এক সপ্তাহের জাতীয় রাজনীতিতে ঘটে যাওয়া একাধিক ঘটনা। যা কখনও প্রকাশ পায় আবার কখনয়ও প্রকাশ পায় না।
স্বপ্নের ব্যবসায়ী
ভারত জোড়ো যাত্রার পর কিছুটা হলেও চাঙ্গা কংগ্রেস। রায়পুরে কংগ্রেসের ৮৫তম প্লেনারি অধিবেশনে সেই ছবি ফুটে উঠেছে। কারণে রীতিমত স্বপ্নে বিভোর কংগ্রেস ২০২৪ সালে একাই বিজেপিকে বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা বলছে। তৃতীয় ফ্রন্টের সূত্রকে কার্যত নাকচ করে দিয়েছে।
কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা কংগ্রেসের এই মন্তব্য শুনে হাসি না চেপে পারছেন না। কারণ স্ক্যানারের তলায় রয়েছে মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, কর্নাটক আর ছত্তিশগড়। ২০২৪ সালের আগেই এই চার রাজ্যে নির্বাচন। প্রতিটি রাজ্যে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রীতিমত বড় আকার নিয়েছে।
কর্নাটক কংগ্রেসে সিদ্ধারামাইয়ার সঙ্গে শিবকুমার ওরফে ডিকের টাগ-অব ওয়ার চলছে। রাজস্থানে যুদ্ধ চলছে শচীন পাইলট আর অশোক গেহলটের মধ্যে। বার্ধক্যভারে জীর্ণ অশোক গেহলট মনে করেন তিনি রাজ্যের সবথেকে যোগ্য মুখ্যমন্ত্রী। মধ্যপ্রদেশ আর ছত্তিশগড়ের পরিস্থিতিও খুব খারাপ। কারণ সেখানেই অন্তর্দ্বন্দ্ব বাড়ছে। ছত্তিশগড়ে কংগ্রেসের মাথাব্যাথার কারণ হতে পারে এসসিং দেও। ভূপেশ বাঘেলাকে বিপাকে ফেলতে তিনি কী তাস ব্যবহার করবেন তা এখনও কারও জানা নেই। মধ্যপ্রদেশের ক্ষমতা কমলনাথের হাতে। যিনি কোন পথে হাঁটবেন তা স্পষ্ট নয়।
হনুমানের চিঠিতে বাইবেল
প্রার্থনাই সহজ ছিল। সাত দিনের মধ্যে ত্যাগ করুন না হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। কিন্তু স্বাভাবিক আইনি নোটিশকে একটি অসাধারণ করে তোলে প্রাপকের নাম। প্রাপকের নাম হল- ভগবান বজরঙ্গী ওরফে হনুমান।
ইনি সেই হনুমান যিনি প্রতিকূলতাকে পার করে সীতামায়ের সন্ধান এনে দিয়েছিলেন। রাবন রাজের লঙ্কায় একটি সার্জিক্যাল স্ট্রাইক করেছিলেন। রেওয়ের মতে লর্ড মধ্যপ্রদেশের মোরেনায় রেলওয়ের জমি দখল করে রেখেছে। নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও তিনি রেলওয়ের জমি খালি করে অন্য কোথাও লাফ মারতে নারাজ। যদিও রেলওয়ের নোটিশে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে যদি মন্দির ভাঙতে হয় সেই খরচও বহন করতে হবে 'প্রভু'কে। লর্ডের উপর দেওয়া নোটিশটি ভাইরাল হয়ে গেছে কারণ এটি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ``ডাবল ইঞ্জিন'' শক্তির সাথে ছুটে গেছে। শীঘ্রই নোটিশ প্রত্যাহার করা হয় এবং প্রধান পুরোহিতের নামে একটি নতুন জারি করা হয়।
তবে ভগবান হনুমান তাঁর দুর্দশার জন্য লেখা চিঠিতে আবার বাইবেলের বাক্যাংশ ধার করেছেন। তিনি লিখেছেন, 'তাদের ক্ষমা করুন। কারণ তারা জানে না তারা কি করছে।'
ভুল নম্বর
২০,০০০ টাকা দামের মোবাইল ফোন ট্রেস করার জন্য কেউ ২ লক্ষ টাকা বিলিয়ে দিতে প্রস্তুত হবে। প্রশ্ন থাকবে যখন একজন রাজনৈতিক নেতা তার ফোন ট্রেস করার জন্য পুলিশকে নিশানা করে। যেটি মেলার সময় তার পকেট থেকে খোয়া গিয়েছিল। অন্য এক রাজনৈতিক নেতা আবার ১ লক্ষ টাকা দামেপ আইফোন হারিয়েছিলেন। কিন্তু সহকর্মীদের মত তিনি ততটা উদ্বিগ্ন ছিলেন না।
দুই নেতাই তাদের অন্যান্য অনেক লোক ম্যাঙ্গালুরুতে একটি মেলায় মূল্যবান জিনিসপত্র হারিয়েছে। অনেকে হার্ড ক্যাশ হারিয়েছে- তারপরেও মুখে আঙুল দিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে পুলিশের দাবি পকেটমার স্মার্ট। প্রায় ১৫ জন নেতার পকেট কেটে ফাঁক করেছে। তবে কেউ অভিযোগ দায়ের করতে চায়নি। হয়তো তারা এটাকে জনগণের অর্থের অপব্যবহার বলে মনে করেছে। এমনকি টিট-ফর - ট্যাট তত্ত্বের কথাও বলেছে অনেকে।
