চুরির অভিযোগে রাজেশ মাঞ্চিকে অস্ত্র কাঠ, প্ল্যাস্টিকের পাইপ দিয়ে নির্মণ প্রহার করা হয়। রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাত ২ পর্যন্ত তাঁকে দফায় দফায় জিজ্ঞাবাদ করেছিল। সঙ্গে চলেছিল মারধর।
কেরলের মালাপ্পুরমে চুরির অভিযোগে গণপ্রহারে মৃত্যু হল বিহারের বাসিন্দার। যিনি কাজের জন্য বিহার থেকে গিয়েছিলেন কেরলে। মৃত ব্যক্তি ভাগলপুরের বাসিন্দা রাজেশ মাঞ্চি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হল কিঝিসেরির স্থানীয় বাসিন্দা মুহম্মদ আফসাল, ফাজিল, শরাফুদ্দিন যারা ভাই তখন মেহাবুব, আবদুসামাদ, নাসার, হাবীব, আইয়ুব। থাভানুরের আদিবাসী জয়নুল আবিদ হেফাজতে থাকলেও তাকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
চুরির অভিযোগে রাজেশ মাঞ্চিকে অস্ত্র কাঠ, প্ল্যাস্টিকের পাইপ দিয়ে নির্মম প্রহার করা হয়। রাত সাড়ে ১২টা থেকে রাত ২ পর্যন্ত তাঁকে দফায় দফায় জিজ্ঞাবাদ করেছিল। সঙ্গে চলেছিল মারধর। হাতদুটি পিছমোড়া করে বেঁধে রেখে ক্রমাগত মারধর করা হয়। অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পরেও রেহাই দেয়নি অভিযুক্তরা। রাস্তার এক ধারে ফেলে রেখে দিয়ে চলে যায়। এই ঘটনা ঘটেছিল গত ১২ মে। তদন্তকারীদের অভিযোগ মারধরের ভিডিও শ্যুট করেছিল অভিযুক্তরা। কিন্তু পাশবিক ভিডিওটি নিজেদের ফোন থেকে তারা আগেই ডিলিট করে দিয়েছিল।
এসপি সুজিত দাস জানিয়েছেন, ঘটনার মাত্র তিন দিন আগেই রাজেশ মাঞ্চি বিহার থেকে কেরলে গিয়েছিলেন কাজের জন্য। চুরির অভিযোগ তাঁকে মারধর করা হয়েছিল। রাজেশকে তাঁর কর্মস্থল থেকে ৩০০ মিটার দূরে একটি বাডডির পাশে অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া গিয়েছিল। পুলিশ তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু আগেই রাজেশের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানিয়েছে হাসপাতাল। পুলিশ অভিযুক্তদের মোবাইল ফোন থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করেছে। মোবাইলফোনগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তরা প্রমাণ লোপাট করার জন্য রাজেশের পরণের টিশার্ট লুকিয়ে রেখেছিল। সেটি এখনও উদ্ধার করা যায়নি।
পুলিশ আরও জানিয়েছে, গণপ্রহারের পরেই অভিযুক্তরা প্রমাণ লোপাটে রীতিমত সক্রিয় ছিল। আর সেই কারণেই তারা রাস্তার মোড়ে বসানো সিসিটিভি ফুটেজ ডিভিআর নষ্ট করার চেষ্টা করেছিল। তবে পুলিশ আসপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। এলাকায় একটি বিশেষ তদন্তকারী দল মোতায়ন করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, গণপ্রহার একটি ঘৃণ্য ঘটনা। চোর সন্দেহে মারধর করার নিন্দা করেছে প্রশাসন।
অন্যদিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনসিক দল। তারা নমুনা সংগ্রহ করেছে। যদিও অভিযুক্তদের দাবি, চুরির সময় তাদের বাড়ির ছাদ থেকেই পড়ে দিয়েছিল এই ব্যক্তি। তারা কাউকে মারধর করেনি বসেও জানিয়েছে। তবে পুলিশ এই তত্ত্বতে কান দিতে রাজি নয়। পুলিশের অনুমান অভিযুক্তরা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যেই কেরলের বাসিন্দা নয় এমন দুইজন শ্রমিককে ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা রাজেশকে চেনে কিনা- রাজেশ কেমন ব্যক্তি তাও জানার চেষ্টা ককছে। ফরেনসিক দল বাড়ির উচ্চতা, আর ঘটনাস্থলের মাপ নিয়েছে। পাশাপাশি মৃত রাজেশের আঘাতের স্থানগুলি খতিয়ে দেখে বোঝার চেষ্টা করছে ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু কিনা।
কেরলে পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই ১০০ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। পুলিশ জানিয়েছে রাজেশের বুকে , পিঠে আর পেটে প্রহারের দাগ রয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করলেই তদন্ত সহদ হয়ে যাবে। পুলিশ সূত্রের খবর, তদন্তকারীরা নিশ্চিত রাজেশের মৃত্যু হয়েছে গণপ্রহারে। তবে অপরাধীরা প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছিল। পাশাপাশি মৃত্যু ঘটনা গোপন করতেও ষড়যন্ত্র করেছিল। রাজেশের দেহ কোঝিকোড়ে দাহ করা হয়েছিল। কারণ রাজেশের পরিবার জানিয়েছে, তাদের পক্ষে কেরলে যাওয়া সম্ভব নয়।
আরও পড়ুনঃ
জম্মু ও কাশ্মীরে হামলার ছক বানচাল এনআইএ-র, পাকিস্তানে তথ্য পাচারের অভিযোগে ধৃত জইশ অপারেটর
From The India Gate: কর্ণাটকে কংগ্রেসের জয়- প্রভাব ফেলছে দেশের অন্যান্য রাজ্যের রাজনীতিতেও
মঙ্গলবার থেকে বদল করতে পারবেন ২ হাজার টাকার নোট, জেনে নিন কী কী নিয়ে যাবেন ব্যাঙ্কে