বিপদে পড়লে সাহায্যের জন্য কাউকে খুঁজে না পাওয়া গেলেও, পোশাক নিয়ে নীতি পুলিশের শাসন সহ্য করতে হয়েছে এমন ভারতীয় মহিলার সংখ্যা গুনে শেষ করা যাবে না। তবে এতদিন এই নীতি পুলিশের দাদাগিরি থেকে বেঙ্গালুরুর মানুষ নিজেদের অনেকটাই নিরাপদ বলে মনে করতেন। কিন্তু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা গেল সে-গুড়েও বালি। ভরা রাস্তায় ভারতীয় বিধি মেনে পোশাক না পরার জন্য এক তরুণীকে চরম হেনস্থা করলেন এক তথ্য প্রযুক্তি কর্মী।
ঘটনাটি গত বৃহস্পতিবারের। এক বন্ধুর সঙ্গে বেরিয়েছিলেন ওই তরুণী। তাঁর পরণে ছিল গোলাপি রঙের শর্টস, সাদা রঙের টি শার্টস আর নীল রঙের শ্রাগ। তরুণীর এই পোশাকেই বেজায় চটে যান ওই ব্যক্তি। একটি দোকানের সামনে তিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন। পাশে বাইক নিয়ে যাচ্ছিলেন ওই তরুণী ও তাঁর বন্ধু। দোকান থেকেই ওই ব্যক্তি চিৎকার করে তরুণীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ভারতীয় বিধি লঙ্ঘন করে কেন এই ধরনের পোশাক পরেছেন তিনি?
পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়, যে বাইক থেকে ওই মহিলা ও তাঁর বন্ধু নামতে বাধ্য হন। উত্তেজিত নীতি পুলিশ তখন ভারতীয় পোশাকের আইন নিয়ে একের পর এক বাক্যবাণ ছুড়তে থাকেন তরুণীকে লক্ষ্য করে। তরুণীর বন্ধুটি পকেট থেকে মোবাইল বের করে ঘটনার ভিডিও করতে থাকেন। তাতেও একটুও দমেননি ওই ব্যক্তি। ক্যামেরার সামনে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে কোনওরকম ভনিতা না করেই তিনি ভারতীয় নিয়ম অনুযায়ী মেয়েদের কি ধরনের পোশাক পরা উচিত তার ফিরিস্তি দিতে থাকেন।
সিমরন কাপুর নামে ওই তরুণীর এক বান্ধবী ফেসবুকে ভিডিওটি পোস্ট করেন। সেই সঙ্গে তিনি লিখেছেন, 'নীতি পুলিশকে দেখলে বেশ ভদ্র ও মার্জিত মনে হয়। পোশাকও ছিল বেশ রুচি সম্মত। কিন্তু বার বার তিনি আমার বান্ধবীকে ভারতীয় সংস্কৃতির বিরুদ্ধে পোশাক পরার জন্য অভিযুক্ত করেছেন। ওই নীতি পুলিশ এখানেই থেমে থাকেননি, আশেপাশের লোকজনকে ডেকে ডেকে জিজ্ঞাসা করছিলেন, আমার বান্ধবী ঠিক পোশাক পরেছে কি না। এর ফলে ও আরও অস্বস্তিতে পড়ে যাচ্ছিল।'
এই ঘটনার তীব্র প্রতিক্রিয়া এসেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অনেকেই তীব্র সমালোচনা করেছেন। কেউ কেউ বলেছেন এইসব মানসিকতার লোকদের জন্যই বিশ্বে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।