বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরে সফরের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি মুর্মু সভাপতিত্ব করেন শ্রীনগরে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তম সমাবর্তনে।
কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে নারী শক্তির জয়গান। প্রধান অতিথি হিসেবে এই অনুষ্ঠানে ছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। অন্যদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলরও একজন মহিলা, নিলোফার খান। এদিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির আসনে দেখা গিয়েছিল লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহাকেও।
বুধবার জম্মু ও কাশ্মীরে সফরের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি মুর্মু সভাপতিত্ব করেন শ্রীনগরে কাশ্মীর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০ তম সমাবর্তনে। জম্মু-কাশ্মীরের ১০টি প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে একটি হল এই বিশ্ববিদ্যালয়। উল্লেখ্য ১৯৯০ সালে বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের আক্রমণে পড়তে হয় এই বিশ্ববিদ্যালয়টিকে। ঘটনায় চ্যান্সেলর (গভর্নর) এবং প্রো-চ্যান্সেলরদের এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এখানেই শেষ নয়, ক্যাম্পাসে ইউপির এক তরুণী মুসলিম প্রভাষকসহ দুই অধ্যাপককে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বেশ কিছু ছাত্র ও পণ্ডিত নিহত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে সর্বশেষ, ডক্টর মোহাম্মদ রফি ভাট, ৫ মে ২০১৮-এ শোপিয়ানে একটি এনকাউন্টারে মারা যান।
ভিসি প্রফেসর মুশিরুল হক তার ব্যক্তিগত সচিব আব্দুল গণি জারগারের সঙ্গে ১৯৯০ সালের ৬ এপ্রিল ক্যাম্পাস থেকে পালিয়ে যান। চার দিন পর তাদের গুলিবিদ্ধ দেহ উদ্ধার হয় শ্রীনগর থেকে। ফার্সি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ শফি খান কট্টরপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা সৈয়দ আলি শাহ গিলানির জীবনীকার এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠী জামিয়াত-উল-মুজাহিদিনের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হওয়ার জন্য বেছে নিয়েছিলেন। প্রায় এক দশক আগে তিনি গ্রেফতার হন, এখনও বন্দী জীবনই কাটাচ্ছেন তিনি।
এইসব নানা ঘটনার ঘনঘটার মধ্য দিয়ে যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় বছরের পর বছর ধরে কোনও সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি। একটা সময় ছিল যখন এই বিশ্ববিদ্যালয়, আইন ও সাহিত্যের চেয়ে বেশি আজাদীর শিক্ষা দিতেন শিক্ষকরা। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পরও ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত কোনও সমাবর্তন অনুষ্ঠান হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠা হয় ২০২১ সালের ২৭ জুলাই। রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ প্রধান অতিথি ছিলেন। সেবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮২ জন মহিলা ও ৮৮ জন পুরুষ স্বর্ণ পদক পেয়েছিলেন। বুধবার ২০ তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ১৬৯ জন মহিলা ও ৯৯ জন পুরুষ স্বর্ণপদক পেয়েছে।রাষ্ট্রপতি মুর্মু, এলজি সিনহা এবং ভিসি খানের দ্বারা এটি নির্দেশিত এবং প্রশংসা করা হয়েছিল।