অনার কিলিং-এর শিকার হল বিবাহিত তরুণী, তাও আবার নিজের বাবার হাতে। শিহরণ জাগানো ঘটনায় স্তম্ভিত সারা দেশ।
অনার কিলিং, অর্থাৎ সম্মান রক্ষার্থে একটা জলজ্যান্ত মানুষকেই পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়া। ভারতে এই ধরনের খুন নিয়ে জেরবার হয়ে রয়েছে পুলিশ প্রশাসন। এরই মধ্যে আবার অন্ধ্রপ্রদেশে ঘটে গেল ভয়ঙ্কর ঘটনা। এই রাজ্যের নন্দয়ালা জেলায় সাম্প্রতিক অনার কিলিং নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে সারা ভারত জুড়ে।
নন্দয়ালা জেলায় বিবাহিত মেয়েকে কেটে টুকরো টুকরো করে ফেললেন বাবা। ওই তরুণীর মাথা থেকে শরীর কেটে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পনয়াম পুলিশের কর্তা সুধাকর রেড্ডি। ঘটনাটি ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের নন্দয়ালা জেলার পানাম মণ্ডলে।
পনয়াম মণ্ডলের অন্তর্গত আলমুরে দেবেন্দ্রর রেড্ডি নামে এক ব্যক্তি দুই মেয়ের বাবা। তাঁর বড় মেয়ের নাম প্রসন্ন , যাঁর বয়স বর্তমানে ২১ বছর। দুই বছর আগে এক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। তারপর নবদম্পতি একসঙ্গে হায়দরাবাদে বসবাস করা শুরু করেন। সেখানেই নিশ্চিন্তে চলছিল সংসার।
কিন্তু, বিয়ের দুই বছর পর হায়দরাবাদ থেকে নন্দয়ালা জেলায় নিজের গ্রামে এসে মায়ের বাড়িতেই থেকে যান ওই তরুণী। বিয়ের আগে যাঁর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল, ২ বছর পরেই আর তাঁর সঙ্গে হায়দরাবাদে ফিরে যেতে চাননি প্রসন্ন। কিন্তু, তাঁর সিদ্ধান্তের সঙ্গে বিরোধ বাঁধে তাঁর বাবার। দেবেন্দ্রর রেড্ডি নিজের বিবাহিত মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে না গিয়ে বাপের বাড়িতে থেকে যাওয়াটা পছন্দ করেননি। মেয়ে তাঁর বাড়িতে থেকে গেলে এলাকায় তাঁর ‘সুনাম’ নষ্ট হবে ব’লে ক্ষুব্ধ ছিলেন তিনি। শেষমেশ প্রসন্ন কোনওভাবেই নিজের স্বামীর বাড়িতে ফিরে যেতে না চাওয়ায় ফেব্রুয়ারি মাসের ১০ তারিখে মেয়ে প্রসন্নকে নিজের বাড়িতেই শ্বাসরোধ করে খুন করে ফেলেন বাবা দেবেন্দ্রর রেড্ডি।
খুন করার পর দেবেন্দ্রর রেড্ডি আরও কয়েকজনের সঙ্গে মিলে নিজের মেয়ের দেহটিকে একটি গাড়িতে চাপিয়ে নন্দয়ালা-গিদ্দালুর রুটের লাগোয়া একটি কাছাকাছি জঙ্গলে নিয়ে যান। সেখানে মেয়ের শরীরকে কেটে মাথা এবং ধড় আলাদা করেন তিনি। তারপর সেই দুটি দেহাংশকে আলাদা আলাদা জায়গায় ফেলে দিয়ে বাড়ি ফিরে যান। তার পর এলাকায় একেবারে নির্বিকারভাবে ঘোরাফেরা করতে শুরু করেন, যেন কিছুই ঘটেনি।
কিন্তু, প্রসন্নকে অনেকদিন ধরে দেখতে না পাওয়ায় চিন্তায় পড়ে যান তাঁর ঠাকুরদা, অর্থাৎ দেবেন্দ্র রেড্ডির বাবা, শিব রেড্ডি। তিনি দেবেন্দ্রকে জিজ্ঞেস করতে থাকেন যে, প্রসন্ন কোথায়। অবশেষে, তারই প্রশ্নের মুখে পড়ে দেবেন্দ্র রেড্ডি নিজের মেয়েকে খুন করে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। বৃহস্পতিবার এই বিষয়েই পুলিশ একটি অভিযোগ নথিভুক্ত করে এবং দেবেন্দ্র রেড্ডিকে গ্রেফতার করে। জঙ্গল থেকে প্রসন্নর দেহাবশেষও উদ্ধার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন-
তাপমাত্রার বদল ছাড়াই বজ্রপাতসহ বৃষ্টির সম্ভাবনা, অস্বস্তিকর আবহাওয়ায় নাজেহাল বঙ্গবাসী
ভারতের সঙ্গে চিনের মিষ্টি প্রেমের সম্পর্ক, ডেনমার্কে গিয়ে পরিণতি পেল ছাদনাতলায়
শনিবার কতটা বদলে গেল পেট্রোল-ডিজেলের দাম, ভারতের কোন শহরে কত হল লেটেস্ট দর?