ঋতুস্রাবের দিনগুলি কঠিন, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জৈব প্যাড তৈরি করে মহিলাদের ত্রাতা এক তরুণ

মহিলাদের ঋতুস্রাবের দিনগুলি সহজ করতেই জৈব প্যাড তৈরি পরিকল্পনা করেছিলেন সোহন পাপ্পু। ক্লাস নাইন থেকেই বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন তিনি। 

Asianet News Bangla | Published : Aug 10, 2021 3:58 PM IST

লক্ষ্য একটাই- ভারতীয় মহিলাদের পাশে দাঁড়ানো। বিশেষত ঋতুস্রাবের কঠিন দিনগুলিতেও। আর সেই লক্ষ্য নিয়েই পথ চলা শুরু করেছিল তরুণতুর্কী সোহন পাপ্পু। কিন্তু এখন সেই তরুণ অন্ধ্র প্রদেশের  মহিলা বিশেষত আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের কাছে ত্রাতা। সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি মহিলাদের জন্য জৈব আর সহজে নষ্ট করে দেওয়া যায় এমন প্যাড তৈরি করছেন। পাশাপাশি ঋতুস্রাবের দিনগুলিতে যে পরিচ্ছন্ন থাকতে হয় সেই নিয়েও সচেতন করার কাজও জোরকদমে চালিয়ে যাচ্ছেন  স্থানীয় মহিলাদের নিয়ে। 

ভারতের আসল পাসপোর্ট নিয়ে পাকিস্তানে গিয়ে নিখোঁজ, সেই জঙ্গি নিহত এনকাউন্টারে

সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন সোমন পাপ্পু। সেখানে তিনি বলেছেন ভারতের ৩৩৬ মিলিয়ন মহিলার মধ্যে মাত্র ৩৬ শতাংশ মহিলাই স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করে। তাই বাকি মহিলাদের বিশেষত আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের কাছে ঋতুস্রাবের দিনগুলি কঠিন চ্যালেঞ্জের। যার প্রভাব শুরুমাত্র সংক্রমণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না। মেয়েটির মনেও প্রভাব পড়ে। তিনি আরও বলেছেন, ন্যাপকিনের প্রাপ্যতা কম থাকা আর ঋতুস্রাব নিয়ে সঠিক সচেতনতা না থাকার জন্য প্রায় প্রতি বছরই ২৩ মিলিয়ন কিশোরী স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়। সেই সমস্ত মহিলাদের পাশে দাঁড়াতেই তাঁর এই উদ্যোগ বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

গর্বের স্বাধীনতা, ১৫ অগাস্টের আগেই পাকিস্তানে গা ঘেঁসে উড়েছে ১০০ ফুট লম্বা ভারতের তেরঙ্গা
সোহন আরও জানিয়েছেন ক্লাস নাইনে পড়ার সময় থেকেই এই বিষয়টি তাঁকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। সেই কারণে স্কুলে আর অন্যান্য স্থানে মহিলাদের স্বাস্থ্যবিধি প্রচারের কাজ তিনি শুরু করেছিলেন। সেই কারণেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাও তৈরি করেছিলেন। প্রথম দিকে তাঁর সংস্থা মূলত নির্মাণ শ্রমিক আর প্রান্তিক মানুষদের জন্যই কাজ করত। খাবার প্যাকেট সরবরাহ করার পাশাপাশি ঋতুস্রাব নিয়ে সচেতনতা গড়ে তুলতে একাধিক ওয়ার্কশপও করেছিলেন তিনি। 

বিবাহিত মহিলাকে প্রেমপত্র ছুঁড়ে দেবেন না, রায় দিতে গিয়ে কেন এমন বলল বোম্বে হাইকোর্ট

সোহন পাপ্পু আরও জানিয়েছিলেন প্রথম দিকে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের তৈরি স্যানিটারি প্যাডগুলি তিনি সরবরাহ করতেন। কিন্তু সেই সময়ই বুঝতে পারেন ওই প্যাডগুলি স্বাস্থ্যের পক্ষে ভীষণভাবে ক্ষতিকর। কারণ প্ল্যাস্টিক আর রাসায়নিকের মাত্রাধিক্য ব্যবহার রয়েছে সেখানে। তাই জৈব প্যাড তৈরির সিন্ধান্ত নেন তিনি। 

বায়োডিগ্রেডেবেল প্যাড তৈরির জন্য তিনি তাঁর সংস্থার সদস্যরা রীতিমত পড়াশুনা আর গবেষণা করেছে বলেও জানিয়েছেন সোন। তিনি বলেন এজাতীয় প্যাড তৈরির সবথেকে ভালো উপাদান হল বাঁশ, কলার ফাইবার আর কর্নস্টার্চ প্ল্যাস্টিক। তাঁরা মূলত তিনটি স্তরের প্যাড তৈরি করেন। প্রথম স্তরে থাকে কলার ফাইরাল। দ্বিতীয় স্তরে বাঁশের ফাইবার আর তৃতীয় স্তরে থাকে কর্নস্টার্ট প্ল্যাস্টিক। এজাতীয় প্যাড ব্যবহার করে ফেলে দেওয়ার পর মাত্র ৬-৭ মাসের মধ্যেই নষ্ট হয়ে যায়। 


এজাতীয় প্যাড তৈরিতে খরচ হয় ১৬-১৮ টাকা। তাঁর সংস্থা সুরক্ষা প্রকল্পের মাধ্যমে নিত্যদিন ৩.৫ লক্ষ প্যাড সরবরাহ করে। তিনি আরও বলেছেন তাঁরা দরিদ্র মহিলাদের জন্য এই প্যাড তৈরি করেন। কিন্তু চাইলে যেকেউ এটি কিনতেও পারেন। আগামী দিনে মহারাষ্ট্রসহ বেশ কয়েকটি রাজ্যে পিছিয়ে পড়া মহিলাদের পাশে দাঁড়াতেই ইচ্ছুক বলে জানিয়েছেন সোহন। 

Share this article
click me!