আইএফএ ঘোষণা করেছে স্থানীয়ভাবে তৈরি যুদ্ধ বিমান বহরকে দক্ষিণ ভারত থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে নিয়ে আসা হবে। বিমান বাহিনীর এই সিদ্ধান্ত পার্বত্য এলাকায় তেজসের পাইলটদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম করবে।
তেজস হল পুরনো যুদ্ধ বিমানগুলির মধ্যে অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি যুদ্ধ বিমান। এটি বিশ্বের সবথেকে কমপ্যাক্ট ৪.৫ প্রজন্মের যুদ্ধ বিমান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। সম্প্রতি ভারতীয় বিমান বাহিনী তেজস যুদ্ধ বিমানকে কাশ্মীর উপত্যায়ের মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূলত অভ্যন্তরীন নির্মিত এলসিএ তে তেজস রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি ভারতের সবথেকে উঁচু সীমান্ত। মনেরাখার দরকার কাশ্মীরের দুই দিকে রয়েছে দুই প্রতিপক্ষ চিন ও পাকিস্তান।
রবিবার ৩০ জুলাই ২০২৩, আইএফএ ঘোষণা করেছে স্থানীয়ভাবে তৈরি যুদ্ধ বিমান বহরকে দক্ষিণ ভারত থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলে নিয়ে আসা হবে। বিমান বাহিনীর এই সিদ্ধান্ত পার্বত্য এলাকায় তেজসের পাইলটদের যুদ্ধের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে সক্ষম করবে। যা দক্ষিণ বা পশ্চিম ভারতের সমভূমি বা মরুভূমি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
২০২৫ সালের মধ্যে সোভিয়োট যুদ্ধের MIG-21s-এর ফেড আউটের ফলে ভারতীয় বিহান বাহিনীতে ফাইটার জেটের ঘাটতি হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতেই এলএসিতে তেজস স্কোয়াড্রন বহরকেই প্রধান ভিত্তি করার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। পাশাপিশ এটি কেন্দ্রীয় সরকারের আত্ননির্ভর ভারত প্রকল্পের সঙ্গে রীতিমত সামঞ্জস্যপূর্ণ।
তেজস- সামরিক অভিযানে ভূমিকা
হিন্দুস্থান অ্যারোনটক্স লিমিটেড বা এইচএএল -অনুসারে এলসিএ -তে তেজস একটি বহুমুখী বা মাল্টিরোলার যুদ্ধবিহান হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ। যা বিভিন্ন আবহাওয়া, পরিস্থিতিতে কাজ করতে পারে। ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দাবি তেজস যুদ্ধ বিমানকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেটি স্থল বাহিনীকে আরও বেশি করে সাহায্য করে। শত্রুর বিমানের বিহরুদ্ধে আক্রমণাত্মর ভূমিকা গ্রহণ করে। পাশাপাশি সামুদ্রিক অভিযানেও সাহায্য করে।
উন্নত বৈশিষ্ঠ্যের একটি পরিসীমা সহ এলসিএ তেজস প্রতিপক্ষের জোটের বিরুদ্ধে ভারতীয় বাহিনীকে আরও বেশি শক্তিশালী করে তুলতে পারে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তথ্য অনুসারে তেজস - এ বেশি কিছু উন্নত বৈশিষ্ঠ্য রয়েছে। যেমন, এটি আরও ভাবে সনাক্তকরণের জন্য AESA রাডার, একটি EW স্যুট যাতে ব়্যাডার সতর্কতা ও স্ব-সুরক্ষা জ্যামিং নেভিগেশনের জন্য একটি ডিজিটাল ম্যাপ জেনারেটর, স্মার্ট মাল্টি ফাংশন ডিসপ্লে রয়েছে। উন্নত তথ্য দেওয়া ও যোগাযোগের জন্য় কম্বাইন্ড ইন্টারোগেটর ও ট্রান্সপন্ডার , একটি উন্নতমানের রেডিও আলটিমিটার রয়েছে। তেজসের এই সুবিধেগুলিই এই যুদ্ধ বিমানকে অন্যগুলি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দেয়।
