অঙ্কিতা ভাণ্ডারীর 'খুনি' পুলকিতরা বিভ্রান্ত করেছিল রিসর্ট কর্মীদের, সামনে এল ষড়যন্ত্রের নীল নকশা

অঙ্কিতা ভাণ্ডারী হত্যাকাণ্ডে বিজেপি নেতার ছেলে পুলতিক আর্য ও তার সহযোগীরা রীতিমত বিভ্রান্ত করেছিল রিসর্টের বাকি কর্মীদের। এমনকি ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকেই রিসর্টের কর্মীরা রিসেপসনিস্ট অঙ্কিতা ভাণ্ডারীকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। যাইহোক রিসর্টের এক কর্মী সেই রাতের ঘটনা অনেকটাই জানিয়েছেন।

Saborni Mitra | Published : Sep 24, 2022 4:40 PM IST


অঙ্কিতা ভাণ্ডারী হত্যাকাণ্ডে বিজেপি নেতার ছেলে পুলতিক আর্য ও তার সহযোগীরা রীতিমত বিভ্রান্ত করেছিল রিসর্টের বাকি কর্মীদের। এমনকি ১৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকেই রিসর্টের কর্মীরা রিসেপসনিস্ট অঙ্কিতা ভাণ্ডারীকে খুঁজতে বেরিয়ে পড়েছিলেন। যাইহোক রিসর্টের এক কর্মী সেই রাতের ঘটনা অনেকটাই জানিয়েছেন। 

 রিসর্ট কর্মী মনবীর চৌহান সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা থেকে সাড়ে ৮টা নাগাদ রিসর্টের মালিক পুলকিত আর্যের কাছ থেকে একটি ফোন পান। তিনি দাবি করেন পুলকিতরা চার জনের খাবার তৈরি রাখতে বলেন। তারপর ১০টা ৪৫ নাগাদ পুলকিতরা রিসর্টে ফেরেন। সেই সময় তাদের সঙ্গে অঙ্কিতা ছিল না। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরেই তিনি খাবার পরিবেশন করেন।  অঙ্কিত নামে পুলকিতের সহযোগী তাঁর কাছ থেকেই অঙ্কিতার খাবার নিয়ে যায়। জানিয়ে দেয় সেই খাবার অঙ্কিতার ঘরে দিয়ে আসবে। মনবীর জানিয়েছেন, সার্ভিস স্টাফেরা অঙ্কিতার খাবার পরিবেশন করে দেবে- এমনটাও জানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু রাজি হয়নি পুলকিতরা। তারপর রাতের কাজ সেরে তারা ঘুমিয়ে পড়েন। 

রিসর্টের কর্মীরা জানান সকালেই ঘুম থেকে উঠে তারা জানতে পারেন ম্যাডাম অঙ্কিতা তার রুমে নেই। তিনি রুমে গিয়ে দেখেন অঙ্কিতার ব্যাগ পড়ে রয়েছে। কাগজপত্র পড়ে রয়েছে। কিন্তু ম্যাডাম নেই। রিসর্ট কর্মীদের দাবি অঙ্কিতা যদি পালিয়ে যেত তাহলে টাকাপয়সা নিয়ে যেত। কিন্তু সবকিছুই একইরকমভাবে পড়েছিল। তারপরই রিসর্টের স্টাফেরা অঙ্কিতাকে খুঁজতে শুরু করে। 

এই হত্যাকাণ্ডে ক্ষিপ্ত হয়ে জনতা রিসোর্টে আগুন ধরিয়ে দেয়। পদক্ষেপ নিয়ে, অভিযুক্ত পুলকিত আর্যের ভাই ও বাবাকেও দল থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যকে।

উত্তরাখণ্ড পুলিশের প্রধান অশোক কুমার বলেছেন, অঙ্কিতা ভাণ্ডারী ফোন থেকে অনেক তথ্যই পাওয়া গেছে। আর সেই সূত্র ধরেই অনুমান যোগ করে তাঁকে দিয়ে যৌনবৃত্তি করাতে চেয়েছিল রিসর্টের মালিক পুককিত আর্য। অঙ্কিতা বন্ধুদের সঙ্গে যে চ্যাট করেছে তাও উদ্ধার করেছে পুলিশ।  অন্যদিকে ফেসবুকে অঙ্কিতার এক বন্ধু জানিয়েছেন, অঙ্কিতাকে রিসর্টে আসা মালিকের অতিথিদের সঙ্গে জোর করে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করতে বাধ্য করা হয়েছিল। কিন্তু অঙ্কিতা তাতে রাজি হয়নি। আর সেই কারণেই তাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। 

পুলিশ সূত্রের খবর যে রাতে অঙ্কিতাকে হত্যা করা হয় সেই রাতেও তিনি কয়েকজনকে ফোন করেছিলেন। অঙ্কিতা যে উদ্বিগ্ন ছিলেন তা তার ফোন থেকে নাকি স্পষ্ট বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর বন্ধুরা। অঙ্কিতা জানিয়েছিল সে রীতিমত সংকটে রয়েছে। তিনি আরও বলেছিলেন রিসর্টের মালিক ও ম্যানেজাররা  তাঁর সঙ্গে রিসর্টে আসা অতিথিদের সঙ্গে সেক্স করার জন্য ক্রমাগত চাপ বাড়িয়েই চলেছিল। সেই বন্ধু আরও জানিয়েছেন  সেই দিন রাত ৮টার পর তিনি আর অঙ্কিতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি। একাধিকবার ফোন করেছিলেন। কিন্তু যোগাযোগ করতে পারেননি। পরের দিন সকালে বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে অঙ্কিতার  মুখ থেকে শোনা রিসর্ট মালিক পুলকিত আর্যের ফোন নম্বর যোগাড় করে ফোন করেন।  কিন্তু পুলকিত আর্য জানিয়ে দেন তিনি জিমে আছেন। অঙ্কিতা নিজের ঘরে ঘুমাচ্ছে।  আর কোনও কথা বলেনি। রিসর্টের শেফের সঙ্গেও কথা বলেন, কিন্তু সে জানিয়ে দেয় সকাল থেকেই অঙ্কিতাকে দেখেনি।  তারপর থেকে হন্যে হয়ে অঙ্কিতাকে খুঁজেছেন তিনি। খুঁজেছেন তাঁর বাবা মাও। কিন্তু শনিবার উদ্ধার হয় অঙ্কিতার নিথর দেহ। 

Share this article
click me!