বিহারের মধুবনী জেলার একটি গ্রামের কাছে মিলল ২২ বছর বয়সী সাংবাদিক এবং আরটিআই কর্মীর মৃতদেহ। ওই যুবককে চার দিন আগে অপহরণ করা হয়েছিল।
প্রাণ দিয়ে সাহসিকতার মাশুল গুণতে হল সাংবাদিককে। বিহারের (Bihar) মধুবনী জেলার একটি গ্রামের কাছে মিলল ২২ বছর বয়সী সাংবাদিক (22-year-old journalist) এবং আরটিআই কর্মীর (RTI Activist) মৃতদেহ (Body Of Bihar Journalist)। ওই যুবককে চার দিন আগে অপহরণ করা হয়েছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় রাস্তার ধারে মিলল তাঁর জ্বলে যাওয়া অগ্নিদগ্ধ দেহ। কে বা কারা রাস্তার ধারে তাঁর দেহ ফেলে রেখে যায়, সে বিষয়ে অবশ্য কিছু জানাতে পারেনি পুলিশ।
বুদ্ধনাথ ঝা ওরফে অবিনাশ ঝা স্থানীয় একটি নিউজ পোর্টালের একজন সাংবাদিক ছিলেন। তিনি একটি ফেসবুক পোস্ট আপলোড করার দুই দিন পরে নিখোঁজ হয়ে যান। এই পোস্টে একটি মেডিকেল ক্লিনিকের নাম দিয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট করেন। এই ক্লিনিকটিকে ভুয়ো ক্লিনিক বলে তুলে ধরেন তিনি। তাঁর এই রিপোর্টের পর বেশ কয়েকটি ক্লিনিকের কাজ বন্ধ হয়ে যায় ও বেশ কয়েকটি ক্লিনিককে প্রচুর জরিমানা দিতে হয়। এরপরেই রোষের মুখে পড়েন ওই সাংবাদিক।
তার রিপোর্টিং চলাকালীন বুদ্ধনাথ অসংখ্য হুমকি এবং লাখ লাখ ঘুষের প্রস্তাব পেয়েছিলেন, যার কোনটিই তাকে তার কাজ থেকে বিরত করেনি। বেনিপট্টির লোহিয়া চকের কাছে তার বাড়ির কাছে লাগানো একটি সিসিটিভির ফিডে মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে তাকে শেষ দেখা গিয়েছিল। শহরের থানা থেকে তার বাড়ি ৪০০ মিটারেরও কম দূরে।
ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গিয়েছে যে তিনি তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন। বাড়ির সামনের সরু গলি দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বড় রাস্তায় ওঠেন তিনি। তাঁর গলায় ছিল উজ্জ্বল হলুদ রংয়ের একটি স্কার্ফ। রাত নটা আটান্ন মিনিট নাগাদ মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে লোহিয়া চক, অন্য একটি বাড়ি এবং বেনিপট্টি থানার পাশ দিয়ে হেঁটে যান।
শেষবার তাঁকে দেখা যায় রাত ১০.০৫ থেকে ১০.১০য়ের মধ্যে। স্থানীয় বাজারে একজন লোক তাকে দেখেছিলেন। এর পরেই তাঁকে আর কেউ দেখতে পাননি। পরের দিন তার পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠলে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। তার মোটরসাইকেলটি বাড়িতে ছিল। কিন্তু তার ক্লিনিক খোলা ছিল এবং তার ল্যাপটপ চালু ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান বুদ্ধনাথ মঙ্গলবার গভীর রাতে বা বুধবার ভোরে কোনো কাজে বেরিয়েছিলেন এবং তিনি ফিরে আসবেন বলেই ভেবেছিল তাঁর বাড়ির লোক। কিন্তু তিনি ফিরে আসেননি।
Rahul Gandhi-হিন্দুত্ব মানেই শিখ-মুসলিমকে পেটানো, বিজেপিকে কটাক্ষ রাহুল গান্ধীর
Climate Summit-জলবায়ু চুক্তির বিরোধিতায় ২১টি দেশ, কোন প্রশ্নে এককাট্টা ভারত-চিন
পরের দিন বেলা গড়ালেও বুদ্ধনাথ না ফেরায় পরিবারের উদ্বেগ বাড়ে। তাঁরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। এরপরেই তদন্তে নামে পুলিশ। ট্র্যাক করা হয় তাঁর মোবাইল ফোন। দেখা যায় বেনিপট্টি থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার পশ্চিমে বেতুন গ্রামে বুধবার সকাল ৯টায় এটি চালু করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে পুলিশ আর নতুন কোনও সূত্র খুঁজে পায়নি।
বৃহস্পতিবারও কোনও খোঁজ মেলেনি বুদ্ধনাথের। ১২ই নভেম্বর শুক্রবার স্থানীয় বাসিন্দা ও বুদ্ধনাথের আত্মীয় বি জে বিকাশ বেটাউন গ্রামের মধ্যে দিয়ে যাওয়া হাইওয়েতে একটি লাশ পাওয়া গেছে বলে খবর পান। কিছু আত্মীয় এবং প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ সেখানে গিয়ে বুদ্ধনাথের মৃতদেহ দেখতে পায়। তার আঙুলে একটি আংটি, তার পায়ে একটি চিহ্ন এবং গলায় একটি চেন দেখে দেখে সনাক্ত করা হয় বুদ্ধনাথের দেহটিকে। পরিবারের সম্মতিক্রমে, মৃতদেহটি তাৎক্ষণিক ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। তারপর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। রবিবার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।