মঙ্গলবারই দেশের কোভিড পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দেশ জুড়ে সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 'মক ড্রিল' চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে উপস্থিত থাকবেন তিনি।
দেশে ফের উদ্বেগ বাড়াচ্ছে করোনা। গতকালই আগরায় চিন ফেরত এক ব্যক্তির কোভিড পজিটিভ আসাকে কেন্দ্র করে নতুন করে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া কলকাতায়ও ব্যাঙ্কক ও কুয়ালা লামপুর থেকে আসা দুই ব্যক্তির পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে। বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া বিমানবন্দরে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ১২ জনের। এরা প্রত্যেকেই বিদেশ ফেরত। চিনের পর কি তবে এবার নতুন করে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে ভারতেও? পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সব রকমের চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। মঙ্গলবারই দেশের কোভিড পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে দেশ জুড়ে সমস্ত স্বাস্থ্যকেন্দ্রে 'মক ড্রিল' চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে উপস্থিত থাকবেন তিনি। এই 'মক ড্রিল'-এ অংশ নেবেন সমস্ত রাখ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রীরাও।
শুধু মেট্রো সিটিগুলিতে নয়, সংক্রমণ বাড়ছে জেলাগুলিতেও। সবচেয়ে বেশি আশঙ্কায় পর্যটনকেন্দ্রগুলি। ইতিমধ্যেই গয়ায় কোভিড পজিটিভ এসেছে বুদ্ধগয়া ভ্রমণে আসা চার বিদেশী যাত্রীর। আপাতত আইসোলেশনে রাখা হয়েছে তাঁদের। এই পরিস্থিতিতে আজই ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিদের ভার্চুয়াল বৈঠক করবেন কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবিয়া। এই পরিস্থিতির মধ্যেই রোজ বাড়ছে দেশের দৈনিক কোভিড সংক্রমণও। সোমবার সকালে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী রবিবারের তুলনায় সোমবার সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। সংমণের দিক থেকে এগিয়ে মহারাষ্ট্র। দিল্লি এবং মুম্বইতে নর্দমায় ভাইরাসের আরএনএ পাওয়া গিয়েছিল আগে। ক্রিসমাসের পর দেশজুড়ে আরও বাড়ল সংক্রমন। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ২৩১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। পাশাপাশি উদ্বেগ বাড়িয়ে আগ্রায় হদিশ মিলেছে এক করোনা আক্রান্তের। জানা যাচ্ছে চিন থেকে সদ্য ফিরেছিলেন তিনি। সোমবার সকালে এই খবর রীতিমত চিন্তায় ফেলেছে প্রশাসনকে। সংক্রমণ রুখতে বিমানবন্দরগুলিতে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি সতর্কতা। একাধিক রাজ্যে কোভিড বিধি মেনে চলার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রিপোর্ট অনুযায়ী শনিবার দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২০১ জন। এরপর থেকে প্রত্যেকদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। রবিবার বড়দিনের দিন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা এক লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ২২৭-এ। সোমবার তা আরও বেড়ে হয় ২৩১ জন। যদিও স্বস্তির খবর গত ২৪ ঘন্টায় করোনায় মৃতের সংখ্যা শূন্য। চিন্তা বাড়াচ্ছে মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব ও রাজস্থানের দৈনিক সংক্রমণ হার। সংক্রমণ রুখতে হিমাচল প্রদেশে ইতিমধ্যেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে মাস্ক পরা। দেশের কোভিড পরিস্থির কথা মাথায় রেখে বাইরে থেকে আগত পর্যটকদের মাস্ক পরার অনুরোধ করেছিলেন হিমাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিংহ সুখু। তবে বছর শেষে হিমাচলে পর্যটকদের আগমণ ও দেশের কোভিড পরিস্থির কথা মাথায় রেখে এবার সরকারি নির্দেশিকা জারি করে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করল হিমাচল সরকার। নতুন করে কোভিড সংক্রমণ রুখতে মরিয়া সরকার। রাজ্যে রাজ্যে নেওয়া হচ্ছে বিশেষ সতর্কতাও।
আরও পড়ুন -
বড়দিনের পরই বাড়ল করোনা সংক্রমণ, গত ২৪ ঘন্টায় দেশে নতুন করে আক্রান্ত কতজন?
হিমাচলে বাধ্যতামূল মাস্ক, পর্যটনের মরশুমে সংক্রমণ এড়াতে কড়া পদক্ষেপ সরকারের
বছরের শেষ সপ্তাহেও দেখা নেই শীতের, চলতি বছরে কি ঠান্ডার আমেজ পাবে না বঙালি?