এ এক অন্য কাহিনি, মাতৃত্বের স্বাদ পেতে হাইকোর্টের বিচারকের দ্বারস্থ এক আসামীর স্ত্রী

রাজস্থানের এক অন্য কাহিনি। এক মহিলার মা হওয়ার বাসনা। এদিকে তাঁর স্বামী জয়পুরের জেলে। তাই বিচারকের কাছে কিছুদিনের জন্য নিজের স্বাামীকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার  অনুমতি চাইলেন। ১৫ দিনের জন্য বিচারকের কাছে সেই স্বামীর ঘরে ফেরার অনুমতি চাইলেন। 
 

Kasturi Kundu | Published : Apr 8, 2022 4:46 AM IST / Updated: Apr 08 2022, 10:23 AM IST

রাজস্থানের এক অন্য কাহিনি। এক মহিলার মা হওয়ার বাসনা। এদিকে তাঁর স্বামী জয়পুরের জেলে। তাই বিচারকের কাছে কিছুদিনের জন্য নিজের স্বাামীকে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার  অনুমতি চাইলেন। ১৫ দিনের জন্য বিচারকের কাছে সেই স্বামীর ঘরে ফেরার অনুমতি চাইলেন। এই মহিলা কিন্তু প্রথমেই স্বামীকে কিছুদিনের  জন্য ঘরে ফেরাতে বিচারকের কাছে যান নি। প্রথমে তিনি গিয়েছিলেন কালেকটরের কাছে। তাঁর কাছে গিয়ে স্বামীকে কিছুদিনের জন্য ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করে দিতে বলেন। কিন্তু মা হওয়ার ইচ্ছে জাগা সেই মহিলার কথায় চিড়ে ভেজেনি। তারপর উপায় না দেখে তিনি নিজেই হাইকোর্ট বা উচ্চ আদালতের দরজায় কড়া নেড়ে স্বামীকে কয়েকদিনের জন্য ঘরে ফিরিয়ে আনার অনুমতি ঠিক আদায় করে নিয়ে আসেন। তাঁর কথা শুনে মানবিকতার খাতিরে ১৫ দিনের জন্য প্যারোলে ছাড়া পান সেই মহিলার স্বামী। 

এর আগে বছর খানেক আগে প্রায় ১১ মাস পূর্বে মাত্র  ১২ দিনের জন্য বাড়ি আসার অনুমতি পেয়েছিল মহিলার স্বামী। মহিলাটি এই কথা বলার পরই ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল বিচারক। প্রসঙ্গত ২০১৯ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা পান ভিলওয়ারা জেলার রাবারি কি ধানি এলাকার বাসিন্দা নন্দলাল। সাজা হওয়ার কিছুদিন আগেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তিনি। কিন্তু মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার দরুণ বিয়ের কয়েকদিন পরই জেলবন্দী হন তিনি। তাই বিবাহিত জীবন কাটানোর সুযোগ সেইভাবে আসেনি তাঁর কাছে। 
২০১৯-এ জেলে যাওয়ার পর গতবছর অর্থাৎ ২০২১ সালে মাত্র ১২ দিনের জন্য নতুন বৌয়ের কাছে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি। এরপর অতিমারি করোনা পরিস্থিতির জন্য পরিবার ও স্ত্রীর সঙ্গে সেইভাবে দেখাসাক্ষাৎও হয় নি নন্দলালের। নন্দলালের স্ত্রী একটি দরখাস্ত লিখে কালেকটর ও জেলের অফিসারদের কাছে উকিল নিয়ে গিয়েছিলেন। নেপথ্য কারন ছিল একটাই। মা হতে চান নন্দলালের বৌ। কিন্তু জেলের অফিসাররা এই বিষয়টাকে পাত্তা দিতে একেবারে নাারাজ ছিল। 

আরও পড়ুুন-অভিনব প্রতিবাদ, নবদম্পতিকে পেট্রল ডিজেলের ক্যান উপহার বন্ধুদের

আরও পড়ুন-আজ ফের পেট্রোলের দাম বেড়ে ১১৫ পার কলকাতায়, সারা দেশে কী দর জ্বালানীর

আরও পড়ুন-মোদীর আত্মনির্ভর ভারত প্রতিরক্ষা খাতে ফের শক্তিশালী, ১০১টি দেশীয় অস্ত্রের তালিকা প্রকাশ

অবশেষে কোনও উপায় না দেখে হাইকোর্ট বা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। সেখানে বিচারকের সামনে নিজের মনের কথা খুলে বলেন তিনি। সেই সঙ্গে নন্দলালের বৌ বলেন, তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা চলছে ঠিকই, তবে তিনি জেনে বুঝে কোনও কাজ করেননি সেই কথাও বলেন মা হওয়ার বাসনা জাগা নন্দলালের স্ত্রী। তাঁরা সকলেই জেলের, পুলিশের কড়া নিয়ম পালন করছেন, তবে তাঁরা কিন্তু কেউই দাগী আসামী নয়। নন্দলালের স্ত্রীর এই আর্জি শুনে হাইকোর্ট বা উচ্চআদালতের বিচারক সন্দীপ মেহেতা ও ফারজান্দ আলির ডিভিশন বেঞ্চ এই গোটা বিষয়টি শোনার পর জানিয়েছে, প্যারোলে শিশুর জন্ম দেওয়ার কোনও সুস্পষ্ট আইনত নিয়মের আওতায় নেই। তবে বিচারকরা ঋকবেদ ও বৈদিকশাস্ত্রের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, সন্তানের জন্ম দেওয়া মৌলিক অধিকার। এই কথা শোনার পর উচ্চ আদালেতর তরফে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালে নন্দলালের জেল হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই দম্পত্তির মধ্যে কোনও রকম সমস্যা তৈরি হয়নি। হিন্দু দর্শন মতে, গর্ভধারণ হল 16টি ধর্মানুষ্ঠানের শীর্ষ, তাই এটি অনুমোদিত হতেই পারে।

Share this article
click me!