পড়াশোনা করতে তার ভালো লাগে না ৷ তাই রাতদিন তাকে বাড়িতে বকাঝকা করা হয় বলে জানা গেছে। সেই কারণেই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। মাত্র ১১ বছরের নাবালকের মাথায় এমন বুদ্ধি দেখে হতভম্ব পুলিশ কর্তারাও ৷
অপহরণ করে টাকা দাবি করা দুষ্কৃতীদের একটি চেনা ছক। শিশু থেকে বয়স্ক, প্রত্যেকেই এই ছক সম্পর্কে অবগত। প্রথমে পরিবারের কোনও সদস্যকে গোপন ডেরায় বন্দি করে রাখা, তারপর তাঁর মুক্তির জন্য মোটা টাকা দাবি করা। এই অপরাধের ক্ষেত্রে প্রথম শিকার হয়ে থাকে শিশুরা। সেই জ্ঞান থেকেই এবার নিজের বাবাকে সাংঘাতিক বার্তা পাঠাল এক শিশু।
বিহারের মুঙ্গেরের এক বাসিন্দা যখন অফিসের কাজে ব্যস্ত ছিলেন , তখনই হঠাৎ করে তাঁর ফোনে একটি বার্তা আসে ৷ সেটিতে লেখা ছিল, “আমি কিডন্যাপড হয়ে গেছি ৷ ৫ লক্ষ টাকা না দিলে এই লোকগুলো আমাকে গুলি করে দেবে।” নিজের ছেলের কাছ থেকে এরূপ মেসেজ পেয়ে প্রায় দিশাহারা হয়ে যান ওই ব্যক্তি। সঙ্গে সঙ্গে তিনি পুলিশের দ্বারস্থ হন। তদন্ত করে দেখা যায় যে, যে ফোন থেকে বার্তাটি এসেছিল, সেই ফোনের শেষ লোকেশন (অবস্থান) দেখা যাচ্ছে গয়া স্টেশন ৷
লোকেশন দেখে তল্লাশি অভিযান শুরু করে পুলিশ ৷ জামালপুর ইস্টার্ন রেলওয়ে ডিএসপি ইমরান পারভেজ বলেন, "গয়া জেলার দেলাহা পুলিশ স্টেশনে ওই ছাত্রের লোকেশন জানতে পারে পুলিশ ৷ বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ সে টিউশন পড়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়েছিল ৷ গয়া-সাহারসা ট্রেনে বসে সে বাবাকে কিডন্যাপড হওয়ার গল্প ফেঁদে মেসেজ পাঠায় ৷ ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে ৷ নাবালকের বাবা মোবাইল টাওয়ারে কাজ করেন ৷ পরিবারের তরফে অভিযোগ পাওয়ার পরে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে ৷ এরপর ট্রেনের ভেতর থেকে ওই পড়ুয়াকে ধরে বের করে নিয়ে আসে পুলিশ ৷ তাকে বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ৷"
জানা গিয়েছে, নিজের কিডন্যাপ হওয়ার গল্প ফাঁদা শিশুর বয়স মাত্র ১১ বছর। স্থানীয় একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে সে পাঠরত। ছেলেকে ফিরে পেয়ে স্বভাবতই খুশি হয়েছে তার পরিবার ৷ সকলের পক্ষ থেকে পুলিশ ও রেল আধিকারিকদের শন্যবাদ জানানো হয়েছে ৷ কিন্তু খুদে পড়ুয়া হঠাৎ করে এমন কাণ্ড ঘটালো কেন, তার সঠিক কারণ জানা যায়নি ৷ ওই ব্যক্তির দুই ছেলে রয়েছে ৷ একজন বাইরে পড়ে ৷ কিন্তু ছোট ছেলের পড়াশোনা ভালো লাগে না ৷ তাই রাতদিন তাকে বাড়িতে বকাঝকা করা হয় বলে জানা গেছে। সেই কারণেই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে কিনা, তা নিয়ে ধন্দ রয়েছে। মাত্র ১১ বছরের নাবালকের মাথায় এমন বুদ্ধি দেখে হতভম্ব পুলিশ কর্তারাও ৷