নিশ্চল ফ্রেম
লর্ডের উপর দেওয়া নোটিশটি ভাইরাল হয়ে গেছে কারণ এটি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে ``ডাবল ইঞ্জিন'' শক্তির সাথে ছুটে গেছে। শীঘ্রই নোটিশ প্রত্যাহার করা হয় এবং প্রধান পুরোহিতের নামে একটি নতুন জারি করা হয়। যোগী রাজ্যে এক মন্ত্রী লাইমলাইট চুরি করার টেষ্টা করার জন্য একাধিকবার সমালোচনার মুখে পড়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর মত সিনিয়ার নেতাদের সঙঅগে ছবি তুলেতে চেষ্টা করেন। যদিও তাতে সতর্ক করা হয়েছে। তার মনোভাব খুবই সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। সম্প্রতি তিনি মুখ্যমন্ত্রীর দিকেই ঠেলে দেওয়ার জন্য মন্ত্রীকে একদিকে সরিয়ে রেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সফরসঙ্গী আধিকারিকও মন্ত্রীকে সরিয়ে দিয়ে চেষ্টা করেছিলেন। বিপদ মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে পড়ায় রাজ্য নেচারা কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে সরিয়ে নিয়েছিল। তবে পুরনো মন্ত্রী লাগাম টেনে রেখেছেন।
গায়ককে নিয়ে টানাটানি
নারীদের সম্মান করার ক্ষেত্রে এর ট্র্যাক রেকর্ড করুণ। তাই এই নেতার যখন এমন একটি কারমের পক্ষে দাঁড়ান তখনও স্বাভাবিকভাবেই ভ্রু কুঁচকে যায়। যখন উত্তরপ্রদেশ সরকার তার 'কা বা ইন ইউপি' গানের জন্য মহিলা কণ্ঠের উপর একটি নোটিশ চাপিয়ে দেয়, তখন প্রধান বিরোধী দল তাকে সমর্থন করতে শুরু করে।
এর জাতীয় সভাপতি এমনকি শিল্পীর সমর্থনে একটি বিবৃতি দিয়েছেন যার ফলে এই শিল্পী শীঘ্রই দলে প্রবেশ করবেন বলে জল্পনা তৈরি হয়েছে।
দলটি প্রকৃতপক্ষে সরকারের নোটিশের বিরুদ্ধে বিবৃতির বাইরে চলে যাচ্ছে। গায়ককে আইনি সহায়তা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশনা দিয়েছেন দলের সভাপতি।
স্বভাবতই, দলটি আশার বিপরীতে আশা করছে যে এই প্রসাধনী উদ্যোগটি একটি নারীবিরোধী রাজনৈতিক যন্ত্র হিসাবে তার চিত্র পরিবর্তন করতে সহায়তা করবে।
ফুলের শক্তি
হাওয়াইয়ান সংস্কৃতিতে আপনার বাম কানের পিছনে একটি ফুল গোঁজার অর্থ হল মহিলা কোনও সম্পর্কে রয়েছেন বা তিনি বিবাহিত। ডান কানের ফুল গোঁজার অর্থ হল মহিলা অবিবাহিত আর প্রেমিককে বা মনের মানুষকে খুঁজছেন। তবে হাওয়াই থেকে হাজার হাজার মাইল দূরে প্রবীণ রাজনীতিবিন ডান কানে ফুল লাগিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেদিয়েছেন।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোমাই যখন বাজেট পেশ করেছিলেন তখন কংগ্রেস নেতা সিদ্ধারামাইয়া ডান কানে ফল লাগিয়ে একাধিক প্রশ্ন তুলেছেন। তবে কন্নড়ে ডান কানে ফুলের মানে অবশ্য অন্য - কাউকে বোকা বানানো। তবে ফুলের রাজনীতি শুরু হয়েছে ভোটমুখী কর্নাটকে। সেখানে কংগ্রেস বিজেপি রিপোর্ট কার্ডের সঙ্গে গাঁদা ফুল বিতরণ করেছে। তবে কারও জানা নেই য়ে সিদ্ধারামাইয়ে এমন কাজ কেন করেছেন। তবে ভিতরের খবর কংগ্রেস হাইকমান্ড সিদ্দারামাইয়ার আপত্তি থাকা সত্ত্বেও তাঁকে সার্কাসে জোকার হতে চাপ দিয়েছিল। কর্নাটকের রাজনীতিতে গুঞ্জন পিছনে হাতরয়েছে সুনীল কানুগোপালের।
আরও পড়ুনঃ
ভোটমুখী কর্নাটকের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীর উপহার শিবমোগা বিমানবন্দর, উদ্বোধন সোমবার
নিশীথ প্রামানিকের গাড়িতে হামলার প্রতিবাদ, ৩৫৬ ধারার পক্ষে সওয়াল বিজেপির
মিছিল করে সিবিআই দফতরে মণীশ সিসোদিয়া, অসুস্থ স্ত্রীর দায়িত্ব দিয়ে গেলেন আপ নেতা কর্মীদের ওপর