গত সপ্তাহেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এনকাউন্টারে খতম হয় গ্যাংস্টর বিকাশ দুবে। এই ঘটনায় পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে উঠেছিল একাধিক প্রশ্ন। খবর ছড়ায় ভুয়ো এনকাউন্টারেরও। এর মধ্যে ৬০টিরও বেশি মামলা ঝুলে থাকা বিকাশ কীভাবে জামিন পেয়েছিল তাই নিয়ে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে স্বয়ং প্রশ্ন করে শীর্ষ আদালত। এবার সেই উত্তরপ্রদেশেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার চরম মাশুল চোকাতে হল এক সাংবাদিককে।
আরও পড়ুন: প্রকৃতির রোষানলে এবার দেবভূমি, বজ্রপাতে লণ্ডভণ্ড হরিদ্বারের হর কি পৌরি
চাঞ্চল্যকর ঘটনা উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে । প্রকাশ্য রাস্তায় সাংবাদিককে গুলি করল কয়েকজন দুষ্কৃতী। ভাইঝিকে কয়েকজন লোক যৌন হেনস্তার চেষ্টা করছে। দিন কয়েক আগেই বিজয়নগর থানায় এমনই লিখিত অভিযোগ জানান সাংবাদিক বিক্রম যোশী। অভিযোগ জানানোর ৪ দিনের মধ্যেই ঘটে গেল নৃশংস ঘটনা। সোমবার রাতে দুই মেয়েকে নিয়ে স্কুটারে চড়ে যাচ্ছিলেন তিনি । বিজয়নগর এলাকায় রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ হঠাৎই কয়েকজন দুষ্কৃতী এসে তাঁর উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিক্রমকে টেনে হিঁচড়ে নামায় বাইক থেকে। তার পরেই তাঁকে প্রচণ্ড মারধর করতে করতে দূরে দাঁড় করানো একটি গাড়ির কাছে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশ জানাচ্ছে, মারধরের মধ্যেই এক জন বিক্রমের মাথা লক্ষ্য করে গুলি চালা.। তার পরেই বিক্রমকে রক্তাপ্লুত অবস্থায় রাস্তায় ফেলে রেখে পালায় দুষ্কৃতী দলটি। রাস্তার সিসিটিভ ফুটেজ থেকে দেখা যাচ্ছে, স্কুটার ঘুরিয়ে নিতে চেয়েছিলেন বিক্রম। কিন্তু তার আগেই অভিযুক্তরা ঘিরে ফেলে দুষ্কৃতীরা। রাস্তায় ফেলে মারধর করে, গুলি মারে। লুটিয়ে পড়েন বিক্রম। তাঁর মেয়েরা বাবার কাছে এসে কান্নাকাটি করেন, অন্যান্য গাড়ি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন । পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। আইসিইউতে রাখা হয়েছে বিক্রমকে।
গাজিয়াবাদের এসএসপি কালানিধি নইথানি জানিয়েছেন, রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ তাঁদের কাছে খবর পৌঁছয়। ঘটনার কিছুক্ষণের মধ্যে ৫ অভিযুক্তকে আটক করে পুলিশ। সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ইতিমধ্যে ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছে মূল অভিযুক্ত রবিও। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবির সঙ্গে আগে থেকেই বিবাদ ছিল সাংবাদিক বিক্রম যোশীর।
আরও পড়ুন: অসমের মত এবার বেহাল বন্যা পরিস্থিতি মেঘালয়তেও, বানভাসি পশ্চিম গারোয় গৃহহীণ লক্ষাধিক
বিক্রমের পরিবারের দাবি, দিন কয়েক আগে যাদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিক্রম, তারাই এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত। গোটা ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে পরিবার। তারপরেই গাজিয়াবাদের এসএসপি এক ইন্সপেক্টর ও বুথ ইনচার্জকে মঙ্গলবার সাসপেন্ড করে। সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় ডিএসপি পদমর্যাদার আধিকারিকের নেতৃত্বে তদন্তও শুরু হয়েছে।
গাজিয়বাদে সাংবাদিকের উপর এই হামলার ঘটনায় স্বভাবতই উত্তরপ্রদেশ সরকারের দিকে আক্রমণ শানিয়েছেন কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তিনি বলেন, "গাজিয়াবাদের পরিস্থিতি দেখেই আন্দাজ করা যায় গোটা রাজ্যের অবস্থা কেমন। ভাইঝিকে বিব্রত করা হচ্ছে এই অভিযোগ করায় এক সংবাদিকের উপর হামলা হল। তাহলে এই জঙ্গলরাজে কীভাবে একজন সাধারণ মানুষ নিরাপদে থাকতে পারেন। "