তেজস-এর স্বতন্ত্র
ভারতের দেশীর যুদ্ধবিমান, এটির গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৭৫ কিলোমিটার। এটি ১৩৫০০ কেজি পেলোড ক্ষমতা বহন করতে পারে। এটি ১৫ কিলোমিটা উচ্চতা পর্যন্ত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করতে পারে। যেসব মিসাইল গুলি তেজস থেকে ব্যবহার করা যায় তার তালিকাঃ
এয়ার-টু - এয়ার মিসাইল R-73 এবং ASRAAM
এয়ার টু সারফেস মিসাইল যেমন ব্রহ্মোস এনজি, অ্যান্ট রেডিয়েশন মিসাইল রুদ্রম -১ ও এএএসএফ হ্যামার
অ্যান্টি শিপ মিসাইল যেমন Kh-35
মেক ইন ইন্ডিয়া ফাইটার জেটের বিভিন্ন অস্ত্র বহন ও তা ব্যবহার করার ক্ষমতা রয়েছে। প্রতিপক্ষের বাঙ্কার, লুকানো জায়গা, অস্ত্র ও গোলাবারুদের ডিপো ও বিমান ঘাঁটি চিহ্নিত করতে পারে।
ফাইটার জেটটি লং রেঞ্জ বিয়ন্ড ভিজ্যুয়ালল রেঞ্জ অস্ত্রগুলি চালানোর জন্য সজ্জিত, যার মানে এটি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করতে পারদর্শী। পাইলটের দৃষ্টি সীমার বাইরে থাকা টার্গেটেও আঘাত করতে সফল তেজস। এটির ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ অস্ত্রও বহন করতে পারে। এই ক্ষমতাও তেজসকে অন্য সব কিছু থেকে আলাদা করে দিয়েছে।
ভারতের তেজস বিমান
বর্তমানে, IAF তিনটি স্বতন্ত্র বিমানের মডেল পরিচালনা করে, যথা মার্ক 1, মার্ক 1A, এবং একটি প্রশিক্ষণ বৈকল্পিক। ২০২১ সালে, ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রক HAL-এর সাথে 83 LCA Mk-1A বিমানের জন্য বহু-বিলিয়ন ডলারের চুক্তি সুরক্ষিত করেছিল। ২০২৩ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, HAL ইতিমধ্যেই ভারতীয় বিমান বাহিনীকে 40 MK-1 জেট সরবরাহ করেছে।
LCA MK-1A তেজসের প্রাথমিক রূপের একটি আপগ্রেড সংস্করণ উপস্থাপন করে, আধুনিক যুদ্ধের জন্য প্রয়োজনীয় উন্নত এভিওনিক্স এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বৈশিষ্ট্যের অভাব রয়েছে।
এর আগের সংস্করণের বিপরীতে, HAL বলে যে LCA Tejas Mk-1A একটি 'নেটওয়ার্ক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম' দিয়ে সজ্জিত। এই সিস্টেমে যোগাযোগের জন্য সফ্টওয়্যার-সংজ্ঞায়িত রেডিও , প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থার জন্য একটি ইলেকট্রনিক যুদ্ধ ব্যবস্থা, বর্ধিত নাগালের জন্য ভিজ্যুয়াল রেঞ্জের বাইরে ক্ষেপণাস্ত্র এবং উন্নত রাডার ক্ষমতার জন্য একটি উন্নত বৈদ্যুতিনভাবে স্ক্যান করা অ্যারে এর মতো প্রয়োজনীয় উপাদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এই সংযোজনগুলো বিমানের কর্মক্ষমতা এবং যুদ্ধের কার্যকারিতা বাড়ায়।
HAL বর্তমানে LCA Mk2 নামে পরিচিত একটি মাঝারি ওজনের ফাইটার তৈরিতে কাজ করছে, যা ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য তৈরি। বিমানটির প্রথম ফ্লাইটটি ২০২৫ সালের জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
আরও পড়ুনঃ
মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি, রাষ্ট্রপতির দরবারে হরিয়ানা উদ্বেগ বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র
ভিডিও দেখেই খুনের ছক! ক্লাসের মধ্যেই দশম শ্রেণির ছাত্রকে কুপিয়ে খুন করল সহপাঠী