হলিউডে ২০০৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ব্লাড ডায়মন্ড’। কিছুটা সেইরকমই ছবি দেখতে পাওয়া যায় একেবারে আমাদের নিজের দেশ ভারতের অভ্যন্তরে। শুকনো জমিতে কীভাবে এতও হিরে পাওয়া যাচ্ছে, তা কিছুতেই ধরতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা।
হলিউডে ২০০৬ সালে মুক্তি পেয়েছিল ‘ব্লাড ডায়মন্ড’ সিনেমাটি। জেলে, চোরাকারবারি এবং একটা বিশাল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের সম্মিলিত কার্যকলাপে অন্ধকারে ঢেকে যাওয়া আফ্রিকার ছবি তুলে ধরেছিল এই চলচ্চিত্রটি। হিরের ব্যবসায় প্রভূত প্রতিপত্তি লাভ করার জন্য চরম পন্থা নিতেও কুণ্ঠা বোধ করেননি সিন্ডিকেট মালিকরা। কিছুটা সেইরকমই ছবি দেখতে পাওয়া যায় একেবারে আমাদের নিজের দেশ ভারতের অভ্যন্তরে।
অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর এবং কুরনুল জেলার সীমান্তের গুন্টকাল এবং পাথিকোন্ডা এলাকার মাঝখানে কৃষি জমিতে প্রতি বছর বর্ষার সময় এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে, ২০২৩ সালেও সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি ঘটেছে। সেটি হল, শুকনো জমিগুলিতে হিরে এবং মূল্যবান পাথরের উপস্থিতি। এইসব পাথর সংগ্রহ করার জন্যই এখন এই এলাকায় জমতে শুরু করেছে বহু মানুষের ভিড়।
কুরনুল জেলার মাদ্দিকেরা মন্ডলের বেসিনপল্লীতে খরিফ শস্যের মরশুমের জন্য চাষবাসের কাজে ব্যস্ত থাকাকালীন এক কৃষক একবার একটি বড় হিরের টুকরো পেয়েছিলেন। ওই টুকরোটি তুলে নিয়ে গিয়ে তিনি এক ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দাম পেয়েছিলেন প্রায় ২ কোটি। এই অঞ্চলের হিরের কারবার সম্পর্কে কর দফতর বা পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ নেই, কারণ এখানকার ব্যবসায়ীরা একটি বিরাট সিন্ডিকেট গঠন করেছে এবং সবকিছুই এখানে লুকোনো ব্যাপার।
বিজয়নগর সাম্রাজ্যের সময় রায়ালসীমা অঞ্চল মূল্যবান পাথর ও হিরের ব্যবসার জন্য পরিচিত ছিল। তখনকার দিনে হাম্পির বাজারে সবজির মতো হেলাফেলায় বিক্রি করা হত হিরে। এই অঞ্চলেই এখন রয়েছে কুরনুল এবং অনন্তপুর জেলার মধ্যভাগ। প্রতি বছর বর্ষা ঋতুতে হিরে শিকারিদের আনাগোনায় জায়গাটি মুখর হয়ে ওঠে।
তুগগালি, জোন্নাগিরি, কুর্নুলের মাদ্দিকেরে এবং অনন্তপুর জেলার বজরাকারুরের শুকনো জমিতে দীর্ঘ কয়েক দশক ধরে বর্ষাকালে শুষ্ক জমিতে মূল্যবান পাথর দেখা যাচ্ছে। সেই খবর ছড়িয়ে পড়তেই অন্ধ্র এবং তেলঙ্গানা থেকে বহু ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে বা গোপনে ছুটে আসছেন হিরে খুঁজে বের করতে, এই সময়ে এখানকার হোটেল বা লজগুলি মানুষের ভিড়ে পরিপূর্ণ হয়ে থাকে। কিন্তু, কেন এই এলাকায় বৃষ্টির সময়ে শুকনো জমিতে হিরে বা মূল্যবান পাথর পাওয়া যাচ্ছে, তা নিয়ে ভূতত্ত্ববিদরা এখনও কিছু বলতে পারেননি।
২০১৯ সালে একজন কৃষক একটি হিরা খুঁজে পেয়েছিলেন, যা বিক্রি করে তিনি ৬০ লাখ টাকা পেয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ২০২০ সালে, দুজন গ্রামবাসী দুটো মূল্যবান পাথর খুঁজে পেয়েছিলেন, যেগুলো তাঁরা স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে যথাক্রমে দেড় লক্ষ এবং পঞ্চাশ হাজার টাকায় বিক্রি করেছিলেন। কিন্তু, জানা গেছে, সেই পাথরদুটির প্রকৃত মূল্য ছিল, ৫ লাখ এবং ৬ লাখ টাকা। ২০২২ সালে একটি পাথর ৪০ লাখে বিক্রি করেছেন এক ব্যক্তি। জোনাগিরি এলাকার অন্য আরেকজন ব্যক্তি একটি ৩০ ক্যারাটের হিরে খুঁজে পেয়ে এক বছর আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীর কাছে প্রায় দেড় কোটি টাকায় বিক্রি করেছিলেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন-
মোদীর ভাবমূর্তি দেখিয়ে আর হিন্দুত্ববাদী প্রচার করলেই বিজেপি ভোটে জিতবে না: সতর্ক করল আরএসএস
PM Modi: 'মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ সভায় ভাষণ দেওয়ার জন্য উন্মুখ', জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী
Weather News: তাপপ্রবাহের সঙ্গে একাধিক জেলায় ব্যাপকভাবে বাজ পড়ার সতর্কতা জারি