পুরুষরা কেউ নির্বীজকরণ করাতে চাইছেন না। তাই বেজায় ফাঁপড়ে পড়েছেন রাজ্য়ের স্বাস্থ্য় দফতরেরর কর্মীরা। কারণ, রাজ্য় সরকার তাঁদের স্পষ্ট বলে দিয়েছে-- হয় (নির্বীজকরণের জন্য়) লোক জোগাড় করুন, নইলে চাকরি ছেড়ে দিন।
সম্প্রতি মধ্য়প্রদেশে কমলনাথের সরকারকে ঘিরে তৈরি হয়েছে এমনই বিতর্ক। প্রশ্ন উঠেছে, জরুরি অবস্থার সময়ে নাশবন্দি করতে যে পথে হেঁটেছিলেন ইন্দিরা-পুত্র সঞ্জয় গান্ধি, এখন তাঁর অভিন্ন হৃদয় বন্ধু কমলনাথও কি সেই পথে হাঁটতে চলেছেন?
জানা গিয়েছে, মধ্য়প্রদেশের কংগ্রেস সরকার পরিবার পরিকল্পনায় পুরুষদের অংশগ্রহণ বাড়াতে গিয়ে মাল্টিপারপাস হেলথ ওয়ার্কার বা স্বাস্থকর্মীদের এক অভূতপূ্র্ব হুঁশিয়ারি দিয়েছে। যেহেতু নির্বীজকরণেরর জন্য় পুরুষদের অংশগ্রহণ সেখানে খুবই কম, তাই সেই সংখ্য়া বাড়াতে না-পারলে তাঁদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে, এমনকি অবসর নিতেও বাধ্য় করা হতে পারে।
জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য় সমীক্ষার প্রতিবেদনে দেখা গিয়েছে, মধ্য়প্রদেশে মাত্র ০.৫ শতাংশ পুরুষ নির্বীজকরণে রাজি হয়েছেন। এর পর থেকেই রাজ্য়ের স্বাস্থ্য় দফতরকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলস্তরের যে স্বাস্থ্য়কর্মীরা এই নির্বীজকরণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, যেমন করে সম্ভব তাঁদেরকে এই সংখ্য়াটা বাড়াতে হবে। নয়তো তাঁদের বেতন বন্ধ করে দেওয়া হবে। বাধ্য়তামূলক অবসর নিতেও বলা হবে।
পরিসংখ্য়ান বলছে, মধ্য়প্রদেশে ২০১৯-২০ সালে ৩,৩৯৭ জন জন পুরুষ নির্বীজকরণ করাতে রাজি হয়েছিলেন। যেকানে মহিলাদের সংখ্য়া ছিল ৩লাখ ৩৪ হাজার। এর আগের বছর অবশ্য় এর চেয়ে বেশি সংখ্য়ায় পুরুষরা এসেছিলেন নির্বীজকরণ করাতে।
কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, নির্বীজকরণের মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয় নিতে তো আর কাউকে জোর করতে পারেন না স্বাস্থ্য়কর্মীরা। বড়জোর বোঝাতে পারেন, সচেতন করতে পারেন। তাই সরকার কোন যুক্তিতে সেলসম্য়ানদের মতো করে স্বাস্থ্য়কর্মীদের টার্গেট বেঁধে দিতে চাইছেন? এর ফলে জোরজবরদস্তি বেড়ে যাবে না তো, সেই জরুরি অবস্থার নাশবন্দির দিনগুলোর মতো?