সোম থেকে শনি নাকেমুখে গুঁজে ছুটতে হয় অফিস। তাই দিবানিদ্রার কোনও সুযোগই নেই। এই পরিস্থিতিতে রবিবার যা-একটু সুযোগ পাওয়া যায়, তা-ও মাঠে মারা যায় নানা কারণে। হয় সারাদিন ধরে পাড়ায় মাইক বাজে। নয় তো কোথাও যাওয়ার থাকে। আর নয় তো বাড়িতেই থাকে হাজার-একটা কাজ।
তাই লকডাউনের বাজারে মনের সুখে দিবানিদ্রা দিয়ে নিন। হ্য়াঁ, সিরিয়াসলি বলছি। দিবানিদ্রা কিন্তু মোটেও খারাপ জিনিস নয়। অন্তত গবেষণা তাই বলছে। বিশ্বের কিছু দেশে তো শোনা যায় অফিসে বসেই লাঞ্চের পর ছোট্ট একটা ন্য়াপ নিয়ে নেওয়ার বন্দোবস্ত থাকে। কারণ, কর্তৃপক্ষ মনে করে, ওই ছোট্ট দিবানিদ্রা আপনার কাজের মান তথা গতি তথা উৎপাদনশীলতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। আপনার মনযোগও বাড়বে। তাই দিবানিদ্রা সেখানে এক্কেবারে লিগাল ব্য়াপার।
তা যাই হোক, আপনি চাইলে এই লকডাউনের সুযোগ নিয়ে এই ক-দিন দিবানিদ্রায় যেতেই পারেন। কোনও ক্ষতি নেই। বাড়ির কেউ যদি কিছু বলতে আসে তাহলে সোজা বলে দেবেন, "দিবানিদ্রার অনেক উপকারিতা আছে হে, আগে জানো সে কথা, তারপর বলতে আসবে।" সোজা শুনিয়ে দেবেন এক গবেষণার কথা। সুইজারল্য়ান্ডে টানা ৫ বছর ধরে চলেছিল এক গবেষণা। সেখানে ৩৪৬২ জনের ওপর সমীক্ষা হয়েছিল। প্রত্য়েকেরই বয়স আপনার মতো, অর্থাৎ ৩৫ থেকে ৭৫-এর মধ্য়ে। সেই গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, যাঁরা সপ্তাহে একদিন পাওয়ার ন্য়াপ নেন, তাঁদের হার্টের সমস্য়া অন্য়দের থেকে অনেক কম। শুধু তাই নয়, অন্য়দের থেকে ৪৮ শতাংশ বেশি সুস্থ থাকেন তাঁরা। হার্ট অ্য়াটাকই বলুন আর হার্ট ফেলিওরই বলুন, অন্য়দের থেকে তাঁদের সেই সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। এমনকি, এই ঘুমের সৌজন্য়েই বাড়ে আপনার গ্ল্য়ামার। যে কারণে কথায় আছে-- বিউটি স্লিপ।
এখন প্রশ্ন হল, এই ঘুম কতক্ষণের জন্য় হলে ভালো। উত্তরে বলি, আধঘণ্টা খুব ভালো সময়। তবে ছুটির দিনগুলোতে তা একটু বেশি হলে যে মহাভারত অশুদ্ধ হবে তা নয়। তবে একটা কথা মনে রাখা দরকার। যাঁদের গ্য়াস-অম্বল বা বদহজমের সমস্য়া আছে, তাঁরা কিন্তু খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ঘুমোতে যাবেন না। খাওয়ার অন্তত দু-ঘণ্টা বাদে ঘুমোতে যান। আর যদি অতক্ষণ অপেক্ষা করতে না-চান, তাহলে একটু উঁচু বালিশ নিয়ে শুয়ে পড়ুন। যাতে করে মাথাটা একটু উঁচু থাকে। নইলে কিন্তু রিফ্লাক্স অ্য়াসিডিটির সমস্য়া হতে পারে।