জাতীয় পতাকার রূপকার, মৃত্যুবার্ষিকীতে পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া সম্পর্কে কিছু অজানা তথ্য

  • জাতীয় পতাকার নকাশাকার
  • পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়াকে স্মরণ
  • স্মরণ করলেন উপরাষ্ট্রপতি
  • ট্যুইট করে বার্তা 

Parna Sengupta | Published : Jul 4, 2021 12:30 PM IST / Updated: Jul 04 2021, 06:04 PM IST

কতজন চেনেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়াকে? যদি বা নাম শুনে থাকেন, কতটুকু জানা রয়েছে তাঁর সম্পর্কে? যদি বলি তিনি ভারতের জাতীয় পতাকার নকশাকার? তবে হয়ত শ্রদ্ধায় মাথা নোয়াবেন প্রত্যেক ভারতবাসী। তিনি পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া। অবশ্য শুধু এই নামই নয়, একাধিক নামে পরিচিত ছিলেন পিঙ্গালি। ১৯৬৩ সালের চৌঠা জুলাই তাঁর প্রয়াণ হয়। এদিন তাঁর মৃত্যু বার্ষিকীতে পিঙ্গালিকে শ্রদ্ধা জানান দেশের উপরাষ্ট্রপতি ভেঙ্কাইয়া নাইডু। 

 

১৮৭৬ সালের দোসরা অগাষ্ট জন্ম পিঙ্গালির। অন্ধ্রপ্রদেশের কৃষ্ণা জেলার পেদাকালিপাটাল্লি গ্রামে জন্ম হয় তাঁর। তিনি সরকারি স্কুলে নিজের পড়াশোনা শেষ করেন। ছোট থেকেই স্বপ্ন পরাধীনতার বন্ধন থেকে দেশ-কে মুক্ত করার। মাত্র ঊনিশ বছর বয়সে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মিতে যোগদান করেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গেও প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি ।

ঊনবিংশ শতাব্দীর আগে অবধি বিভিন্ন দেশীয় রাজ্যের শাসকেরা আলাদা আলাদা নকশার পতাকা ব্যবহার করতেন। এরপর ৩১ মার্চ, ১৯২১ সালে জাতীয় কংগ্রেসের এক সম্মেলনে প্রথমবার ভারতের ত্রিবর্ণ পতাকার বিষয়টি প্রস্তাব করেছিলেন পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়া। ভেঙ্কাইয়ার নকশা করা পতাকা মঞ্জুর করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। এরপর ১৯৩১ সালে চূড়ান্ত স্বীকৃতি পায় এই পতাকা, তবে তখন পতাকায় অশোক চক্রের বদলে ছিল চরকা। 

মছলিপত্তনমের উচ্চ বিদ্যালয়ে স্কুল জীবন শেষ করেন পিঙ্গলি। এরপর তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য কলম্বো যান। দেশে ফিরে তিনি রেল-এর চাকরি গ্রহণ করেন। পরবর্তীকালে উর্দু ও জাপানি ভাষা শিক্ষার জন্য লাহোরের অ্যাংলো-বৈদিক কলেজে যুক্ত হন। ভারতের জাতীয় পতাকার নকশা তৈরির জন্য ভেঙ্কাইয়া ৩০টি দেশের জাতীয় পতাকা সম্পর্কে গবেষণা করেন। শেষ অবধি এই তিন বর্ণই জাতীয় পতাকার জন্য বাছাই করেন তিনি। এরপর ১৯৪৭ সালের ২২ জুলাই সংবিধান সভায় ভারতের জাতীয় পতাকা প্রকাশ্যে আসে । এই পতাকায় চক্রের পরিবর্তে যোগ হয় অশোক চক্র।

জাতীয় পতাকার যথাযথ ব্যবহার এবং সম্মানের জন্য ২০০২ সালে ভারত সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বেশ কিছু নিয়মাবলী করেছিল যা 'ফ্ল্যাগ কোড অফ ইন্ডিয়া' নামে পরিচিত। ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ট ব্যুরো এই পতাকা তৈরির পদ্ধতি ও নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন স্থির করে দিয়েছে। আর সেই নিয়ম অনুযায়ী জাতীয় পতাকার তৈরির অধিকার কেবল খাদি উন্নয়ন ও গ্রামীণ শিল্প কমিশনের হাতে রয়েছে। ১৯৬৮ সালে প্রথমবারের জন্য পতাকাবিধিটি গৃহীত করা হয়েছিল। এই বিধি বা নিয়ম আবার ২০০৮ সালে সংশোধন করা হয়।

তবে পুরনো বিধি অনুযায়ী, স্বাধীনতা দিবস, সাধারণতন্ত্র দিবস সহ অন্যান্য জাতীয় দিবস ছাড়া সাধারণ নাগরিকেরা পতাকা উত্তোলন করতে পারতেন না। স্বাধীন ভারতের এই পতাকায় গেরুয়া ত্যাগের প্রতীক, সবুজ সমৃদ্ধির প্রতীক, সাদা শান্তির প্রতীক ও অশোক চক্র ভারতের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতীক। এই মহান ব্যক্তিত্বের জন্যই দেশের তিন রঙা এই পতাকা জাতীয় পতাকার স্বীকৃতি পেয়েছে। পিঙ্গালি ভেঙ্কাইয়ার এই কৃতিত্ব ভারতের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা রয়েছে। 

Share this article
click me!