১০ বছরের শিশুকন্যার যৌন হেনস্থার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হলেন ১০২ বছরের এক ব্যক্তি। তাকে কী সাজা দিল তিরুভাল্লুর মহিলা আদালত (Tiruvallur Mahila Court)?
বয়স তার ১০২ বছর। প্রধান শিক্ষক হিসাবে অবসর নিয়েছিল। আছে, পাঁচ মেয়ে এবং দুই ছেলে। সম্প্রতি এই ব্যক্তিকেই ১৫ বছরের কারাদণ্ডের সাজায় দণ্ডিত করল তিরুভাল্লুর মহিলা আদালত (Tiruvallur Mahila Court)। তার অপরাধ, ২০১৮ সালে, যখন তার বয়স ছিল ৯৯ বছর, সেই সময় এক পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীকে সে যৌন নির্যাতন করেছিল। শতায়ু এক ব্যক্তির যৌন নির্যাতনের জন্য ১৫ বছরের জেল হচ্ছে, এমন ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। তাই, এই ঘটনা সকলকেই চমকে দিয়েছে।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটির সূত্রপাত ২০১৮ সালের জুলাই মাসে। আসামির নাম কে পরশুরামণ (K Parasuraman)। তামিলনাড়ুর সেনিরকুপ্পমে (Senneerkuppam) তার বাড়ি লাগোয় বেশ কিছুটা জমি ছিল। সেখানে সে পাঁচটি বাড়ি তৈরি করে ভাড়া দিয়েছিল। এক তরুণ দম্পতি পরশুরামণের পাশের বাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল। তাদের এক ১০ বছরের মেয়ে ছিল। ২০১৮ সালের ৬ জুলাই তার বাবা-মা বাড়ি ফিরে আসলে, শিশুটি জানিয়েছিল, তার খুব পেটে ব্যথা করছে। স্বভাবতই বাবা-মা তাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, সে স্কুলে কিছু উল্টোপাল্টা খেয়েছে কিনা। এর জবাবেই মেয়েটি জানিয়েছিল, পাশের বাড়ির বৃদ্ধ তাকে যৌন নির্যাতন করেছে।
আরও পড়ুন - আইআইটি-ম্যাড্রাসে অ্যানথ্রাক্স আতঙ্ক - মৃত ৪ হরিণ, মহামারির আশঙ্কা
আরও পড়ুন - ৫ বছরের শিশুর ধর্ষক ও হত্যাকারী, সাজা ঘোষণা হতেই বিচারককে চটি ছুড়ে মারল আসামী
আরও পড়ুন - স্কুলের মধ্যে ছাত্রীকে জড়িয়ে ধরে চুমু প্রধানশিক্ষকের, ভিডিও ভাইরাল হতে অভিযোগ দায়ের
এরপর, শিশুটির বাবার সঙ্গে পরশুরামণের এই বিষয়ে তর্কতর্কি শুরু হয়েছিল। তিনি এই বিষয়ে পুলিশে অভিযোগ জানান। তিরুভাল্লুর থানার (Tiruvallur Police Station) সাব-ইন্সপেক্টর লাথা এই মামলার তদন্তভার নিয়েছিলেন। সংবাদ সংস্থা আইএএনএসকে তিনি বলেছেন, বাবা-মায়ের কাছ থেকে অভিযোগ পাওয়ার পর, তাঁরা পরশুরামনকে বাড়ি থেকে থানায় তুলে নিয়ে এসেছিলেন। কড়া জিজ্ঞাসাবাদের মুখে সে তার অপরাধ স্বীকার করেছিল। এরপর, অনুপ্রবেশমূলক যৌন নির্যাতনের (Penetrative Sexual Assault) অভিযোগে পরশুরামণকে গ্রেফতার করা হয়েছিল এবং তাকে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে (Judicial Custody) পাঠানো হয়েছিল।
এরপর প্রায় সাড়ে তিন বছর পরে এই মামলার শুনানি চলেছে। ৯৯ থেকে বয়স বেড়ে ১০২ হয়েছে পরশুরামণের। এর মধ্যে সে চেন্নাইয়ের (Chennai) পুজল কেন্দ্রীয় কারাগারে কারাগারে (Puzhal Central Prison) বন্দী ছিল। বিচার শেষে তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে এবং তাকে ১৫ বছরের জেল এবং ৪৫,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সাজা হয়েছে। ১৫ বছরের কারাদণ্ডের মধ্যে ১০ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং বাকি ৫ বছর সাধারণ কারাদণ্ড।
রাজ্যে সম্প্রতি এক সপ্তাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তিনটি যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। নাগেরকৈলে (Nagercoil) এক কলেজের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ আনা হয়েছে। সেইসঙ্গে, তিরুভান্নামালাই (Tiruvannamalai) এবং মাদুরাইয়ের (Madurai) দুই স্কুল শিক্ষককেও, যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা বা পকসো (POCSO) আইনের ধারায় গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার মধ্য়েই এই শতায়ু প্রাক্তন স্কুল শিক্ষকের কুকীর্তির আশ্চর্যজনক কাহিনি সামনে এল।