
দলিত থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের উপর নির্যাতনের ঘটনা উত্তরপ্রদেশে নতুন কোনও বিষয় নয়। ফের তেমনই এক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তরপ্রদেশের বরেলির শাহজাহানপুর। সম্প্রতি শাহজাহানপুরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, এক নেতা বেশ কিছু দলবল নিয়ে গিয়ে এক ব্যক্তিকে নির্মমভাবে মারধর করছেন। এমনকী, বন্দুক উঁচিয়ে সেই ব্যক্তিকে হুমকিও দেওয়া হয়। তারপরই চলে বেধরক মার। মুরগি বানিয়ে শাস্তিও দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। শাস্তির চোটে ওই ব্যক্তি হাতজোড় করে অনুরোধ করেছিলেন, যেন তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু, তাঁর কোনও কথাই শোনা হয়নি। এদিকে ঘটনার বেশ কিছু দিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয় ভিডিওটি। আর তা দেখার পরই তৎপর হয় যোগী পুলিশ। খুঁজে বের করা হয় ওই আক্রান্ত ব্যক্তিকে। জানা যায় তাঁর নাম রাজীব ভরদ্বাজ। তিনি শাহজাহানপুরের সদর বাজার থানা এলাকার বাসিন্দা।
কিন্তু, কেন তাঁকে মারধর করা হয়?
জানা গিয়েছে ঘটনাটি বেশ পুরোনো। আসলে এতদিন ভয় চুপ করে ছিলেন রাজীব। ঘটনার কথা কাউকেই তিনি জানাননি। পরে কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় ওই মারধরের ভিডিও আপলোড করে দেন। তারপরই বিষয়টি জানা যায়। এরপরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। রাজীব জানিয়েছেন, "প্রতীক তিওয়ারি এবং অন্যরা শাসক দলের (বিজেপি) সঙ্গে যুক্ত। আমি তাঁদের কাছে কাজ করি। সেখানেই আমাদের সঙ্গে এক যুবকও কাজ করত। কয়েকদিন আগেই সে ১৬ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়ে যায়। তার খোঁজ জানতেই আমাকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রতীক তিওয়ারি। ওই যুবক কোথায় পালিয়ে গিয়েছে তা জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু, আমি তার কোনও খবর জানি না। তাই দিতে পারিনি। তারপরই আমাকে মারধর করেন। খুব মারেন। প্রায় ১ থেকে দেড় ঘণ্টা পর আমাকে ছাড়েন। তবে হুমকি দিয়েছেন। ঘটনার কথা কাউকে জানালে, প্রাণে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছেন।"
আরও পড়ুন- গুজরাট উপকূলে পাকিস্তানি নৌকা, বাজেয়াপ্ত দেড় হাজার কোটি টাকার মাদক
আরও পড়ুন, 'বাঁচার সম্ভাবনা কম, ওঁকে মেরে ফেলা হতে পারে,' অনুব্রতকে নিয়ে বিস্ফোরক দিলীপ ঘোষ
এই ঘটনা প্রসঙ্গে শাহজাহানপুরের এসপি সঞ্জয় কুমার বলেন, মারধরের ঘটনায় প্রতীক তিওয়ারি-সহ ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। যেই ব্যক্তিকে মারধর করা হয়েছিল তাঁর বয়ানের ভিত্তিতেই সবার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তার মধ্যে থেকে একজন অভিযুক্তকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আর বাকিদের খোঁজে শুরু হয়েছে তল্লাশি।
আরও পড়ুন, নির্যাতিতার মৃতদেহ দাহ করতে জোর খাটিয়েছিল, হাঁসখালি ধর্ষণকাণ্ডে সিবিআরও জালে আরও ৩
তৃণমূলের তরফেও এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হয়। আর ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা হয়, "যোগী রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। বন্দুক, হিংসা, অমানবিকতা। ভেঙে পড়া আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, এগুলোই বিজেপির প্রতীক!"