অধ্যক্ষের চেয়ারে বসেছিলেন তৃণমূলের কাকলি ঘোষ দস্তিদার। আর তার সামনেই তৃণমূল সরকারকে 'চিটফান্ডের সরকার' বলে কটাক্ষ করলেন বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। চিটফান্ড বিল নিয়ে আলোচনার সময় লকেটের বক্তব্যকে ঘিরে চরম বাকবিতণ্ডায় জড়ালেন তৃণমূল এবং বিজেপি সাংসদরা। পরে দু' পক্ষকে শান্ত করতে অধ্যক্ষ ওম বিড়লা বাধ্য হয়ে বলেন, 'লোকসভাকে আপনারা পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা বানাবেন না।'
সোমবার লোকসভায় চিট ফান্ড বিল আলোচনার সময় বক্তব্য রাখতে ওঠেন হুগলির বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে সেই সময় অধ্যক্ষ ওম বিড়লার অনুপস্থিতিতে লোকসভা পরিচালনার দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন তৃণমূল সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। বক্তব্যের শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গে চিটফান্ডের বাড়বাড়ন্তের জন্য তৃণমূলকে তুলোধনা শুরু করেন লকেট। বাংলার সরকারকে 'চিটফান্ডের সরকার' বলেও কটাক্ষ করেন লকেট। যা শুনে আপত্তি জানান কাকলি। অসংসদীয় শব্দ বলে দাবি করে লকেটের বক্তব্যের ওই অংশ লোকসভার কার্যবিবরণী থেকে বাদ দিতে বলেন তিনি।
এতেও অবশ্য দমেননি লকেট। উল্টে আক্রমণের ঝাঁঝ আরও বাড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, যতদিন চিটফান্ড থেকে তৃণমূল নেতারা টাকা পেয়েছেন, ততদনি পর্যন্ত চিটফান্ড চলতে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লকেট অভিযোগ করে বলেন, চিটফান্ড কাণ্ডে অভিযুক্ত পুলিশ অফিসারের বাড়িতে সিবিআই গেলে আটচল্লিশ ঘণ্টা ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ চিটফান্ডে লক্ষ লক্ষ প্রতারিতদের জন্য কখনও ধর্নায় বসতে দেখা যায় না তাঁকে। লকেট বার বার মুখ্যমন্ত্রীকে নিশানা করায় কাকলি তাঁকে বিলের বিষয় নিয়ে বক্তব্য রাখতে বলেন। মুখ্যমন্ত্রী চিটফান্ড চালান না বলেও লকেটের উদ্দেশে বলেন কাকলি। তৃণমূল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্য সরকার নিয়ে লকেটের পরে পর অভিযোগ অবশ্য হাসি মুখেই শোনেন কাকলিদেবী। অস্বস্তিকর হলেও লকেটের বক্তব্যের সময় খুব বেশি বাধা দেননি তিনি।
অন্যদিকে লকেট যখন এই বক্তব্য রাখছেন, তখন তার তীব্র বিরোধিতা করেন তৃণমূল সাংসদরা। দু' পক্ষে তুমুল শোরগোল শুরু হয়। কাকলি লকেটকে অধ্যক্ষের চেয়ারের দিকে তাকিয়ে বক্তব্য রাখার নির্দেশ দেন। লকেট অবশ্য তাতে কর্ণপাত করেননি।
হইহট্টগোলের মধ্যেই অধ্যক্ষের চেয়ারে এসে বসেন স্পিকার ওম বিড়লা। তুমুল শোরগোল করার জন্য দু' পক্ষকেই ভর্ৎসনা করেন তিনি। স্পিকারকে বলতে শোনা যায়, 'আপনাদের দু' পক্ষকেই শান্ত থাকতে বলছি। একজন বক্তব্য রাখার সময় অন্যরা টিপ্পনি কাটবেন না। সংসদটাকে বাংলার বিধানসভা বানিয়ে ফেলবেন না।'