সব মিলিয়ে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত রোপওয়ে দুর্ঘটনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও আটকে রয়েছেন ২৩ জন।
পর্যটনস্থল দেওঘরে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। দেওঘরের বাবা বৈদ্যনাথ মন্দিরের কাছে ত্রিকূট পাহাড়ে একাধিক রোপওয়ের ধাক্কা লাগে। তার জেরে রোপওয়ে ভেঙে পড়ে মৃত্যু হয় ২ মহিলার। পরে উদ্ধারকাজ চলার সময় আরও একজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর জখম হন ৮ জন। এদিকে রোপওয়েতে আটকে পড়েন অন্তত ৪৮ জন। এই ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। উদ্ধারকাজ সম্পর্কে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে তিনি কথাও বলেছেন বলে সরকারী সূত্রে জানা গিয়েছে।
রবিবার বিকেলে ত্রিকূট পাহাড়ের রোপওয়েতে দু’টি ট্রলির মধ্যে ধাক্কা লাগে। তার জেরে মৃত্যু হয় দুই পর্যটকের। তাঁরা দু’জনেই মহিলা বলে জানা গিয়েছে। এরপর সোমবার উদ্ধারকার্য চলাকালীন আরও এক পর্যটকের মৃত্যু হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে একটি ভিডিও। সেখানে দেখা গিয়েছে, বায়ুসেনার হেলিকপ্টারের খুব কাছে পৌঁছে গিয়েও উপরে উঠতে না পেরে নিচে পড়ে যান এক ব্যক্তি। জানা গিয়েছে, ভারতীয় বায়ুসেনার উদ্ধারকারী কপ্টার থেকে ফেলা দড়ি হাত থেকে পিছলে এক হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে নিচে পড়ে ওই পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন- দেওঘরে রোপওয়েতে দুই কেবল কারের সংঘর্ষ, মৃত ২, আহত অনেকে
সব মিলিয়ে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এই দুর্ঘটনায় তিন জন মারা গিয়েছেন। সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টা ২৫ মিনিট পর্যন্ত ২৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও আটকে রয়েছেন ২৩ জন। ভারতীয় বায়ু সেনা, ইন্দো টিবেটিয়ান বর্ডার পুলিশ এবং ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স উদ্ধার অভিযান শুরু করে। এই অভিযানে দুটি Mi-17 হেলিকপ্টারও মোতায়েন করেছে। এই উদ্ধার কাজে হাত লাগিয়েছে জেলা প্রশাসনও।
জানা গিয়েছে, রবিবার এই দুর্ঘটনার পরে, রোপওয়ে ম্যানেজার এবং অন্যান্য কর্মীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। গোড্ডার সাংসদ নিশিকান্ত দুবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং ঝাড়খণ্ডের মুখ্য সচিব সুখদেও সিংকে পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেন। পাশাপাশি এই ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রধানমন্ত্রীও। বিষয়টির উপরে নজর রেখেছেন তিনি। এমনকী, উদ্ধারকাজ নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
ঝাড়খণ্ড পর্যটন দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ত্রিকূট রোপওয়ে দেশের সর্বোচ্চ রোপওয়ে এবং সর্বোচ্চ লেন্স কোণ ৪৪ ডিগ্রি। রোপওয়েটি বাবা বৈদ্যনাথ মন্দির থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে তৈরি করা হয়েছে এবং প্রায় ৭৬৬ মিটার দীর্ঘ। ত্রিকূট পাহাড় ৩৯২ মিটার উঁচু। রোপওয়েতে ২৫টি কেবিন রয়েছে এবং প্রতিটিতে চারজন লোক বসতে পারে। তবে কী কারণে দুর্ঘটনা হয়েছে, তা নিয়ে স্পষ্টভাবে কিছু জানানো হয়নি। দেওঘরের ডেপুটি কমিশনারের দাবি, পুরো জেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে উপস্থিত আছে। উদ্ধার অভিযান শেষ হওয়ার পরে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হবে। তবে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে যে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।