সংক্ষিপ্ত
অভিযুক্ত ছাত্র তার সহপাঠীকে হত্যা করার প্রায় চার সপ্তাহ আগে থেকেই Google এবং YouTube-এ খুন সম্পর্কিত নানা তথ্য সার্চ করেছে। দেখেছে একাধিক ভিডিও।
কানপুরের একটি স্কুলে দশম শ্রেণির এক ছাত্র স্কুলের মধ্যেই সহপাঠীর গলা কেটে খুন করল। এই ঘটনার এক দিন পরেই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। ঘটনার পরই কানপুর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তাতেই সামনে এসেছে অভিযুক্ত কিশোর Google এবং YouTube-এ 'খুনের পদ্ধতি' সার্চ করেছে। সেখান থেকেই খুন করার পদ্ধতি শিখে তারপরই বন্ধুকে হত্যা করেছে বলে পুলিশ অনুমান।
তদন্তকারীদের মতে , অভিযুক্ত ছাত্র তার সহপাঠীকে হত্যা করার প্রায় চার সপ্তাহ আগে থেকেই Google এবং YouTubeএ খুন সম্পর্কিত নানা তথ্য সার্চ করেছে। দেখেছে একাধিক ভিডিও। এক জন ব্যক্তিকে কী করে হত্যা করা হয় সেই সম্পর্কিত সার্চ হয়েছে সব থেকে বেশি। পুলিশ জানিয়েছে আক্রান্তের শরীরে ৬টি ক্ষত ছিল। যার মধ্যে শ্বাসনালীর ক্ষত ছিল প্রায় পাঁচ ইঞ্চি গভীর। অভিযুক্ত যে ভিডিওগুলি দেখেছিল সেই ভিডিওগুলির মত করেই সে খুন করেছে বলে পুলিশের দাবি। তাই প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান Google এবং YouTube সার্চ করে তারপরই পরিকল্পনা করেই হত্যা করে।
ঘটনার পর সহকারী পুলিশ কমিশনার দীনেশ শুক্লা জানিয়েছেন, অভিযুক্ত ছাত্র তার সহপাঠীকে খুন করার পরিকল্পনা করেছিল। কারণ দুজনের মধ্যে নিয়মিত সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। একজন খুন করলেও পরিকল্পনা কিন্তু বেশ কয়েক জন মিলে করেছিল তেমনই অনুমান পুলিশের। সেই কারণে অভিযুক্ত ও তার বন্ধুরা আত্মীয়দের মোবাইলে গত এক মাস ধরে ক্রমাগত খুনের ভিডিও সার্চ করেছিল আর দেখেছিল। তিনি আরও বলেছেন, অভিযুক্ত খুনের পদ্ধতি ভালভাবে রপ্ত করে তারপরই হত্যা করে সহপাঠীকে। পুলিশ আরও জানিয়েছে, তাদের কাছে একাধিক সাইটের নাম রয়েছে যেগুলি অভিযুক্তরা নিয়মিত সার্চ করেছিল। কোন কোনও ভিডিও দেখেছে তাও জানতে পেরেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় অভিযুক্তকে লাগাতার জেরা করা হচ্ছে। জেরার সময়ই অভিযুক্ত জানিয়েছে, ঘাড়ে ছুরির কোপ দিলে একজন সহজে খুন করা যায়। ইন্টারনেট সার্চ করে সে জেনেছে এটি সহজ পদ্ধতি। অভিযুক্ত আরও জানিয়েছে, 'আমি প্রথম সহপাঠীকে চেপে ধরেছিলাম। তারপর তার ঘাড়ে আলতো করে একটা ছুরির কোপ বসাই। তাতে সহপাঠি কিছুটা হলেও কাহিল হয়ে পড়ে। তারপরই জোরে জোরে কোপ মারি।' অভিযুক্ত আরও জানিয়েছে, বাজার থেকে সে নতুন ছুরিও কিনেছিল। ছুরিটি আয়োতনে বড় হওয়ায় ব্যাগে করে লুকিয়ে ক্লাসের মধ্যে নিয়ে এসেছিল।
মণিপুর নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি, রাষ্ট্রপতির দরবারে হরিয়ানা উদ্বেগ বিরোধী জোট ইন্ডিয়া-র
জিজ্ঞাসাবাদের সময় সে আরও জানিয়েছে, নিহত সহপাঠী তারই স্কুলের একটি ১২ ক্লাসের ছাত্রীর সঙ্গে প্রেম করেছিল। সেই মেয়েটির সঙ্গে সেও কথা বলত। সেই কারণে তার সহপাঠী প্রায়ই তাকে খুন করে ফেলার হুমকি দিত। অভিযুক্ত আরও জানিয়েছে, সোমবার স্কুল ছুটির পরই পরিকল্পনা মাফিক সহপাঠীকে আক্রমণ করা হয়।
হরিয়ানার নুহর সংঘর্ষের আঁচ এবার গুরুগ্রামে, ধর্মীয় স্লোগান তুলে হোটেল-দোকানে ভাঙচুর আগুন
অভিযুক্ত পুলিশকে আরও জানিয়েছে, সহপাঠীর হুমকির কারণে সে সর্বদা ভয়ে ভয়ে থাকত। সে ভয় মুক্ত হয়ে বাঁচতে চেয়েছিল। তাই সহপাঠীকে দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করে। সহপাঠী তাকে একাধিকবার খুনের হুমকি দিয়েছিল। সেই কারণেই সে পাল্টা আক্রমণের প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছিল। সহপাঠীর বান্ধবীর সঙ্গে তারও বন্ধুত্ব ছিল। কিন্তু তাতে চটে গিয়ে সহপাঠী প্রায়ই তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করত বলেও জানিয়েছে অভিযুক্ত।
পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, তদন্তের সময় পুলিশ দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীর একটি নোটবুক খুঁজে পেয়েছে। সেখান থেকেই স্পষ্ট অভিযুক্তের মেয়েটির প্রতি দুর্বলতা ছিল। তাকে ঘিরে দুই ছাত্রের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিহতের বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হবে। অভিযুক্তের বয়স নির্ধারণের পরীক্ষা করা হবে। যদিও আধার কার্ড অনুযায়ী অভিযুক্তের বয়স এখন ১৩। তাই অভিযুক্তকে এখন হোমে পাঠান হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সিসিটিভি ফুটেজ ক্লাস রুম থেকেই উদ্ধার করা হয়েছে। সেটিও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ।