ডিজিটাল দুনিয়ায় পাতা রয়েছে আধুনিক প্রেমের ফাঁদ। পা দিলেই সর্বনাশ। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য সামনে উঠে এসেছে।
ডিজিটাল দুনিয়ায় পাতা রয়েছে আধুনিক প্রেমের ফাঁদ। পা দিলেই সর্বনাশ। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু তথ্য সামনে উঠে এসেছে। নিঃসন্দেহে চিন্তায় প্রশাসনও। কয়েকদিন আগেই ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে এক যুবক খুইয়েছেন প্রায় ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা। সুন্দরী এক তরুণীর সঙ্গে সময় কাটাতে চেয়েছিলেন তিনি। তার বদলে হয়েছে পকেট ফাঁকা। ক্যাফের বিল দিতে গিয়ে খরচ ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা।
সেই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের অনুমান, দেশের বিভিন্ন শহরে এইরকম প্রতারণার জাল বিস্তার করেছে একাধিক চক্র। যদিও অনেকেই অবশ্য বিষয়টি চেপে যাচ্ছেন। আসলে ডেটিং-এর টানে অনেকেরই এই অবস্থা হচ্ছে।
সূত্র মারফৎ জানা যাচ্ছে, ভুক্তভোগীরা বেশিরভাগই টিন্ডার (Tinder), বাম্বল (Bumble), হিঞ্জ (Hinge) এবং ওকেকিউপিড-এর (OKCupid) মতো অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে পুরুষ অথবা মহিলা সঙ্গীর সঙ্গে ডেট করতে চান। প্রথমে শুরু হয় সাধারণ কথাবার্তা। তারপর দুজনে মিলে একদিন ঠিক করেন, যেদিন দেখা করবেন। অর্থাৎ ফিক্স দ্য ‘ডেটিং’।
কিন্তু সেই ‘ডেটিং’-এর দিনই নেমে আসে ঘোর বিপত্তি। জানা যাচ্ছে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ফাঁদে পা দিয়েছেন পুরুষরাই। শেষ ঘটনাটিতে দেখা যাচ্ছে, সেই মহিলার ঠিক করা ক্যাফেতে বা পাবে দেখা করেন তাঁর পুরুষ সঙ্গী। তারপর একের পর এক খাবার কিংবা ড্রিঙ্কস অর্ডার করতে থাকেন সঙ্গে থাকা সেই তরুণী।
তাঁর মন পেতে পুরুষ সঙ্গীও কার্যত সবটা মেনে নেন। আচমকা জরুরি কাজ আছে বলে ক্যাফে ছেড়ে চলে যান সেই মহিলা। কিন্তু অদ্ভুতভাবে এরপর প্রকৃত অর্ডারের তুলনায় ৫ কী ৭ গুণ বেশি বিল হাতে পেতেই চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় সেই পুরুষ সঙ্গীর।
কিন্তু এত বড় বিল দেখে প্রতিবাদ করেন তিনি। যদিও ক্যাফে কর্তৃপক্ষের চাপে এবং বাউন্সারদের হুমকির মুখে ওই টাকা দিতে বাধ্য হন পুরুষ সঙ্গীটি। তবে এইরকম একটি নয়, একাধিক ঘটনা নজরে আসছে দেশের নানা প্রান্তে।
এই কয়েকদিন আগেই আরও একটি ঘটনা ঘটেছে। দিল্লীর এক আইএএস পরীক্ষার্থী একইভাবে প্রতারিত হন। ক্যাফের মালিক অক্ষয় পাহওয়া এবং ‘ডেট’ করা তরুণী আফসানা পারভিনকে এই ঘটনায় গ্রেপ্তারও করেছে পুলিশ। তদন্তকারীদের কথায়, “পুরোটাই একটা প্রসেস মেনে হয়। ক্যাফে মালিক, ম্যানেজার এবং মহিলারা মিলে প্রথমে টার্গেট ঠিক করেন।”
আধিকারিকরা বলছেন, “তারপর লক্ষ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেওয়া হয় সেই পুরুষদের থেকে। আপাতদৃষ্টিতে পুরো বিষয়টি দেখে মনে হবে যেন, ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমেই হচ্ছে। কিন্তু আসলে এটা বড়সড় একটা চক্রান্ত। আড়ালে রয়েছে সব তাবড় তাবড় কুশীলবরা।”
জানা যাচ্ছে, সেই টাকা নাকি আবার ভাগও হয় সবার মধ্যে। দিল্লীর এই ঘটনাটিতে বিল হয়েছিল ৪০ হাজার টাকা। জিজ্ঞাসাবাদের পর ক্যাফে মালিক জানান, বিলের ১৫ শতাংশ পায় ‘ডেট’করা মহিলা, ৪৫ শতাংশ পায় ম্যানেজার এবং ক্যাফের বাকিরা। আর বাকি ৪০ শতাংশ পান ক্যাফে মালিক।
আর এইসব গজিয়ে ওঠা ক্রাইম নিয়ে এখন বেজায় চিন্তায় প্রশাসন।
আরও খবরের জন্য চোখ রাখুন এশিয়ানেট নিউজ বাংলার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যানেলে, ক্লিক করুন এখানে।