নানাভাবে চেষ্টা চলছে। মিসড কল দিয়ে সমর্থন জানানোর নম্বর চালু করা হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সিএএ ও এনআরসি নিয়ে প্রয়োজনীয় সমর্থন জুটছে না। তারপর থেকে ভারতজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় সমর্থন জোটাতে রীতিমতো মানুষের উপর জোরাজুরি শুরু করেছে বিজেপি কর্মীরা। গুজরাতে স্কুল শিক্ষার্থীদের দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সিএএ-র সমর্থনে পোস্টকার্ড লিখতে বাধ্য করার পর, বৃহস্পতিবার একইরকম এক ঘটনা ঘটল বেঙ্গালুরুর এক কলেজে।
ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর কোরামঙ্গল-এর মহিলা কলেজ জ্যোতি নিবাস কলেজে। অভিযোগ, এদিন অনুমতি ছাড়াই ওই কলেজের দেওয়ালে স্থানীয় বিজেপি নেতা এম এম গোবিন্দরাজ-এর সমর্থকরা সিএএ-র সমর্থনে একটি ব্যানার লাগিয়েছিলেন। বেশ কয়েকজন ছাত্রী এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। তাঁরা বলেন কলেজের দেওয়ালে তাঁরা এই ধরণের পোস্টার লাগাতে দেবেন না।
এরপরই বিজেপির নেতাকর্মীরা গলার জোরে তাঁদের দাবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এই ঘটনার একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে এক বিজেপি কর্মী ওই ছাত্রীদের বলছেন, 'তোমরা আদৌ নাগরিকত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন নও। তোমরা শুধু নিজের কথা ভাব। তোমাদের আগে ভারতের কথা ভাবা উচিত। তোমরা ভারতীয় নও'। ছাত্রীদের নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কী সমস্যা সেই প্রশ্নও তোলা হয়। সেই সঙ্গে তাঁরা ওই কলেজের মালিক নন, তাই তাঁদের কলেজের গায়ে ব্যানার লাগাতে বাধা দেওয়ার অধিকার নেই, এমন দাবিও করা হয়।
বিজেপি নেতা-কর্মীদের ওই তীব্র আক্রমণের মুখেও কিন্তু ছাত্রীদের দমিয়ে রাখা যায়নি। কিন্তু এরপরই ছাত্রীদের লক্ষ্য করে বিজেপি কর্মীরা 'পাকিস্তানে যাও' বলে স্লোগান দিতে শুরু করে। ছাত্রীদের অভিযোগ, ওই ব্যানারে স্বাক্ষর করতেও বাধ্য করা হয়। এক ছাত্রী জানিয়েছেন, ক্লাসের শেষে কলেজ থেকে বেরিয়েই কলেজের প্রধান গেটে ওই বিশাল ব্যানার দেখতে পেয়েছিলেন। বিজেপিকর্মীরা তাঁদের সেই ব্যানারে স্বাক্ষর করতে বাধ্য করেন।
আরও পড়ুন - সিএএ-র সমর্থনে মোদীকে চিঠি স্কুলছাত্রদের, ছিঁড়ে ফেললেন অভিভাবকরাই
আরও পড়ুন - বিজেপি বিরোধী জোটে ধাক্কা দিলেন মমতা, ভিত্তি হারাতে পারে সিএএ-বিরোধী আন্দোলন
আরও পড়ুন - নির্যাতিত সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি সহানুভূতিশীল, মোদীর সঙ্গে একমত অমর্ত্য সেন
আরও পড়ুন - অমিত শাহের সভায় সিএএ-বিরোধী পোস্টার, মাথার ছাদ খুইয়ে খেসারত দিতে হল দুই মহিলাকে
এই নিয়ে কলেজে কিছুক্ষণের জন্য ধুন্ধুমার বেঁধে যায়। পরে পুলিশ এসে শিক্ষার্থী ও বিজেপি কর্মী উভয় পক্ষকেই সেখান থেকে সরিয়ে দেয়। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার ওই কলেজে আসেন কংগ্রেস বিধায়ক রামলিঙ্গা রেড্ডি। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে তিনি জানান, 'সিএএ-র পক্ষে বা বিপক্ষে যে কোনও স্বাক্ষর সংগ্রহের কাজ কলেজ ক্যাম্পাসের বাইরে হওয়া উচিত'। আরও বলেন নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো কোনও হিংসাত্মক ঘটনা তিনি এই কলেজে ঘটতে দেবেন না।