১০ বছরের ছেলের স্বীকারোক্তিকে উদ্ঘাটিত বাবার হত্যা রহস্য, মর্মান্তিক ঘটনা বেঙ্গালুরুতে

সকলে জানতেন মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে (Epileptic Attack) মৃত্যু হয়েছে। কর্নাটকের (Karnataka) বেঙ্গালুরুতে (Bengaluru) বাবার স্মরণসভায় ছেলের স্বীকারোক্তিই ধরিয়ে দিল খুনিদের। 
 

Web Desk - ANB | Published : Jan 16, 2022 7:27 PM IST

মর্মান্তিক ঘটনা বললেও কম বলা হয়। বাবার স্মরণসভায় ১০ বছরের কিশোরের চমকপ্রদ স্বীকারোক্তি। আর তার ফলেই উদ্ঘাটিত হল তার বাবার হত্যা রহস্যের। প্রাথমিকভাবে, অবশ্য সকলেই মনে করেছিল ওই ব্যক্তির মৃত্যু প্রাকৃতিকভাবেই হয়েছে। তবে, তার কিশোর ছেলের স্বীকারোক্তিই ধরিয়ে দিল তার বাবার খুনিদের। কর্নাটকের (Karnataka) বেঙ্গালুরু (Bengaluru) শহরের ঘটনা। 

দিন কয়েক আগে এন রাঘবেন্দ্রকে, বেঙ্গালুরুর উপকণ্ঠে কারেনহাল্লিতে (Karenahalli) তাঁর বাড়িতেই মৃত অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। রাঘবেন্দ্রের স্ত্রী, শৈলজা ভোর ২ টো নাগাদ রাঘবেন্দ্রর ভাই শেখর'কে ফোন করে তাঁর স্বামীর মৃত্যু সংবাদ দিয়েছিলেন। তিনি দাবি করেছিলেন, মৃগীরোগে আক্রান্ত হয়ে (Epileptic Attack) পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পেয়ে রাঘবেন্দ্রর মৃত্যু হয়েছে। ওই রাতে তাঁকে নিকটবর্তী এক হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। ডাক্তাররা জানিয়েছিলেন হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে। দেহ সৎকারও করা হয়ে গিয়েছিল। কারোর মনে এই মৃত্যু নিয়ে কোনও সন্দেহও ছিল না। কিন্তু, পরিস্থিতি ১৮০ ডিগ্রি বদলে যায়, রাঘবেন্দ্রর স্মরণসভার দিন। 

জানা গিয়েছে, ওই স্মরণসভায় রাঘবেন্দ্রর ১০ বছর বয়সী কিশোর ছেলে, তাঁর ঠাকুর্দা নানজুন্দাপ্পার সঙ্গে গল্প করছিল। কথায় কথায় সে বলে ফেলে, বাবা মারা যাওয়ার রাতে বাড়িতে আরও এত পুরুষ উপস্থিত ছিল। সেই কথা শুনেই নানজুন্দাপ্পার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছিল। তিনি নাতির কাছে ঘটনার বিশদ বিবরণ জানতে চান। ছোট্ট ছেলেটি জানায়, মাঝরাতে কিছু আপত্তিকর শব্দে তাঁর ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। চোখ খুলে সে দেখেছিল, তার বাবাকে, তার মা শৈলজা এবং তার দিদা লক্ষ্মীদেবমা বিছানায় চেপে ধরে আছে। আর, আরেকজন পুরুষ তাঁর মাথায় একটি রুটি বেলার কাঠের বেলনা দিয়ে আঘাত করছে।

স্বাভাবিকভাবেই সে তাদের জিজ্ঞেস করেছিল, তারা কেন তার বাবাকে মারছে? এরপর ওই অপরিচিত পুরুষটি তাকেও আঘাত করে। সেইসঙ্গে তাকে শাসানি দেয়, মুখ বন্ধ না রাখলে তাকেও হত্যা করা হবে। এতেই ভয় পেয়ে ওই কিশোর বিছানায় ফিরে গিয়েছিল। বাবার স্মরণসভার আগে পর্যন্ত ওই বিষয়ে কাউকে কিছু বলেনি। এরপর রাঘবেন্দ্রর ভাই, শেখর এই বিষয়ে পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে প্রথমে শৈলজা ও লক্ষ্মীদেবমা'কে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় আসল ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, তদন্তে তারা জানতে পেরেছে ওই অপরিচিত পুরুষ ছিল হনুমন্ত নামে এক ব্যক্তি, শৈলজার সহকর্মী। তার সঙ্গে শৈলজার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সন্দেহ হওয়ায় এই নিয়ে শৈলজাকে একাধিকবার প্রশ্নও করেছিলেন রাঘবেন্দ্র। তারপরই, রাঘবেন্দ্রকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আর এই বিষয়ে শৈলজা ও হনুমন্তকে সাহায্য করেছিল শৈলজার মা, লক্ষ্মীদেবমা। 
 

Share this article
click me!