পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় হাতাহাতির ঘটনা নিয়ে বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দরবারে যাবেন রাজ্যের সাংসদরা। সকালেই তাঁরা দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। বিজেপির দাবি তাদের ৮ জন বিধায়ক আহত হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিধানসবভার আঁচ পড়েছে দিল্লিতে। মঙ্গলবার ঘটনার পরই সংসদে দাঁড়িয়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বলে অভিযোগ তুলের রাজ্যের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ। তিনি রাজ্যের ৩৫৫ ধারা জারি করার আবেদনও জানিয়েছেন। এদিন সংসদের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বিক্ষোভ অবস্থানে বসে বিজেপি সাংসদরা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই বুধবার সকালে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্যের বিজেপি সাংসদরা।
সূত্রের খবর বুধবার দিল্লিতে প্রাতঃরাশের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের বিজেপি সাংসদদের সঙ্গে কথা বলবেন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে। সেই সময়ই এই রাজ্য বিধানসভার ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ খবর নেবেন। বিজেপির অভিযোগ বিধানসভার ভিতরে তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক ও নিরাপত্তাকর্মীরা তাঁদের ওপর চড়াও হন। তাদের দলের আটজন বিধায়ক জখম হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা। অন্যদিকে তৃণমূলেরও বেশ কয়েকজন বিধায়ক জখম হয়েছে বলে অভিযোগ।
বিধানসভার ঘটনার নালিশ জানাতে সোমবার সন্ধ্যেবেলায় রাজভবনে গেলেন বিজেপি নেতা তথা নন্দীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিজেপির আরও চার সাসপেন্ড হওয়া সাংসদ। এদিন বীরভূমের রামপুরহাটের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তাল হয়ে ওঠে রাজ্যবিধানসভা। বিরোধী দল বিজেপি গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য জানতে চান। তারপরই বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়কদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। এই ঘটনার জেরে শুভেন্দসহ পাঁচ বিজেপি বিধায়ককে সাসপেন্ড করা হয়। এই ঘটনায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের কাছে নালিশ জানান শুভেন্দু অধিকারীরা।
শুভেন্দু অধিকারী এদিন রাজভবনের গেটে দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকারকে একহাত নেন। তিনি গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি বলেন বীরভূম-সহ রাজ্যে চলা সন্ত্রাসের দিক থেকে নজর ঘোরাতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে এই কাজ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন তাঁকে বেআইনিভাবে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন একটা সেশাসনের বাইরে সাপপেনশন করা যায় না। এই একই ধরনের ঘটনা মহারাষ্ট্র বিধানসভাতেও ঘটেছিল। সেই মামলা সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিল বলেও জানিয়েছেন তিনি। তিনি মহারাষ্ট্রের প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন আগামিকাল তিনি বিধানসভায় গিয়ে সাসপেনশনের প্রতিলিপি জোগাড় করবেন। প্রয়োজনে তিনিও আদালতে যাবেন বলেও জানিয়েছেন।
অন্যদিকে এদিন সোমবার সংসদে পশ্চিমবঙ্গে আইনশৃঙ্খলা নেই বলে অভিযোগ তুলে রাজ্যে ৩৫৫ ধরা জারি করার আবেদন জানান সৌমিত্র খান। তিনি বলেন দেশের কোনও রাজ্যে বিধানসভার অন্দরে বিরোধীদের ওপর আক্রমণ হয় না। একমাত্র রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ - সেখানে বিধানসভার অন্দরে বিরোধীদের ওপর হামলা চালান হয়েছে। সৌমিত্র খানের অভিযোগ, এদিন বাংলার বিধানসভায় দলের নেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ একাধিক বিজেপি নেতার ওপর হামলা চালিয়েছে শাসক দল। তিনি বলেন এই রাজ্যে কোনও সরকার নেই। বিধানসভায় শসকদলের নির্দেশে বিজেপি বিধায়কদের মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তিনি সংসদে দাঁড়িয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে রাজ্যে ৩৫৫ ধারা জারির আবেদন জানান।