নার ফলে আমাদের শরীর এবং মনের কী কী উপকার হয়।
সমীক্ষায় জানা গেছে কাঁদলে অতিরিক্ত ‘এটিসিএইচ’ হরমোন নির্গত হয়। যার ফলে মনের ভিতরের চাপ অনেকাংশে কমে যায়। এর পাশাপাশি কান্নার ফলে লিউসিন এনকেফালিন নামক উপাদান নিঃসৃত হয়। এটি শরীরের ব্যথা কমায় এবং মনকেও ভালো রাখে।
গবেষণায় দেখা গেছে কান্নার ফলে আমাদের শরীর থেকে একাধিক হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোনগুলি শরীরকে শান্ত করতে সাহায্য করে। এতে তাড়াতাড়ি এবং খুব ভালো ঘুম হয়।
চোখের জলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান থাকে। সারাদিনে পথে-ঘাটে চলাচলের ফলে অনেক ধুলো-বালি চোখের ভিতর জমা হয়। এগুলো থেকে পরবর্তীকালে নানান ধরনের জীবাণু চোখে বাসা বাঁধতে পারে। কিন্তু কান্নার সময় চোখ থেকে যে জল নির্গত হয়, তা এই ধরনের জীবাণুকে খুব সহজেই ধ্বংস করতে পারে।
চোখের শুষ্কতা দূর করতেও চোখের জল খুবই উপকারী। কান্নার সময় চোখ থেকে যে জল বের হয় তা চোখের মণি এবং পাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়। যার ফলে চোখ পরিষ্কার থাকে এবং দৃষ্টিও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।
মনোবিদদের মতে যারা কাঁদতে পারেন তাঁদের বেশ কিছু সুবিধা আছে। দুঃখ বা কষ্ট পেলে খুব সহজেই কেঁদে ফেলতে পাড়লে দুঃখ দীর্ঘমেয়াদি হয় না। যার ফলে তাঁরা খুব সহজেই সেই কষ্টের থেকে নিজেকে বের করে আনতে পারেন এবং সামনের দিকে এগিয়ে চলতে পারেন।
অন্যদিকে না কেঁদে দুঃখ চেপে রাখলে শারীরিক সমস্যা দেখা দেয়। স্নায়ুতে চাপ বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রেসারও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সেই সঙ্গে দেখা দেয় মানসিক স্ট্রেস। তাই কান্না চেপে না রেখে দুঃখ কষ্ট প্রকাশ করে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।