নির্বাচনের উত্তেজনার মধ্য়েই উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) কানপুরের (Kanpur) নারওয়ালে (Narwal) ঘটল নারকীয় হত্যাকাণ্ড। চোখে পেরেক, গালে পোড়া দাগ এবং নিতম্ব ও মাথায় জখম নিয়ে মিলল এক নিখোঁজ কিশোরের দেহ।
উত্তরপ্রদেশে (Uttar Pradesh) নির্বাচনকে ঘিরে উত্তেজনার মধ্য়েই কানপুরের (Kanpur) নারওয়ালে (Narwal) ঘে গেল এক নারকীয় হত্যাকাণ্ড। চলতি সপ্তাহের সোমবার থেকেই নিখোঁজ ছিল ওই এলাকার একটি গ্রামের এক কিশোর। মঙ্গলবার তাকে তার বাড়ি থেকে মাত্র ৩০০ মিটার দূরের এক মাঠে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। নয় বছরের ওই কিশোর ক্লাস ফাইভের ছাত্র ছিল। তার পরিবারের অভিযোগ, সেই সময় তার এক চোখে একটি পেরেক বিদ্ধ ছিল, ডান গালে ছিল সিগারেটের পোড়া দাগ, নিতম্বে আঘাতের চিহ্ন এবং তার গলায় ছিল শ্বাসরোধ করার চিহ্ন। সম্পূর্ণ নগ্ন অবস্থায় পড়ে ছিল তার দেহ।
স্থানীয় পুলিশ এই অপরাধে জড়িত সন্দেহে অন্তত চারজন যুবককে আটক করেছে। তার আগেই অবশ্য পুলিশের পক্ষ থেকে ভারতীয় দণ্ডবিধির আওতায় খুন এবং প্রমাণ লোপাটের ধারায় এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করা হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, দেহটি যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখানে মাটিতে দেহ টেনে আনার দাগ ছিল। তাই, সন্দেহ করা হচ্ছে ওই কিশোরকে অন্য কোথাও হত্যা করা হয়েছে এবং পরে মাঠে দেহটি ফেলে যাওয়া হয়েছে। তবে, পুলিশ সন্দেহ করছে ওই কিশোরকে যৌন নির্যাতনও করা হয়ে থাকতে পারে। প্রমান মিললে এই মামলায় যৌন অপরাধ থেকে শিশুদের সুরক্ষা বা পকসো (POCSO) আইন-এর উপযুক্ত ধারাগুলিও এফআইআর-এ যুক্ত করা হবে।
আরও পড়ুন - ভাড়া বাড়িই ছিল জঙ্গিদের সদর দফতর, আহমেদাবাদে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের নেপথ্য কাহিনি
আরও পড়ুন - মর্মান্তিক - বাঁচাবে ওয়েব সিরিজের সুপারহিরো, বহুতলের ছাদ থেকে কিশোরের মরণঝাঁপ
আরও পড়ুন - ৫ বছরের শিশুর ধর্ষক ও হত্যাকারী, সাজা ঘোষণা হতেই বিচারককে চটি ছুড়ে মারল আসামী
কানপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, আদিত্য কুমার শুক্লা জানিয়েছেন, ময়নাতদন্তের ফলাফল অনুযায়ী ওই কিশোরের মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল, যার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। কোন ভারী বস্তু দিয়ে তাকে আঘাত করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে। তার নিতম্বে আঘাতের চিহ্নও ছিল। ঘটনাস্থলের কাছ থেকে মানব মল মাখা একটি ধারালো লাঠিও উদ্ধার করা হয়েছে। যৌন নির্যাতনের বিষয়টি নিশ্চিত করতে তার জামাকাপড় থেকে দেহরস এবং স্লাইড-সহ বিভিন্ন নমুনা নিয়ে ডিএনএ পরীক্ষার জন্য লখনউয়ের একটি ফরেনসিক বিজ্ঞান পরীক্ষাগারে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ আপাতত ফরেনসিক পরীক্ষার রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছে।
এই মামলায় অপরাধীদের উদ্দেশ্য কী ছিল? পুলিশ সূত্রে জানা যাচ্ছে, এর পিছনে ব্যক্তিগত শত্রুতার ঘটনা থাকতে পারে। নিহত বালকটির দিদির স্বামী ২০২০ সালে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন। সেই সময়ে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করা হয়েছিল, যেখানে আত্মহত্যার জন্য ওই মেয়েটিকে এবং তার পরিবারকে দায়ী করা হয়েছিল। পরে অবশ্য দেখা যায়, হাতের লেখাটি মৃতের নয়। এই বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে মৃত কিশোরের দিদির শ্বশুরবাড়ির লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
এদিকে ঘটনাস্থলের কাছ থেকেই বেশ কিছু আধপোড়া ঘুটে ও ফুল মিলেছে। যা থেকে স্থানীয় মানুষ মনে করছেন, এই হত্যার পিছনে তন্ত্র-মন্ত্রেরও বিষয় থাকতে পারে। তাদের মতে, ২০২০ সালেও ওই এলাকার কাছেই, প্রায় একইরকম পরিস্থিতিতে একটি সাত বছরের শিশুকন্যাকে হত্যা করা হয়েছিল।