যে কাজ করবে তাঁকেই ভোট। এটাই নতুন ভারতের ভাবনা। ভোটে জিতে প্রথমবার জনসমক্ষে এসে এমনই দাবি করলেন হ্যাটট্রিক ম্যান কেজরিওয়াল। তাঁর দাবি, এই জয় শুধু দিল্লির নয়, গোটা দেশের মানুষের জয়, ভারতমাতার জয়।
সকালে ইভিএম খোলার পর থেকেই তাঁর হ্যাটট্রিক করে ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। বিকেল সাড়ে তিনটে নাগাদ দল ৬০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে, তখন দলের সদর দফতরের সামনে মঞ্চে আসেন কেজরিওয়াল। বিজেপি নেতারা এতদিন তাঁকে সন্ত্রাসবাদী, দেশবিরোধী এবং হিন্দুত্ব বিরোধী বলে আক্রমণ শানিয়েছিলেন। ভোটে জেতার পর প্রথমবার মুখ খুলেই কেজরিওয়াল ভারতমাতার নামে জয়ধ্বনি দিলেন। তার সঙ্গে জুড়লেন বজরংবলির নামও। আগেই বলেছিলেন ১১ তারিখ সবকিছুর জবাব দেবেন। বিজেপি নেতাদের নাম মুখে না এনেও সেই জবাব দিয়ে দিলেন হ্যাটট্রিক ম্যান।
আরও পড়ুন- শাহিনবাগ, দেশপ্রেম নয়, পাঁচ অস্ত্রেই দিল্লিতে বিজেপি-কে ধরাশায়ী করলেন কেজরিওয়াল
আরও পড়ুন- জয়-পরাজয় নিয়ে দার্শনিক ব্যাখ্যা, নতুন পোস্টারে মান বাঁচাচ্ছে গেরুয়া শিবির
আপ দফতরের সামনে জড়ো হওয়া হাজার হাজার সমর্থকদের সামনে কেজরিওয়াল বলেন, 'এই নির্বাচনে দিল্লির মানুষ দেশে একটা নতুন রাজনীতির সূচনা করলেন। যে কাজ করবে তাঁকেই ভোট দেওয়া হবে। ভোট তাঁকেই যে স্কুল বানাবে, মহল্লা মহল্লায় ক্লিনিক তৈরি হবে, চব্বিশ ঘণ্টা সস্তায় বিদ্যুৎ দেবে, ঘরে ঘরে জল দেবে, রাস্তা তৈরি করে দেবে। এই রাজনীতির সূচনা আমাদের দেশের পক্ষে অত্যন্ত শুভ।'
এর পরেই কেজরিওয়াল বলেন, 'এটা শুধু দিল্লির মানুষের জয় নয়, ভারতমাতার জয়। গোটা দেশের জয়।'
নির্বাচনের আগে নিজের হিন্দুত্ব বিরোধী অপবাদ ঘোচাতে লাইভ সাক্ষাৎকারে হনুমান চালিসা পাঠ করেছেন। হনুমান মন্দিরে গিয়েছেন। বিপুল জয়ের পরেও তাই বজরংবলিকে ভোলেননি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আজ মঙ্গলবার, হনুমানজির দিন। হনুমানজি আশীর্বাদ করায় তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। এই কামনাই করছি যাতে আগামী পাঁচ বছর তিনি আরও ভাল কাজ করার দিশা দেখান। যাতে দু' কোটি মানুষ মিলে যাতে দিল্লিকে আরও সুন্দর এবং উন্নত শহর তৈরি করতে পারি।'
তৃতীয়বার মসনদে ফেরা নিশ্চিত করে সমস্ত দিল্লিবাসী, কার্যকর্তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন কেজরি। পাশাপাশি নিজের পরিবারকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। মঙ্গলবারই ছিল তাঁর স্ত্রী সুনীতার জন্মদিন ছিল। জন্মদিনে স্ত্রীকে সেরা উপহারটাই দিলেন আইআইটি খড়্গপুরের প্রাক্তনী। সুনীতাকে পাশে নিয়ে কেজরিওয়াল বলেন, 'আজ আমার স্ত্রীর জন্মদিন। আমি কেক খেয়ে নিয়েছি, আপনাদেরও খাওয়াবো।'
দিল্লিবাসীর প্রত্যাশা পূরণই এখন কেজরির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। সবশেষে তিনি বলেন, 'দিল্লির মানুষ অনেক প্রত্যাশা নিয়ে এত আসন দিয়েছেন, এবার আমাদের আগামী পাঁচ বছর খুব পরিশ্রম করতে হবে।'