মর্মান্তিক মৃত্যু উত্তরাখণ্ডের রিসেপসনিস্টের, খালে ঠেলে দিয়ে মৃত্যু দেখতে দেখতে মদ্যপান পুলকিতদের

পুলিশের বয়ান অনুযায়ী প্রথমে উত্তরাখণ্ডের রিসর্টের মালিক তথা বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে পুলকিত আর্য ও তাঁর দুই সঙ্গী সৌরভে ভাস্কর ও অঙ্কিত গুপ্তের সঙ্গে  প্রথমে প্রবল কথাকাটাকাটি হয় অঙ্কিতার। রিসর্টের মধ্যেই তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল।

Saborni Mitra | Published : Sep 24, 2022 12:50 PM IST

অকালেই স্তব্ধ করে দেওয়া হল অঙ্কিতা ভাণ্ডারীর জীবন। মর্মান্তিক মৃত্যু উত্তরাখণ্ডের রিসেপসনিস্টের। যা নিয়ে রীতিমত বিক্ষোভের আগুন জ্বলছে উত্তরাখণ্ডে।  গোটাদেশের সোশ্যাল মিডিয়ায় চর্চা হচ্ছে, ক্ষোভ বাড়ছে তরুণীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে। কিন্তু আপনি জানেন কী বহিষ্কৃত বিজেপি নেতার ছেলে ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গরা কী করে হত্যা করেছিল অঙ্কিতাকে। সেই নিয়েই সামনে এসেছে পুলিশের বয়ান। 

পুলিশের বয়ান অনুযায়ী প্রথমে উত্তরাখণ্ডের রিসর্টের মালিক তথা বিজেপি নেতা বিনোদ আর্যের ছেলে পুলকিত আর্য ও তাঁর দুই সঙ্গী সৌরভে ভাস্কর ও অঙ্কিত গুপ্তের সঙ্গে  প্রথমে প্রবল কথাকাটাকাটি হয় অঙ্কিতার। রিসর্টের মধ্যেই তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল। তারপর পুলকিততা অঙ্কিতাকে নিয়ে আলাদা আলাদা গাড়ি করে রিসর্ট থেকে বেরিয়ে যায়। যা ধরা পড়েছে রিসর্টের সিসিটিভি ক্যামেরায়। 

পুলিশ সূত্রের খবর তিনজনই গাড়ি করে অঙ্কিতাকে নিয়ে হৃষিকেশের উদ্দেশ্যে বেড়িয়েছিল। রাত ৮টা নারাগ বেরিয়ে যায়। কিন্তু রিসর্টে ফিরে আসে রাত সাড়ে ১০ টা  থেকে ১১টার মধ্যে । তবে সেই সময় তাদের সঙ্গে অঙ্কিতা ছিল না। পুলকিত, সৌরভ আর অঙ্কিত ছিল। সেটাও ধরা পড়েছে সিসিটিভি ক্যামেরায়। তাহলে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত কোথায় ছিল তারা? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে পুলিশ তিন জনকে জেরা করে। তাতেই পাওয়া যায় উত্তর। 

ধৃতরা জেরায় জানিয়েছে, চার জন রিসর্ট ছেড়ে, হৃষিকেশ ব্যারেজ হয়ে এমসের কাছে পৌঁছায়। তারপর সেখান থেকে চিলা রোডে যায়। একটি খালের পাশ দিয়েই চলে গেছে চিলা রোড। তারা তাদের গাড়ি খালের ধারে দাঁড় ককায়। সেখানেই বসে কথা বলতে শুরু করে। সেই সময় পুলকিত আর অঙ্কিতার মধ্যে আরও একপ্রস্থ কথাকাটাকাটি হয়। সেই সময়ই অঙ্কিতা পুলকিতের মোবাইল ফোন ছুঁড়ে খালের জলে ফেলে দেয়। তারপরই মত্ত অবস্থায় থাকা পুলকিত মেজাজ হারায় পুলকিত। সেও অঙ্কিতাকে পাল্টা ধাক্কা মেরে খালের জলে ফেলে দেয় বলেও জেরায় জানিয়েছে ধৃতরা। তারপর অঙ্কিতা একাধিকবার বাঁচার আর্তি জানায়। কিন্তু তিনজনের কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়নি। এই অবস্থায় অঙ্কিতা ধীরে ধীরে ডুবে যায় খালের জলে। 

কিন্তু নৃশংসতার শেষ এখানেই নয়। কারণ তিন জনই অঙ্কিতার মৃত্যু দেখতে দেখতে হোটেল থেকে আনানো মদ আর মোমো খেয়েছিল। তারপরই তারা রিসর্টে ফিরে আসে। সেখানে এসে গোটা ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার পরিকল্পনা করে।    

রিসর্টে ফিরে শেফকে জানিয়ে দেয় তাদের সঙ্গে অঙ্কিতা ছিল না। তবে অঙ্কিতার খাবার অর্ডার দিয়ে তা তার ঘরে রেখে আসার কথা বলে। সেখান থেকে শেফতেই অঙ্কিতার মোবাইল ফোনও নিয়ে আসার কথা বলে। কিন্তু অঙ্কিতার ফোন ঘরে ছিল না। তারপরই পুলিশের দ্বারস্থ হয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করে পুলকিতরা। ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিল তরুণী। তাঁর খবর না পেয়ে পরিবারের সদস্যরাও পুলিশের দ্বারস্থ হয়। শেষপর্যন্ত ২৪ সেপ্টেম্বর চিলা খাল থেকে উদ্ধার হয় অঙ্কিতার নিথর দেহ।

 

স্থানীয় পুলিশ অঙ্কিতার দেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। জলে ডুবে মৃত্যু , না মৃত্যুর অন্য কোনও কারণ রয়েছে তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পুলকিত, সৌরভ ও অঙ্কিতকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর ময়নাতদন্তের রিপোর্টেই স্পষ্ট হবে অঙ্কিতাকে ধর্ষণ বা যৌন হেনস্থা করা হয়েছিল কিনা। 

Share this article
click me!