বাবার মৃত্যুর বিচার চেয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে আবেদন করল অসমের কাছাড় জেলার বাসিন্দা রিজওয়ান শহিদ লস্কর।
তার বয়স মাত্র ৪ বছর। আধো আধো কথাও এখনও কাটেনি। কিন্তু, ছেলেবেলাতেই খুব কঠিন একটা পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তাকে। যে পরিস্থিতি তাকে অনেকটা বড় করে দিয়েছে। এখন অনেকটাই পরিপক্ক সে। বাবাতে হারানোর কষ্টটা হাড়ে হাড়ে বোঝে। তাই বাবার মৃত্যুর বিচার চেয়ে এবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে আবেদন করল অসমের কাছাড় জেলার বাসিন্দা ৪ বছরের রিজওয়ান শহিদ লস্কর।
টুইটারে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে রিজওয়ান। ৪৫ সেকেন্ডের সেই ভিডিওতে বাবা সইদুল আলম লস্করের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচারের জন্য আবেদন করেছে সে। ভিডিওতে 'বিচার চাই' লেখা একটি প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গিয়েছে তাকে। এরপর ভিডিওতে সে জানায়, "আমার নাম রিজওয়ান শহিদ লস্কর। আমার যখন ৩ মাস বয়স, তখন ২০১৬ সালের ২৬ ডিসেম্বর ১১ জন দুষ্কৃতী আমার বাবাকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছিল। কেস নম্বর হল ১২১/২০১৭। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমার অনুরোধ দয়া করে বিষয়টি দেখুন ও আমাদের সুবিচার দিন। অনেক ধন্যবাদ।"
সূত্রের খবর, রিজওয়ানের বাবা একজন কনট্রাক্টর ছিলেন। অফিসের কাছেই বালি মাফিয়ারা তাঁকে হত্যা করেছিল বলে অভিযোগ। স্বামীর মৃত্যুর পর কাছাড় থানায় ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে ছিলেন জান্নাতুল ফিরদৌস লস্কর। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করেছিল পুলিশ।
আরও পড়ুন- দিল্লির সিবিআই অফিসে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, ঘটনাস্থলে ছুটে গেল দমকলের ৮টি ইঞ্জিন
এই ঘটনা প্রসঙ্গে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জান্নাতুল বলেছিলেন, "লোহার রড ও অন্য হাতিয়ার দিয়ে আমার স্বামীকে হত্যা করা হয়েছিল। অভিযোগ জানানরো পর পুলিশ ৯ জনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত ২ জন গ্রেফতার হয়নি। তাদের মাঝে মধ্যেই আমার বাড়ির কাছে ঘুরতে দেখি। আমরা নিরাপদে নেই। সেই কারণেই আমরা বিচার চাই।"
রিজওয়ানের মামা মহিদুল হক লস্কর জানিয়েছেন, ওই টুইটার অ্যাকাউন্টটি খুলে দেওয়ার জন্য রিজওয়ানকে সাহায্য করেছিলেন তিনি। যাতে তার মাধ্যমে ভিডিও আপলোড করে বিচারের জন্য সে আবেদন করতে পারে। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে পুলিশ যে ৯জনকে গ্রেফতার করেছিল তারা সবাই এখন জামিনে মুক্ত। তাই রীতিমতো ভয়ে ভয়ে দিন কাটছে রিজওয়ানদের। আর সেই কারণেই বিচার চেয়ে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন জানিয়েছে সে।