এই রায় দিতে গিয়ে কেরালা হাইকোর্টের বিচারপতি বলেন- এমন ঘটনায় গোটা সমাজের মাথা আজ হেট হয়ে গিয়েছে। ধর্ষক বাবা-কে এমন শাস্তি দেওয়া হবে যাতে তিনি হাড়ে হাড়ে টের পাবেন আইনের তাৎপর্য।
অবশেষে মিলল আদালতের অনুমতি। কেরলের ১০ বছরের বালিকার ৮ মাসের গর্ভস্থ ভ্রুনে গর্ভপাতের নির্দেশ দিল কেরল আদালত। এমনকী এই গর্ভপাতে যদি কোনও বড় বড় বিশেষজ্ঞ থেকে শুরু করে যে কোনও ধরনের মেডিক্যাল সাপোর্ট লাগবে তা সুনিশ্চিত করতেও নির্দেশ দিয়েছে কেরলের হাইকোর্ট। এর জন্য কেরলের ডাইরেক্টর অফ হেলথ সার্ভিসকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
১০ বছরের এক বালিকা তার বাবার হাতেই লাগাতার ধর্ষণের শিকার হয়। এর জেরে সে গর্ভবতী হয়ে পড়ে। মেয়ের গর্ভাবস্থা ৬ মাস অতিক্রম করে যাওয়ায় আদালতের শরণাপন্ন হন বালিকার মা। প্রথমে তারা বুঝতে পারেননি যে মেয়ে গর্ভবতী। পরিবার ভেবেছিল যে হয়তো মেয়ে পেটের অসুখে ভুগছে আর সেই কারণে পেট অস্বাভাবিকভাবে ফুলে যাচ্ছে। কিন্তু দিন দিন মেয়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় চিকিৎসক দেখায় পরিবার। এরপরই সামনে আসে আসল সত্য। জানা যায় মেয়ের এই পরিস্থিতির জন্য তার বাবাই দায়ী।
এই পুরো প্রক্রিয়ায় ততদিন ৬ মাস অতিক্রম করে গিয়েছে। যার ফলে মেয়ের শারীরিক অবস্থায় উদ্বেগ প্রকাশ করে গর্ভপাত করাতে আদালতের শরণাপন্ন হন মা।
এর আগে আদালতের নির্দেশেই ১০ বছরের এই বালিকার শারীরিক অবস্থা এবং তার গর্ভস্থ ভ্রুনের অবস্থা পরীক্ষা করে দেখে মেডিক্যাল বোর্ড। তারা তাদের রিপোর্টে পরিস্কার জানায় যে গর্ভস্থ শিশুর সুস্থ জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা ৮০ শতাংশ। তবে, এই প্রক্রিয়ায় বালিকার শারীরিক অবস্থা সঙ্কটে পড়তে পারে এমনকী গর্ভস্থ শিশু জন্মের পর নানা ধরনের শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত হতে পারে।
মেডিক্যাল বোর্ডের এই রিপোর্টের প্রেক্ষিতেই ১০ মার্চ ফের শুনানি হয় কেরল হাইকোর্টে। বিচারপতি পিভি কুনহিকৃষ্ণনন এই ঘটনায় অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, এতে সমাজের মাথা হেট হয়ে গিয়েছে। দোষী বাবা-কে এমন শাস্তি দেওয়া হবে যাতে তিনি বুঝতে পারেন আইন কাকে বলে! এই মামলায় শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের শিকার বালিকার বয়স মাত্র ১০, সুতরাং সেখানে অনেক শারীরিক জটিলতা এবং সমস্যা আসবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই। তাই আদালত, বালিকার সুস্থতা কামনায় সর্বশক্তিমানের কাছে প্রার্থনা করছে।
পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে হারিয়ে রাতারাতি স্টার আপ প্রার্থী, জানেন কী তাঁর আসল পরিচয়
প্রাক্তন-বর্তমান দুই মুখ্যমন্ত্রী ধরায়াসী, হিসেব ওলটপালট করে দিল ভোটের উত্তরাখণ্ড
হিমালয় থেকে সমুদ্র - সর্বত্রই বিজেপি কর্মীদের পাশে রয়েছে মানুষ, চার রাজ্য জয়ে বললেন মোদী
এরপর বিচারপতি যে নির্দেশ দেন তার সারমর্ম এমন-
১। নাবালিকার গর্ভপাত ১ সপ্তাহের মধ্যে করতে হবে। এটা হবে মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্ট মেনে। এর জন্য কোনও বিশেষজ্ঞ-র দরকার লাগে অথবা যে কোনও ধরনের বিশেষ মেডিক্যাল ফেসিলিটি লাগবে তার জন্য প্রয়োজনীয় সুপারিশ ডাইরেক্টর অফ হেলথ-কে পাঠাতে হবে।
২। যদি গর্ভস্থ শিশু জীবিত অবস্থায় জন্ম নিতে পারে তাহলে তার জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল ফেসিলিটি-র ব্যবস্থা রাখতে হবে। এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যাতে ভবিষ্যতে সে সুস্থ এবং স্বাভাবিক শারীরিক অবস্থা নিয়ে বড় হতে পারে।
৩। এমনকী এই শিশুর অভিভাবকরা যদি তাকে গ্রহণ করতে না চায় তাহলে সে ক্ষেত্রে সরকার এবং তার সংস্থাকে এর দায়িত্বভার গ্রহণ করতে হবে এবং এর জন্য প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সাপোর্ট দিতে হবে যাতে শিশুর শারীরিক অবস্থা সঙ্কটে না পড়ে। জুভেনাইল জাস্টিস অ্যাক্ট অনুযায়ী এই শিশুর পরিচর্যা করতে হবে।