টেলিভিশনে হজরত মহম্মদকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর মুখপাত্র নুপুর শর্মাকে বরখাস্ত করেছে বিজেপি।
রবিবার টেলিভিশনে একটি অনুষ্ঠানে হজরত মহম্মদ সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নুপুর শর্মা। এই কারণে তাকে বরখাস্ত করেছে বিজেপি হাইকমান্ড। বিজেপির দিল্লির মিডিয়া ইনচার্জ নবীন কুমার জিন্দালকেও দলের প্রাথমিক সদস্যপদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিজেপি।
নূপুর শর্মাকে পাঠানো সাময়িক বরখাস্তের চিঠিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় শৃঙ্খলা কমিটি লিখেছে, 'আপনি বিভিন্ন বিষয়ে দলের অবস্থানের বিপরীত মতামত প্রকাশ করেছেন। আপনাকে দল থেকে এবং আপনার দায়িত্ব থেকে অবিলম্বে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হচ্ছে।'
দিনকয়েক আগে হজরত মহম্মদের বিয়ে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেন। সেই মন্তব্যকে কেন্দ্র করেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কানপুর এলাকা। পাথর ছোঁড়া, দোকান ভাঙচুরের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮ জনকে। সংঘর্ষের সময় ২০ জন পুলিশ কর্মী সহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। এদিন ঠিক কি বলেছেন নূপুর? একটি টেলিভিশন চ্যানেলে বিতর্ক অনুষ্ঠানে, নুপুর শর্মা বলেছিলেন যে ইসলামিক ধর্মীয় বইয়ের কিছু বিষয় উপহাসের যোগ্য। তিনি বলেন, মুসলমানরা হিন্দু ধর্মকে উপহাস করে থাকে এবং মসজিদ কমপ্লেক্সের অভ্যন্তরে পাওয়া 'শিবলিঙ্গ'কে ফোয়ারা বলে অসম্মান করার চেষ্টা করছে। নুপুর শর্মার বিরুদ্ধে হায়দরাবাদ, পুনে এবং মুম্বাইতে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নুপুর শর্মার বরখাস্তের খবর প্রকাশের কিছুক্ষণ আগে, বিজেপি রবিবার একটি বিবৃতি প্রকাশ করে বলেছে যে তারা সমস্ত ধর্মকে সম্মান করে এবং যে কোনও ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের অবমাননার তীব্র নিন্দা করে।বিজেপির জাতীয় সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, 'বিজেপি সেই ধরনের মতাদর্শের দৃঢ়ভাবে বিরোধী যা কোনও সম্প্রদায় বা ধর্মকে অপমান করে বা ছোট করে। বিজেপি এই ধরনের মানুষ বা দর্শনকে প্রশয় দেয় না,' । বিজেপি থেকে নুপুর শর্মাকে সাসপেন্ড করার বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ টুইট করেছেন, 'আরবের প্রতিক্রিয়া সত্যিই দংশন করেছে।' প্রসঙ্গত শনিবার, ওমানের সুলতানাতের গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আহমেদ বিন হামাদ আল-খালিলি টুইটারে নুপুর শর্মার দেওয়া বক্তব্যের নিন্দা করেছিলেন।
আরও পড়ুন:
ডুমুরের ফুল বিজেপির অধিকাংশ বুথ সভাপতি, নাড্ডা সফরের আগে চাপে সুকান্ত-শুভেন্দুরা
ফের পাচারকারি সন্দেহে গুলি বর্ষণ, সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে মৃত্যু কৃষকের
ছবিতেই কেকে কে ছোঁয়ার চেষ্টা শিল্পীর।
নুপুরের মন্তব্যের প্রতিবাদে কানপুরের প্যারেড মার্কেটে বনধের ডাক দেয় স্থানীয় মুসলিম সংগঠন। কিন্তু স্থানীয় দোকানদাররা দোকানপাট বন্ধ রাখতে রাজি না হওয়াতেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। শুক্রবারের প্রার্থনা সেরেই মুসলমান গোষ্ঠীর প্রায় শ’ খানেক লোক প্যারেড মার্কেট এলাকায় আসে জোর খাটিয়ে বাজার বন্ধ করতে। স্থানীয়রা দোকানদাররা তাদের বাধা দিলে বচসা শুরু হয়। ক্রমে সেই বচসা গড়ায় মারামারিতে। এরপর শুরু হয় দোকান ভাঙচুর। কানপুরে এই সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।